এইমাত্র
  • ৬ দিনে এলো ৬৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
  • নতুন বাবরি মসজিদের জন্য একজন একাই দিচ্ছেন ৮০ কোটি টাকা
  • ৪ নারী পাচ্ছেন বেগম রোকেয়া পদক
  • নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনে কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত, প্রধান উপদেষ্টাকে জানালেন সিইসি
  • ইরানে ম্যারাথনে হিজাব লঙ্ঘনের অভিযোগে আয়োজক গ্রেফতার
  • সৌদিতে এক সপ্তাহে ১৯ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার
  • ইসরায়েলের রাজনীতি থেকে কী সরে দাঁড়াচ্ছেন নেতানিয়াহু
  • পেঁয়াজ আমদানি শুরু, এক লাফে প্রতিকেজিতে দাম কমল ৩০ টাকা
  • দেশে চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
  • খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান সম্পন্ন, রিপোর্ট নরমাল: মেডিকেল বোর্ড
  • আজ সোমবার, ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    কম্বল আর ম্যাট্রেসের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে লেপ-তোষকের কদর

    আব্দুল কাদের, ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম
    আব্দুল কাদের, ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম

    কম্বল আর ম্যাট্রেসের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে লেপ-তোষকের কদর

    আব্দুল কাদের, ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম

    কিছু দিন পরেই জেঁকে বসবে শীত। শীতের রাত মানে লেপের তাপে শান্তির নিদ্রা। তাই গরমের বিদায় জানিয়ে লেপ-তোষক বানানোর হিড়িক পড়ে যায়।

    অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতকালের পূর্বেই লেপ-তোষক তৈরীতে কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় তুলনামূলক বেশী। ভীড় জমতে শুরু করে তুলা তৈরী করা দোকান গুলোতে। কেউ নগদ টাকায় আগে থেকে তৈরি করাগুলো কিনে নেয়। আবার কেউ বানানোর জন্য অর্ডার দেয়। অনেকে আবার পুরোনো লেপ-তোষক মেরামত করে থাকেন। কিন্তু ধামরাইয়ে দেখা গেলো এর ভিন্ন চিত্র। লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে ভিড় থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ক্রেতা শূন্য বিক্রেতারা।

    শীতের আগমনে কদর নেই লেপ, তোষক ও জাজিমের। আগে এ সময় এসব সামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করলেও, বর্তমানে কাজ নেই কারিগরদের।

    সরেজমিনে ধামরাই নতুন দক্ষিণপাড়া (কমিশনার মোড়) এলাকায় দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা কেউ স্মার্ট ফোনের মধ্যে লুডু কেউবা আবার গল্পে মগ্ন হয়ে সময় পার করছেন। দোকান গুলিতে নেই তেমন কোনো ভীড়। ব্যবসায়ীরা বসে বসে দিন কাটাচ্ছে, নেই কোনো কাষ্টমার।

    বিক্রেতারা জানায়, দুই একদিন পরপর বড়জোর একটা থেকে দুইটা কাষ্টমার পাওয়া যায়। তাও মাথার বাঁলিশ তৈরীর কাস্টমার।

    ব্যবসায়ীদের অভিযোগ আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে তুলার তৈরী লেপ-তোষকের চাহিদা। মানুষ এখন কম্বল আর ম্যাট্রেসের দিকে ঝুঁকছেন।

    লেপ-তোষাকের বাজারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর এক পিস রেডিমেট লেপ বিক্রি হচ্ছে ১৮শ’ থেকে ৩ হাজার’ টাকার মধ্যে, তোষক বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ৩৫শ’ টাকার মধ্যে এবং জাজিম বিক্রি হচ্ছে ৪হাজার’ টাকা থেকে ৭হাজার’ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া বালিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।

    জানতে চাইলে লেপ-তোষক কারীগর মোঃ ফরহাদ হোসেন জানান, লেপ তোষাকের চাহিদা এখন আর নাই মানুষের মধ্যে। এখন কম্বল আর কমফোর্ট ব্যবহার করে মানুষ। তুলার চাহিদা আর নাই। আগে ৮টা ১০টা করে লেপ বানাইতাম দৈনিক। এখন তো কাজই নাই। কেউ আর আগের মতো লেপ তোষক বানায় না। এখন শুধু বালিশ বানায়। সামনে শীতকাল তখন হয়তো দু একটা লেপ তোষকের অর্ডার পেতে পারি।

    তিনি আরও বলেন, ২৫ বছর যাবত এই ব্যবসায় জরিত। আগে মানুষ লেপ তোষক বানানোর জন্য বসে থাকতো। আর এখন কোন রকম ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। আগের মতো নাই আর আমাদের ব্যবসা। এখন সবই পাওয়া যায় মার্কেটে। গত ৫ বছর যাবত আমাদের ব্যবসার লসের দিকে যাচ্ছে। ১ দিন কাজ করলে ৪ দিন বসে থাকতে হয়।

    লেপ-তোষক তৈরীর ব্যবসায়ী সনজিৎ সাহা বলেন, মানুষের হাতে এখন টাকা পয়সা নাই। দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে, এতে মানুষ আর লেপ তোষক বানাতে চায় না। এখন তো বাজারের বিভিন্ন ধরণের আইটেম বের হয়ে গেছে। লেপ এর বদলে কম্বল কিনে, দামও কম। লেপের খরচ বেশী, কম্বলে খরচ কম। তাছাড়া লেপের থেকে কম্বল দেখতে সুন্দর বেশী। আগের মতো করে সেই চাহিদা নেই এখন আর। এক সময় শীত থাকতো টানা ৩ মাসেরও বেশী। এখন সেই শীত এক দেড় মাসেই শেষ।

    লেপ-তোষক তৈরীর কারিগররী পেশা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহ্য পেশা। এখন শীত আসলে কারিগররা লেপ-তোষক বানাচ্ছে এমন দৃশ্য আর চোখে পড়ে না। বাহারি কম্বল আর ম্যাট্রেসের দাপটে হারিয়ে গেছে লেপ-তোষকের কদর। আর এই সময় ও রুচির মধ্যস্থতায় বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া লেপ-তোষকের ব্যবসায়ী ও কারিগররা। দীর্ঘদিনের এ ব্যবসাকে না পারছে ছেড়ে দিতে না পারছে ধরে রাখতে। তাদের কারো কাছে এটা ঐতিহ্যে আবার কারোর জন্য এটাই একমাত্র উপার্জনের উৎস।

    ধামরাই বাজারের এক লেপ-তোষক কারিগর বলেন, লেপ-তোষকের কারিগর আমার দাদা ছিলেন, বাবা ছিলেন এখন ৪০ বছর যাবত আমি করছি। আগের মতো করে এখন আর সেই ব্যবসা আমাদের নেই বলা যায়। এখন কম্বল আর ম্যাট্রেসের কারণে আমাদের ব্যবসা অনেকটা নাজেহাল অবস্থা। এখন আর কেউ শিমুল তুলার বালিশ তৈরী করতে আসে না। সবাই ফোমের বালিশ কিনে। তুলার তোষক আর কেউ চায় না ফোমের তোষক কিনে। এখন রেডিমেট এর চাহিদা বেশী । লেপের পরিবর্তে কম্বল কিনে মানুষ। এতে করে আমাদের ব্যবসা লসের দিকে। অনেকে লসের কারণে এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য। ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এই পেশার কারিগর।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…