এইমাত্র
  • বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়া, টিকিট অনিশ্চিত জার্মানির
  • টাইব্রেকারে হেরে বিদায় আর্জেন্টিনার
  • ঢাকায় শীতের আমেজ, সকালের তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস
  • আখতার হোসেন টাকা খেয়ে পিপি নিয়োগ দিয়েছেন: মুনতাসির মাহমুদ
  • আজ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ‘স্কুল ফিডিং’ কার্যক্রম শুরু
  • ঐতিহাসিক পোড়া বাড়িই একদিন বাংলার তীর্থস্থান হবে
  • মেসি-মার্তিনেজের গোলে বছরের শেষ ম্যাচে জয় পেল আর্জেন্টিনা
  • ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরে থানায় বিস্ফোরণে সাতজন নিহত
  • ত্রিভুজ প্রেমের বলি আশরাফুল: বন্ধুর হাতে খুন, মরদেহ করা হয় ২৬ টুকরো
  • জুলাই সনদে এক শর্তে স্বাক্ষর করবে এনসিপি
  • আজ শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৪ পিএম

    সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত

    শাহীন মাহমুদ রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (কক্সবাজার) প্রকাশ: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০৪ পিএম

    বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় করেন। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই এই সৈকতজুড়ে নামে অন্ধকার। কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী, শৈবাল- সব জনপ্রিয় পয়েন্টে আলো নেই বললেই চলে। কোথাও মিটমিট করে, কোথাও পুরোপুরি নিভে আছে। আর সেই সুযোগে বেড়েছে ছিনতাই, ইভ টিজিং ও নানা অপরাধ।

    সরেজমিনে দেখা যায়- বাতি থাকলেও বেশিরভাগই অচল। কলাতলী থেকে সুগন্ধা পর্যন্ত প্রতিটি পিলারে লাইট লাগানো, কিন্তু একটি বাতিও জ্বলছে না। সুগন্ধায় হাতে গোনা চারটি এলইডি লাইট জ্বলতে দেখা গেলেও লাবণীতেই কেবল চারটি এলইডি কিছুটা আলো ছড়াচ্ছিল। সেখানে থেকেই আবার শৈবাল হয়ে ডায়বেটিস পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুটঘুটে অন্ধকার। এক-দু’টি বাতি মিটমিট করে জ্বলা-নেভা ছাড়া আর কোনো আলোর দেখা নেই।

    এমন অন্ধকারকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। চলাফেরা করতে গিয়ে আতঙ্কে থাকেন পর্যটকেরা। অনেকে আতঙ্কে সন্ধ্যার পর আর সৈকতে নামতেই সাহস করেন না।

    জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সৈকতের ডায়বেটিস পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত বসানো হয় ১১৩টি পোল লাইট। খরচ হয় ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৩৫টি বর্তমানে সচল, ৭৮টি বিকল। সঙ্গে ৩২টি সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছিল, যেগুলো লাবণী পয়েন্টের তথ্যকেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

    বিকল হওয়ার কারণ হিসেবে প্রশাসন বলছে- লবণাক্ত হাওয়া, বৃষ্টির পানি, তার ও পুঁতি নষ্ট হওয়া এবং গত বর্ষায় কয়েকটি পিলার ভেঙে পড়া। আবার অনেক লাইট ও তার চুরি হয়ে গেছে।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, এক দশক আগে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অর্থায়নে কেনা ১১৯টি ফ্লাড লাইটের মধ্যে এখন ৮০টির মতো অবশিষ্ট আছে।

    তার ভাষ্য, ৫০টির মতো বাতির হদিস নেই। অথচ প্রশাসন বলছে, সবই লাগানো ছিল। সিদ্ধান্তহীনতায় বছর কেটে গেছে- এটা স্পষ্ট ব্যর্থতা।

    আরেকটি সূত্র জানায়, প্রশাসনের একজন সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সময় চট্টগ্রাম থেকে ১০০টি ৪০০ ওয়াটের এলইডি ফ্লাডলাইট আনা হয়েছিল। যার ৫০টি স্থাপন করা হলেও বাকি ৫০টি বাতির কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টাকা।

    চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থেকে আসা পর্যটক আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘এত বড় পর্যটন শহর অথচ সৈকতে আলো নেই- লজ্জার বিষয়।’

    তার সঙ্গে থাকা আজিজুল হক জানান, কলাতলী থেকে সুগন্ধা আসার পথে পুরো অন্ধকার। মনে হচ্ছিল যেকোনো সময় কিছু ঘটে যেতে পারে।

    জলতরঙ্গের পশ্চিমে বসে থাকা কয়েকজন তরুণ বলেন, ‘সী-গালের সামনে বসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আলো নেই। আগে আলো থাকত, এবার পুরো অন্ধকার।’

    বৃহত্তর সুগন্ধা বিচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ঝিনুকের দোকানের আলোতেই এখন সৈকত আলোকিত। পিলারের বাতিগুলো নষ্ট, ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে, পর্যটকরা নিরাপদ বোধ করছেন না।’

    বিচ কিককট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সোহেল বলেন, ‘১০ হাজার পরিবার এই ব্যবসার ওপর নির্ভরশীল। অন্ধকারের কারণে রাতে পর্যটক আসে না। অথচ বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি প্রতিবছর কোটি টাকা রাজস্ব তোলে- সেই টাকা যায় কোথায়?’

    পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান বলেন, ‘৩৫টির মতো লাইট সচল। নতুন লাইট কেনার প্রক্রিয়া চলছে।’

    টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ জানান, ছিনতাই প্রতিরোধে দুই শিফটে টহল বাড়ানো হয়েছে। সৈকতে ২৭টিসহ মোট ৩৩টি সিসি ক্যামেরা আছে- ৮/১০টি নষ্ট, দ্রুত মেরামত হবে। আরও ১৭টি স্থাপন করা হবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, আলো না থাকা বড় সমস্যা। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, দ্রুত বাতি লাগানো হবে।

    জেলা প্রশাসক মো. আ. মান্নান বলেন, ‘আগামী সপ্তাহেই নতুন ফ্লাড লাইট বসানো হবে

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…