স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানার ১৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০০৭ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপকূলীয় জেলা বরগুনা। সেই দুঃসহ স্মৃতিতে এখনও আতঙ্কে বরগুনার মানুষ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সিডরের আঘাতে বরগুনা জেলায় ১ হাজার ৩৪৫ জন মারা যান, নিখোঁজ হয়েছেন ১৫৬ জন। ঝড়ের কবলে মারা পড়ে ৩০ হাজার ৪৯৯টি গবাদি পশু ও ৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯টি হাঁস-মুরগি।জেলার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬১টি পরিবারের সবাই কমবেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়। গৃহহীন হয়ে পড়ে ৭৭ হাজার ৭৫৪টি পরিবার।
বরগুনায় সিডরের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সদর উপজেলার নলটোনা গ্রাম। এই গ্রামে সিডরের এক বছর আগে থেকেই ছিল না কোনো বেড়িবাঁধ। সিডরের সময় এ জায়গায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা ছিল ২০ ফুটের মতো। ঘূর্ণিঝড়ের পরদিনই সেখানে অর্ধশতাধিক মানুষের লাশ পাওয়া যায়। তখনও এলাকাটি পানির নিচে তলিয়ে ছিল। লাশ দাফনের জন্য কোনো জায়গাও পাওয়া যাচ্ছিল না। লাশগুলো আনা হয় বরগুনা-নিশানবাড়িয়া সড়কের পাশে পশ্চিম গর্জনবুনিয়া গ্রামে। দাফনের কাপড় ছাড়াই ২৯ জনকে ১৯টি কবরে দাফন করা হয়।
জায়গার অভাবে চারটি কবরে তিনজন করে ১২ জন, তিনটি কবরে দুজন করে ৬ জন ও ১১টি কবরে একজন করে ১১ জনের লাশ দাফন করা হয়। কবরগুলোকে একটু উঁচু করে রাখা হয়।এই সিডারে বরগুনার পাথরঘাটা মাত্র ১০ মিনিটের জলোচ্ছ্বাসে ৩৯৪ জন মানুষ প্রাণ হারালো। ঝড়ের তাণ্ডবে পুরো এলাকা হয়ে যায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ৪৬ জনের জেলে খবর পাওয়া যায়নি। বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন জানেনা তাঁদের স্ত্রী ও সন্তানরা। এখনো উপকুল বাসির বন্যার কথা শুনলে সিডরের তান্ডবের কথা মনে পড়ে যায়
বরগুনার জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, সিডর বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে একটি। এই ঝড় কেড়ে নিয়েছে উপকূলের মানুষের সম্বল। কেড়ে নিয়েছে আপনজনদের। এই অঞ্চলের মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকানির্বাহ করে। সেক্ষেত্রে সিডর পরবর্তী সময় থেকে বরগুনার মানুষের আবহাওয়া অফিসের দাবি ছিল। তাদের ধারণা সেটা হলে তারা দ্রুত সিগনাল পাবে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করব।
এআই