হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বরগুনার আমতলী উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণকাজে উপজেলা প্রশাসন বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রায় এক ঘণ্টা আদালতের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে আইনজীবী ও কয়েকশ বিচারপ্রার্থীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির (বার) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, ১৯৮২ সালে আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত স্থাপিত হয়। স্থাপনের শুরু থেকেই আদালতের দখলে এক একর ৪৬ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমিতেই সরকারের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয় এবং দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
২০২৩ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল আলম ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আরিফুর রহমান আদালতের জমির সীমানা নির্ধারণ করেন। এরপর তিন দিকের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতের নিরাপত্তা বেষ্টনী ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণকাজ শুরু করে গণপূর্ত বিভাগ।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে নির্মাণকাজে বাধা দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ খবর পেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইফতি হাসান ইমরানসহ আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ফলে প্রায় এক ঘণ্টা আদালতের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
তালতলী উপজেলার কড়াইবাড়িয়া এলাকার বিচারপ্রার্থী মাসুদ মিয়াসহ একাধিক বিচারপ্রার্থী বলেন, হঠাৎ করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতের প্রাচীর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় বিচারক ও আইনজীবীরা ঘটনাস্থলে যান এবং আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম বলেন, নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণে বাধা দেওয়ায় বিচারিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এতে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ মহসিন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আদালতটি অরক্ষিত ছিল। দুই বছর আগে উপজেলা প্রশাসন ও আদালত কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে সীমানা নির্ধারণ করেন। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী আদালতের নিরাপত্তার স্বার্থে ওই সীমানা অনুযায়ী বেষ্টনী নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ অযাচিতভাবে উপজেলা প্রশাসন এতে বাধা দিয়েছে।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, নির্ধারিত পিলার অনুযায়ী হাইকোর্টের নির্দেশে আদালতের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ চলছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এতে বাধা প্রদান করেন।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, “নির্মাণকাজে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হয়নি। আদালতের নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণে কোনো সমস্যা নেই।
এসএম