দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার (পাকেরহাট) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীরা দফায় দফায় ভোগান্তিতে পড়ছেন।
হাসপাতালের স্যাঁতসেঁতে দেয়াল, দুর্গন্ধযুক্ত করিডোর এবং ব্যবহার অনুপযোগী টয়লেট দেখে যে কেউ হতবাক হবেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ভেতরের পরিবেশে এমন অবস্থা রোগী ও স্বজনদের দৈনন্দিন জীবনকেও ব্যাহত করছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রবেশপথ থেকে ওয়ার্ডের প্রতিটি করিডোরে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। মেঝেতে পানি জমে থাকে, টয়লেটে দুর্গন্ধ তীব্র। নিয়মিত জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয় না। রোগীরা অভিযোগ করছেন, এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিতে গিয়ে তাদের রোগ নিরাময় ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে, এমনকি নতুন সংক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী স্বপন কুমার বলেন, 'বাথরুম ব্যবহার করা প্রায় অসম্ভব। মেঝেতে পানি জমে থাকে। সকাল থেকে আমি বাথরুমে যেতে পারিনি। বেডের পাশেও ময়লা আর দুর্গন্ধ। চিকিৎসা নিতে এসে এমন পরিবেশে থাকা দুঃখজনক হয়ে পড়েছে।'
রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা তাদের জন্য মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করছে। অনেক রোগী ভয়ে বাড়তি সময় খরচ করতে পারছেন না, কারণ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার অভাব স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
কিন্তু রোগী ও স্থানীয়রা মনে করছেন, কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। তারা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালের অপরিষ্কার পরিবেশের জন্য কর্তৃপক্ষ রোগীদের উপরই দায় চাপাচ্ছেন। এতে ভুক্তভোগী রোগীরা আরও ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা দ্রুত হাসপাতাল পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, হাসপাতালের পরিবেশ যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর করা হোক, যাতে রোগীরা নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা পান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ছোট উপজেলা হলেও এই হাসপাতালে রোগীর চাপ প্রচুর। মাত্র দুইজন ক্লিনার নিয়ে হাসপাতাল চালানো সম্ভব নয়। রোগীদেরও কিছুটা সচেতন হওয়া দরকার। বিষয়টি আমি নিজ চোখে দেখেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা রোগীদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি।'
এসআর