এইমাত্র
  • রাত ৮টার পর শপিং মল বন্ধের নির্দেশনা
  • মালিতে রুটি-দুধের চেয়ে দাম বেশি বরফের
  • কক্সবাজারে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৬
  • নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: ইসি হাবীব
  • গরু-ছাগলে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ
  • মিয়ানমারে ৪৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
  • অঙ্গীকারনামা দিয়ে জামিনে মুক্তি পেলেন সেই সঞ্জয় রক্ষিত
  • কেমন করে দলের নির্দেশ অমান্য করছেন তা আমার বোধগম্য নয়: ইসি হাবিব
  • স্কুল-মাদরাসা বন্ধে হাইকোর্টের রায় নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
  • স্থায়ী জামিন পেলেন সেই মুশতাক
  • আজ সোমবার, ১৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৯ এপ্রিল, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    যশোরে টিউবওয়েলে নেই পানি, স্তর নেমেছে ৩০ ফুট

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম
    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম

    যশোরে টিউবওয়েলে নেই পানি, স্তর নেমেছে ৩০ ফুট

    ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪ পিএম

    যশোর সদর উপজেলার চাঁন্দুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুর আলী। গত ১৩ দিন ধরে তার বাড়ির টিউবওয়েলে ঠিকমতো পানি উঠছেনা। একই গ্রামের আবুল কালাম জানান, টিউবওয়েল চেপে এক বালতি পানি তুলতে গিয়ে যেন জীবন যায় যায় অবস্থা। বাড়ির পাশের মাঠের স্যালোমেশিনের পানি দিয়ে পানির প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিচ্ছেন। টিউবওয়েলে পর্যাপ্ত পানি না ওঠার কারণে মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এদিকে, স্যালোমেশিনেও কম পরিমানে পানি উঠছে। ৬ লিটার তেল ব্যয় হলেও সাড়ে ৩ বিঘা ধানের আবাদী জমি ভেজানো সম্ভব হয়নি। ফলে চাষিরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

    বিএডিসির সেচ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩০ ফুট নিচে চলে যাওয়ার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, ছাতিয়ানতলা, খিতিবদিয়া, বাদিয়াটোলা, ঝাউদিয়া, বাগডাঙ্গা, দৌগাছিয়া, সাজিয়ালী, কমলাপুর, গোবিলা, জগহাটি, আব্দুলপুর, পোলতাডাঙ্গা, চান্দুটিয়া, আরিচপুর, দৌলতদিহি, কাশিমপুর, যোগীপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের টিউবওয়েলে পর্যাপ্ত পানি না ওঠার কারণে মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন। কোনো কোনো গ্রামে গভীর নলকূপ (ভ্যাটিক্যালযুক্ত টিউবওয়েল) থাকলেও পানি নেয়ার জন্য মানুষের উপচেপড়া ভিড় থাকছে।

    কাশিমপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম জানান, বাড়ির টিউবওয়েলে পানি উঠছে না বললেই চলে। খাবার জন্য মাঠের ডিপওয়েলের পানি ভরে আনছেন। পানির জন্য কষ্ট ও দুর্ভোগ বেড়েছে।

    চুড়ামনকাটি গ্রামের সালমা খাতুন জানান, বাড়ির টিউবওয়েল দীর্ঘ সময় চেপেও এক বালতি পানি উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আবার কোনো কোনো সময় মোটেও পানি থাকছে না।

    চান্দুটিয়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, স্যালো টিউবওয়েলে তেমন পানি উঠছে না। ৬ লিটার তেল খরচ করেও সাড়ে ৩ বিঘা আবাদী জমি পুরোপুরি পানি দিতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে তার মতো অনেক চাষি আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

    যশোর বিএডিসির (সেচ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল রশিদ জানান, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। ফলে এমন অবস্থা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাত হলেই ঠিক হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, পরিমাপ করে দেখা গেছে, যশোর সদর উপজেলা, চৌগাছা উপজেলা ও বাঘারপাড়া উপজেলায় ২৯/ ৩০ ও ৩১ ফিট পানির স্তর নিচে চলে গেছে। সাধারণ পানির ২৬ ফুটের মধ্যে থাকলে টিউবওয়েলে স্বাভাবিকভাবে পানি ওঠে। এছাড়া মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার কিছু গ্রামের টিউবয়েলে পানি উঠছে। আবার কিছু গ্রামের টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এক প্রশ্নে তিনি জানান, ডিপওয়েলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি উঠলেও স্যালো টিউবওয়েলে তেমন পানি উঠছে না। এতে কৃষকের সেচ খরচ বেড়েছে।

    তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল রশিদ আরও জানান, যশোর জেলায় গভীর নলকূপ রয়েছে ১ হাজার ৮৬৭ টি। এসব নলকূপ দিয়ে ২৫ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে পানি দেয়া হয়। আর স্যালো টিউবওয়েল রয়েছে ৬৩ হাজার ৭৯৩ টি। যা দিয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৮২ হেক্টর জমিতে সেচ কাজ করা হয়।

    জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদফতর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ পারভেজ জানান, জেলায় ২৪ হাজার ৩২৩ টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। পানির স্তর ৩৫ ফুট নিচে চলে যাওয়ার ফলে অগভীর নলকূপগুলো অচল প্রায়। বর্তমানে সাবমার্সিবল ও তারা টিউবওয়েলে কিছুটা স্বাভাবিকভাবে পানি উঠছে।

    যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্যা জানান, বৃষ্টিপাত না হওয়া ও অপরিকল্পিত সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামিয়ে দিচ্ছে। সাধারণত পানির স্তর ২৬ ফুটের নিচে নামলে হস্তচালিত নলকূপ থেকে পানি ওঠে না। আর যদি ৩০ ফুটের নিচে যায় তাহলে বাড়িতে মোটর দিয়ে পানি তোলাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। এভাবে ভূগর্ভের পানির স্তর খালি হয়ে পড়লে তা পূরণে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ পরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, যশোর জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। প্রচন্ড খরতাপে পানির স্তর নিচে যাওয়ায় স্যালোমেশিনে ঠিক মতো পানি উঠছেনা। কম পানি উঠার কারণে বেশি তেল ব্যবহার হচ্ছে। যে কারণে সেচ কাজে চাষিদের ব্যয় বেড়েছে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…