এইমাত্র
  • চট্টগ্রামে নওফেলের বাড়িতে আগুন-ভাঙচুর
  • শহীদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • হাদির মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতির শোক
  • ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  • ওসমান হাদি বলেছিলেন 'মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে নয়, আসমানে হয়'
  • শাহবাগ অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা
  • হাদির খুনিদের ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ থাকবে: সারজিস
  • কিছুক্ষণের মধ‍্যে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ’বিপ্লবী ওসমান হাদিকে মহান আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করুন’
  • হাদির মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক
  • আজ শুক্রবার, ৪ পৌষ, ১৪৩২ | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
    জাতীয়

    ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক টানাপোড়েন, ভবিষ্যৎ কী?

    রবিন দাস প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
    রবিন দাস প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম

    ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক টানাপোড়েন, ভবিষ্যৎ কী?

    রবিন দাস প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
    ছবি: সময়ের কণ্ঠস্বর গ্রাফিক্স

    বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে আবারও অস্বস্তির ছাপ পড়েছে। দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব, ঢাকায় ভারতীয় মিশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, ভিসা আবেদন কেন্দ্র সাময়িক বন্ধ এবং নির্বাচনকে ঘিরে পারস্পরিক বক্তব্য; সব মিলিয়ে সম্পর্কের জটিল এক সমীকরণ নতুন করে সামনে এসেছে।

    বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই তলবে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ জানায় ভারত।

    এসময় ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, ঢাকায় ভারতীয় মিশনের চারপাশে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরির পরিকল্পনা সম্পর্কে তারা অবহিত এবং এটি সহ্য করা হবে না।

    এর আগে গত রোববার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মনন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টায় সন্দেহভাজনরা যাতে ভারতে পালাতে না পারে সে বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করা হয়।

    কূটনৈতিক অঙ্গনে কোনো রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারকে তলব করা সাধারণ ঘটনা নয়। এটি মূলত আনুষ্ঠানিক অসন্তোষ বা সতর্কতার ইঙ্গিত বহনের একটি পথ।

    বিশ্লেষকদের মতে, ভারত ও বাংলাদেশের এমন পাল্টাপাল্টি হাইকমিশনারকে তলবের বিষয়টি কেবলই নিরাপত্তা প্রশ্নে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের বহিঃপ্রকাশ।

    এদিকে বুধবার দুপুরের পর রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেয় ভারত। আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বললেও বিশ্লেষকরা এটিকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে বাড়তে থাকা টানাপোড়েনের আরেকটি ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছেন।

    সম্প্রতি এক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘সেভেন সিস্টার্স’কে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন। এসময় তিনি ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ারও হুমকি প্রদান করে।

    তবে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, ‘কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীকে আমাদের ভূখণ্ডে আশ্রয় দেবে— এমনটা এই সরকার অবশ্যই করবে না। আমি মনে করি, বাংলাদেশের কোনো সরকারই তা করবে না। একজন অ্যাক্টিভিস্ট বা রাজনীতিক এমন কথা বলতে পারেন, তবে সেটি সরকারের অবস্থান নয়।’

    তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিসরে এমন মন্তব্য প্রতিবেশী দেশের জন্য সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দেওয়া এমন বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে।

    এদিকে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে দেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষেধাজ্ঞার কারণে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না।

    তবে ভারতসহ পশ্চিমা বিশ্ব বরাবরই বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলে আসছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বারবার অন্তভুক্তিমূলক নির্বাচনের কথা বলে ভারত এবং পশ্চিমা বিশ্ব নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে যেন-তেন প্রকারে হলেও অংশ গ্রহনের সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আসছে।

    এবিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন কেমন হবে এটা নিয়ে আমরা প্রতিবেশীদের উপদেশ চাই না। এই সরকার অত্যন্ত ভালো পরিবেশে একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চায়, যা গত ১৫ বছর ছিল না।’

    তিনি আরও বলেন, ‘এখন ভারত এটা নিয়ে আমাদের উপদেশ দিচ্ছে, এটাকে আমি অগ্রহণযোগ্য মনে করি। কারণ গত প্রহসনের নির্বাচনগুলোতে তারা কোনো শব্দ করেনি। এখন আমরা যখন একটি ভালো নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি, তখন তারা নসিহত করছে। এটা অগ্রহণযোগ্য।’

    সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক বর্তমানে এক সংবেদনশীল পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

    এছাড়া দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো পর্যায়ে নেই তার অনুমান পাওয়া যায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের একটি বক্তব্য থেকে। তিনি বলেছেন, ‘আসলে এই সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত টানাপোড়েন তো আছেই। ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন ছিল এটা মেনে নিয়েই আমরা বলে আসছি, একটা ভালো কাজের পরিবেশ চাই। আমরা চাইলেও সেটা হবে এমন কোনো কথা নেই।’

    কূটনৈতিক মহলের ধারণা, আগামী দিনগুলোতে এই ইস্যুগুলোকে কেন্দ্র করে আলোচনা ও যোগাযোগ আরও বাড়তে পারে। তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখতে উভয় পক্ষ যদি কার্যকর যোগাযোগ অব্যাহত রাখে তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেও মনে করেন তারা।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…