কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে যাত্রীবাহি একটি স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক নারী ইউপি সদস্য ফিরোজা বেগম (৫৫) এর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ১৭ পর্যটক সহ ২৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের নাফনদীর ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার নাইক্ষংদিয়ার টুরারমাথা (গোলগড়া) এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে স্পিডবোটটি তলা ফেটে ডুবে যায়।
ডাবল ইঞ্জিন চালিত এ স্পিডবোটটিতে ২২ জন যাত্রী ছিলেন। তার মধ্যে ১৭জন পর্যটক ও পাঁচজন স্থানীয় বাসিন্দা ও দুইজন চালক ও চালকের সহকারি ছিলেন।
নিহত ফিরোজা বেগম (৫৫) সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ডেইলপাড়ার বাসিন্দা আব্বাস আলীর স্ত্রী এবং ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওর্য়াডের সদস্য ও স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম।
তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরের দিকে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাট থেকে ১৭ জন পর্যটক ও পাঁচজন সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা এবং চালক ও চালকের সহকারীসহ ডাবল ইঞ্জিনের স্পিড বোটটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এমন সময় হঠাৎ করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথের নাফনদীর ও বঙ্গোপসাগরের মোহনার নাইক্ষংদিয়ার টুরারমাথা (গোলগড়া) এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে স্পিডবোটটি তলা ফেটে পানি ঢুকতে থাকে। এসময় স্থানীয় কোস্টগার্ডের একটি টহল দল ও যাত্রীবাহী স্পিডবোট এগিয়ে এসে যাত্রীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ডুবে যাওযার সময় ফিরোজা বেগমকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন ২০শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সেন্টমার্টিন ২০ শয্যার হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক নাঈমুর রহমান বলেন, স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার মধ্যে ফিরোজা নামে একজন নারী মারা গেছে। আরও দুজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডুবে যাওয়া স্পিডবোটে যাত্রী পযটক আরিফ উল্লাহ বলেন, টেকনাফের কায়ুকখালীয়া ঘাট থেকে ২৪ জন মানুষ নিয়ে স্পিডবোটটি সেন্টমাটিনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রায় আধা ঘন্টা চালানোর পরে শাহপরীর দ্বীপের নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় স্পিডবোটের তলা ফেটে যায়। এসময় চালক আব্দুল্লাহ পার্শ্ববর্তী কোস্টগার্ড ও অপর একটি স্পিডবোটের সহযোগিতা চাইলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলের ছুটে আসেন এবং ডুবে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে দমকা হওয়ার কবলে পড়ে স্পিডবোটটির তলা ফেটে ডুবে যাওয়ার সময় কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ ঘটনায় সাবেক একজন নারী ইউপি সদস্যের মারা গেছেন।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, স্পিডবোট ডুবিতে এক নারীর মৃত্যুর খবর শুনেছি। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।