গ্রিনকার্ডের সাক্ষাৎকারের শেষ ধাপে অংশ নিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আটক হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী বাবলিজিত বাবলি কৌর। প্রায় ৩ দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী এই নারীকে গত ১ ডিসেম্বর ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা আটক করেন।
লং বিচ ওয়াচডগ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাবলি কৌরের গ্রিনকার্ড আবেদনের পিটিশন ইতোমধ্যে অনুমোদিত ছিল। তার এক কন্যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এবং স্বামী গ্রিনকার্ডধারী। সব আইনগত প্রক্রিয়া চলমান থাকা সত্ত্বেও তাকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।
কৌরের মেয়ে জোটি বলেন, ১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কার্যালয়ে বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য উপস্থিত ছিলেন তার মা। এ সময় একদল ফেডারেল এজেন্ট অফিসে প্রবেশ করে এবং বাবলি কৌরকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়।
গ্রেপ্তারের পর কৌরকে তার আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলেও তাকে আটক রাখা হয়। কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত পরিবার জানতে পারেনি তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে জানা যায়, তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাডেলান্টোতে অবস্থিত একটি আইসিই ডিটেনশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে, যা আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল।
১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান বাবলি কৌর। শুরুতে তার পরিবার লাগুনা বিচে বসবাস করলেও পরে কাজের সূত্রে লং বিচের বেলমন্ট শোর এলাকায় স্থায়ী হয়। তার তিন সন্তান। ৩৪ বছর বয়সী জোটি (ডাকা কর্মসূচির আওতায় বৈধ অবস্থানে), এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে, যারা দু’জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাবলি কৌর ও তার স্বামী বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেন, যা স্থানীয়দের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিল। এছাড়া প্রায় ২৫ বছর তিনি বেলমন্ট শোর রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেন। সম্প্রতি ওই চেইন বন্ধ হয়ে গেলে তিনি আবার রেস্তোরাঁ ব্যবসায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
পরিবারের দাবি, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে কৌরকে একটি বড় ডরমিটরি কক্ষে রাখা হয়েছে, যেখানে একসঙ্গে বহু বন্দী অবস্থান করছেন। সারারাত আলো জ্বালানো থাকে এবং অতিরিক্ত শব্দের কারণে ঠিকমতো ঘুমানো যায় না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিবার সাক্ষাৎ করতে পারলেও অনেক ক্ষেত্রে একটি ছোট সাক্ষাতের জন্য পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
মেয়ে জোটি বলেন, এটা আমাদের জন্য এক দুঃস্বপ্ন। আমরা তাকে বের করে আনার জন্য সবকিছু করছি। সে এখানে থাকার মতো কেউ নয়। এটি অমানবিক।
এমআর-২