পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ২ ছেলে কাসিম ও সুলেমান খান দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কারাবন্দি বাবার সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তান যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। লন্ডনে স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তারা জানিয়েছেন, আগামী জানুয়ারি মাসেই এই সফরের উদ্দেশ্যে তারা ইতোমধ্যে ভিসার আবেদন করেছেন।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন।
সাক্ষাৎকারে কাসিম খান বলেন, আমরা জানুয়ারিতে পাকিস্তান যাওয়ার পরিকল্পনা করছি। কারণ সরকার প্রকাশ্যে বলেছে আমরা যেতে পারি। আমরা ভিসার জন্য আবেদন করেছি, যদিও এখনও তা হাতে পাইনি।
এর আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছিলেন, ইমরান খানের ছেলেরা চাইলে পাকিস্তানে আসতে পারেন।
আরেক ছেলে সুলেমান খান অভিযোগ করেন, তার বাবাকে বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারের একটি অত্যন্ত সংকীর্ণ ও অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছে। যাকে তিনি ‘ডেথ সেল’ বা ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সেখানে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির অভাবসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি নানা পরিস্থিতির কথা তারা উল্লেখ করেন।
ইমরান খানের ছেলেরা জানান, গত কয়েক মাস ধরে তাদের বাবার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। এমনকি কয়েক মাস আগে তাদের নানি লেডি অ্যানাবেল গোল্ডস্মিথের মৃত্যু হলেও তারা সেই সংবাদ বাবাকে জানাতে পারেননি। সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ইমরান খানের মৃত্যু নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজবকে তারা অত্যন্ত ‘মানসিক যন্ত্রণাদায়ক’ বলে অভিহিত করেন।
ইমরান খানের ছেলেরা আরও জানান, বাবার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা বা ‘ডিল’ করে তার মুক্তির বিষয়ে তারা আগ্রহী নন। কারণ ইমরান খান তার দেশের মানুষের অধিকার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইমরান খানের মৌলিক মানবাধিকার ও যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
কাসিম খান মনে করেন, বর্তমানে পাকিস্তানে নামমাত্র গণতন্ত্র থাকলেও কার্যত ‘সামরিক একনায়কতন্ত্র’ চলছে।
অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বিদেশি গণমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্র মোশাররফ জাইদি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ইমরান খানকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়নি। গত দুই বছরে তিনি কয়েকশবার তার আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই মাঝে মাঝে সাক্ষাতের ওপর সাময়িক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এইচএ