রাজধানীর হোটেল ‘আমারই ঢাকায়’ শুরু হয়েছে বাংলাদেশ স্মল অ্যানিমেল ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাসাভা) প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে কানিভা বাংলাদেশ ও থ্রিএস ইমপেক্স বাংলাদেশের উদ্যোগে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী এই কনফারেন্স। এই সম্মেলনে দেশি-বিদেশি ভেটেরিনারিয়ানরা অংশ নিচ্ছেন।
জানা গেছে, সম্মেলনে পোষা প্রাণীর (কুকুর–বিড়ালসহ ছোট প্রাণী) চিকিৎসা, পুষ্টি, সার্জারি ও স্বাস্থ্যসেবার সর্বাধুনিক পদ্ধতি নিয়ে সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও গবেষণাপত্র উপস্থাপনা হচ্ছে। আয়োজকদের মতে, দেশে দ্রুত পোষা প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সঠিক পুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে অনেকেই অকালে মারা যায়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে ভেটেরিনারিয়ানদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা তৈরিই মূল লক্ষ্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. জি.কে.এম. মুস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন থাইল্যান্ডের পেট প্রোডাক্টস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (টিপিএ) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর-পেট প্রোডাক্ট গ্রুপ মি. নিতিপং লাওহাভিসিত।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাসাভা’র সভাপতি ও কনফারেন্স চেয়ারপারসন ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। এছাড়া বিশেষজ্ঞ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডের পেট অ্যানিমাল নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিসার্চার ডা. অত্তাউইত কোভিতভাধি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাসাভা’র সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ এলাহী চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. কে.এইচ.এম. নাজমুল হুসাইন নাজির।
কানিভা আন্তর্জাতিক পোষা প্রাণীর খাবারের কান্ট্রি ব্র্যান্ড ম্যানেজার মো. দীন ইসলাম আমির বলেন, ‘পোষাপ্রাণীদের স্বাস্থ্যরক্ষায় এবং দীর্ঘায়ুর জন্য সুষম খাবার অত্যন্ত জরুরি। অভিভাবকদের পাশাপাশি ভেটেরিনারিয়ানদের মধ্যেও এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা কাজ করছি।’
ভবিষ্যতেও পোষা প্রাণী সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই ধরনের আয়োজন করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি বিভাগে এধরনের আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সচেনতামূলক আয়োজন করা হবে।’
থ্রিএস ইমপেক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম বলেন, ‘প্রতিবছর অযত্ন আর অবহেলায় আমাদের দেশে অনেক পোষাপ্রাণী মারা যায়। একটি কুকুর বা বিড়ালের গড় আয়ু ১২–১৬ বছর। এই সময়ের মধ্যে কখন কোন ধরনেরে চিকিৎসা এবং খাদ্যভাস দেওয়া উচিত তা সম্পর্কে ভেটেরিনারিয়ানদের সচেতনতা বৃদ্ধিই এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘পোষাপ্রাণীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আমরা কাজ করে যাব। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা আছে।’
থাইল্যান্ডের পেট প্রোডাক্টস ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (টিপিএ) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর-পেট প্রোডাক্ট গ্রুপ মি. নিতিপং লাওহাভিসিত বলেন, ‘বাংলাদেশে পোষা প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে আমরা আনন্দিত। এ ধরনের সম্মেলন ভেটেরিনারিয়ানদের দক্ষতা বাড়াবে এবং পোষা প্রাণীর কল্যাণে বড় ভূমিকা রাখবে।’
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক ভেটেরিনারিয়ান এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে পোষা প্রাণীদের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।