রাশিয়াকে সম্মান দিলে ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো নতুন সামরিক অভিযান চালানো হবে না বলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মন্তব্য করেছেন। ইউরোপে নতুন করে হামলার পরিকল্পনার অভিযোগকে তিনি ‘বাজে কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা ধরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে বিবিসির স্টিভ রোজেনবার্গ তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘নতুন বিশেষ সামরিক অভিযান কি হবে?’ তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের সম্মান করেন, আমাদের স্বার্থকে সম্মান করেন যেমন আমরা আপনাদের করার চেষ্টা করেছি—তাহলে আর কোনো সামরিক অভিযান হবে না।‘
তিনি ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, পশ্চিমারা অতীতে রাশিয়ার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, যা আর কাম্য নয়।
এক প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘যদি তোমরা ন্যাটোকে পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ না কর, আমাদের সঙ্গে প্রতারণা না কর, তাহলে আর কোনো রাশিয়ান হামলা হবে না।’
তিনি অভিযোগ করেছেন, ন্যাটো ১৯৯০ সালে সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার থেকে তারা সরে গেছে। তবে পরে গর্বাচেভ এই মন্তব্য অস্বীকার করেন।
রাশিয়ার টিভিতে সম্প্রচারিত ‘ডাইরেক্ট লাইন’ ম্যারাথনে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের প্রশ্ন নেওয়া হয়।
পুতিন বসেছিলেন রাশিয়ার একটি বিশাল মানচিত্রের সামনে, যেখানে ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলগুলো। যার মধ্যে ক্রিমিয়াও রয়েছে। ক্রিমিয়াকে ২০১৪ সালে রাশিয়া যুক্ত করেছিল। পুতিন রাশিয়ার অর্থনীতির অবনতি নিয়েও কথা বলেছেন।
পুতিন আবারও বলেন, তিনি ইচ্ছুক ও প্রস্তুত শান্তিপূর্ণভাবে যুদ্ধ শেষ করতে, কিন্তু কোনো রকম সমঝোতার ইঙ্গিত দেননি। তিনি ২০২৪ সালের জুনে দেওয়া বক্তৃতার নীতি পুনরায় বলেন—ইউক্রেনীয় বাহিনীকে রাশিয়ার অংশীদারিত্বপূর্ণ চারটি অঞ্চল থেকে বেরিয়ে যেতে হবে এবং কিয়েভকে নাটোতে যোগ দেওয়ার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে।
রাশিয়ার প্রধান দাবির মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল ডনবাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, যার মধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ ডোনেতস্ক অঞ্চল রাশিয়ার অধীনে আসেনি।
পুতিন যখন টিভিতে শান্তির কথা বলছিলেন, ঠিক তার কয়েক ঘণ্টা পরেই ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সাতজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। অন্যদিকে, ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে যে, তারা প্রথমবারের মতো ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার 'শ্যাডো ফ্লিট' বা ছায়া বহরের একটি তেলের ট্যাঙ্কারে আঘাত হেনেছে।
পুতিন আরো বলেন, তিনি ইউক্রেনে নতুন নির্বাচন চান এবং ভোটাভুটির সময় হামলা বন্ধ রাখতেও রাজি। বর্তমানে মায়ামিতে ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইউক্রেন ও রুশ প্রতিনিধিদের আলোচনা চলছে।
সূত্র : বিবিসি
এবি