উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। ঘন কুয়াশা, হিমেল বাতাস ও কমতে থাকা তাপমাত্রার কারণে জেলার স্বাভাবিক জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৯টায় জেলায় চূড়ান্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ভোর থেকেই দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে। কুয়াশার কারণে সড়কে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। হাটবাজার, সড়ক ও খোলা জায়গাগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় শীতের প্রকোপ বেশি অনুভূত হচ্ছে। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ভোরের তীব্র ঠান্ডায় দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকদের কাজে বের হতে দেরি হচ্ছে। এতে তাদের দৈনন্দিন আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ভোরে এত ঠান্ডা থাকে যে শরীর ঠিকমতো নড়াচড়া করতে চায় না। কুয়াশার কারণে রাস্তাঘাটও স্পষ্ট দেখা যায় না।
একই উপজেলার আঙ্গারপাড়া গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, সকালে মাঠে নামা এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশির আর ঠান্ডার কারণে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
পরিবহন খাতেও শীতের প্রভাব পড়েছে। খানসামা বাজারের ভ্যানচালক সালাম মিয়া জানান, সকালে যাত্রী একেবারেই কম থাকে। মানুষ ঠান্ডার ভয়ে বের হয় না, এতে আয় কমে যাচ্ছে।
শীতের প্রভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম লক্ষ্য করা গেছে। অভিভাবকরা শিশুদের ঠান্ডাজনিত অসুস্থতার আশঙ্কায় অনেক ক্ষেত্রে সন্তানদের ঘরে রাখছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলে আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ভোর ও রাতের দিকে শীতের অনুভূতি তীব্র থাকবে। পাশাপাশি কুয়াশা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তারা সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, ডিসেম্বরের শেষভাগে উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন ও শীতবস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এসআর