এইমাত্র
  • দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন জুবায়ের রহমান চৌধুরী
  • যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সারজিও গোরকে প্রধান উপদেষ্টা
  • ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য কুমির-ঘেরা কারাগার বানাবে ইসরাইল
  • এবার নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিলেন হুদা
  • গানম্যান প্রত্যাখ্যান করলেন নুরুল হক নুর
  • ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন
  • যাত্রা শুরু করলো ভোটের গাড়ি 'সুপার ক্যারাভান'
  • খুলনার উপকূলীয় এলাকায় মিঠা পানির ‘খনির’ সন্ধান
  • খুলনায় গুলিবিদ্ধ এনসিপি নেতা শঙ্কামুক্ত
  • বোমা হামলায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর জেনারেল নিহত
  • আজ মঙ্গলবার, ৮ পৌষ, ১৪৩২ | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    ভোলায় পিতৃত্বের অস্বীকৃতির দায় বইছে এক নবজাতক শিশুর

    মো. সবুজ, ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
    মো. সবুজ, ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

    ভোলায় পিতৃত্বের অস্বীকৃতির দায় বইছে এক নবজাতক শিশুর

    মো. সবুজ, ভোলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

    ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চর মনসা গ্রামে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া এক নবজাতক শিশুকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক মানবিক সংকট। জন্মের পরপরই শিশুটির পিতৃত্ব অস্বীকার করেছেন শিশুটির বাবা শান্ত। এতে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন নবজাতক শিশুটি ও তার অসহায় মা।

    শিশুটির মা শাহানুর বেগম জানান, প্রায় ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মাঝিরহাট এলাকার বাসিন্দা শান্তের সঙ্গে। দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাঁদের আরও দুটি সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্বামীর নির্যাতন ও মানসিক লাঞ্ছনার শিকার হয়ে আসছেন তিনি।

    তিনি আরও জানান, দুই সন্তানসহ স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতেন তিনি। কয়েক মাস আগে ঢাকায় শান্তের পরকীয়া প্রেম নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া হয়। এসময় পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেওয়ায় শাহানুর বেগমকে মারধর করেন শান্ত। পরে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় মারধরের শিকার হয়ে তিনি বাবার বাড়ি ভোলায় চলে আসেন।

    শাহানুর বেগমের অভিযোগ, “৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় স্বামীর সংসার থেকে ভোলায় আসার পরও সে সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া এই নবজাতক সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে অস্বীকার করছে। স্বামীর দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় আসক্তি এই অস্বীকারের কারণ।” তিনি এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।

    অন্যদিকে অভিযুক্ত বাবা শান্ত বলেন, “আমার স্ত্রী কিভাবে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে, তা আমি বুঝতেই পারিনি। এ কারণে শিশুটির পিতৃত্ব নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।”

    আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বৈধ বিবাহের মধ্যে জন্ম নেওয়া সন্তানের দায় এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পিতৃত্ব নিয়ে সন্দেহ থাকলে আদালতের মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা যেতে পারে।

    মানবাধিকার কর্মীরা উল্লেখ করেন, পিতৃত্বের এই বিরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নবজাতক শিশুটি। শিশুর মৌলিক অধিকার—নিরাপত্তা, পরিচয় ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা জরুরি।

    ভোলা সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “শিশুটির মায়ের আইনি যেকোনো বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সহায়তা দেওয়া হবে। তবে শিশুটি যদি মায়ের কাছে অনিরাপদ মনে হয়, তাকে বেবি হোমে রাখার ব্যবস্থাও করা হবে।”

    ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, “আমাদের পক্ষ থেকে শিশুটির খোঁজখবর নেওয়া হবে এবং যতটুকু সম্ভব সহায়তা দেওয়া হবে।”

    বর্তমানে নবজাতক শিশুটি তার মায়ের কাছেই রয়েছে। তবে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, পিতৃত্বের অস্বীকৃতি ও পারিবারিক সংকটের মধ্যে শিশুটির নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

    একটি নবজাতকের জীবনের শুরুতেই এমন অনিশ্চয়তা সমাজের জন্য কতটা লজ্জাজনক—এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ভোলার চর মনসা গ্রামে।

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…