


জাতীয়
সব দেখুন
সর্বশেষ প্রকাশিত
রাজনীতি
সব দেখুন





চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত
রাজধানী ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১ হাজার ৮০০ গ্রাম কোকেনসহ এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে তাকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম। জব্দ করা কোকেনের বাজারমূল্য ১১ কোটি টাকা।
শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল দিবাগত রাত একটার পর মরক্কো থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইট আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ফ্লাইটের যাত্রী ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে দেড় কেজি কোকেন জব্দ করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এই পরিদর্শক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কোকেনসহ গ্রেপ্তার ওই ভারতীয় নাগরিক আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে অর্পিতা শাহরিয়ার কবির মুমুর (৪১) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বুধবার(০৭ জুন) রাতে রাজধানীর মহাখালী এলাকার বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন রাতেই তার মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এর পরদিন বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) রাজধানীর মিরপুরে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মায়ের কবরে তাকে দাফন করা হয়।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মহাখালীর আমতলী এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
শাহরিয়ার কবিরের মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে তিনি কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন সে বিষয়ে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রী হারান শাহরিয়ার কবির। মায়ের মৃত্যুতে ইংল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন অর্পিতা শাহরিয়ার কবির। এরপর থেকে তিনি দেশেই বসবাস করছিলেন।

বাবা মা আত্মীয় স্বজনদের সাথে বেড়াতে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় চিত্রা হায়েনার হামলায় হাতের কব্জি হারালো সাহিদ (২) নামের এক নিষ্পাপ শিশু দর্শনার্থী। ঘটনাটি গোটা মিরপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
আহত শিশু সাহিদের নানী কবিতা বেগম জানান, সাহিদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর শাহাপুর গ্রামের শিউলি-সুমন মিয়া দম্পতির একমাত্র সন্তান। শিশু সাহিদের বাবা সুমন মিয়া একটি গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে সাভারের জিরানী বাজারের বটতলা মোড় এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। মা শিউলি বেগম একজন গৃহিণী। শিশু সাহিদের নানা-নানি গাজিপুর চৌরাস্তা এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। তাদের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার একটি গ্রামে।
কবিতা বেগম আরো জানান, ঘটনার দিন ৮ জুন (বৃহস্পতিবার) দাদা বাড়ির আত্মীয়রা গাজিপুর চৌরাস্তার ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসেন। সেখান থেকেই শিশু সাহিদের দাদা বাড়ি ও নানা বাড়ির উভয় পরিবারের মা-নানীসহ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে জাতীয় চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসে শিশু সাহিদ। চিড়িয়াখানায় সংরক্ষিত বিভিন্ন পশুপাখি দেখতে দেখতে বেলা আনুমানিক বারোটার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার চিত্রা হায়েনার একটি খাঁচার সামনে পৌছে তার আত্মীয় স্বজন।
এসময় শিশু সাহিদ তার মায়ের কোল থেকে নেমে দৌড়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে চিত্রা হায়েনার খাঁচার একেবারে কাছে পৌছে যায়। কিন্ত অসাবধানতা বশতঃ হঠাৎ শিশুটি হায়েনার খাঁচাটির ভেতরে তার কচি হাতের আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়। এসময় আত্মীয়স্বজন কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই আকস্মিক খাঁচার ভেতরে সামান্য দূরে থাকা একটি হায়না এক লাফে শিশু সিয়ামের হাতের উপরে হামলে পড়ে।
এসময় হায়নাটির অব্যর্থ আক্রমনে শিশু সাহিদের আঙ্গুল কামড়ে ধরে ভেতরের দিকে টানাটানি শুরু করে। উপস্থিত সকলে দৌড়ে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তার হাতটি হায়েনাটির মুখ থেকে কনুইয়ের নিচের কব্জি থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে মূহুর্তেই উদরস্থ করে ফেলে।
এদিকে শিশু সাহিদ ও তার আত্মীয় স্বজনদের ডাক চিৎকারে আশপাশের অন্যান্য অসংখ্য দর্শনার্থীরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) নিয়ে যান।
ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর মুজিবুর রহমান বলেন,জাতীয় চিড়িয়াখানায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা অবশ্য প্রতিষ্ঠানটির জন্যে খুব হতাশাজনক একটি বিষয়। এ ঘটনায় আহত শিশুর চিকিৎসা ও পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের দারুসসালাম জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মফিজুর রহমান পলাশ বলেন, মর্মান্তিক এ ঘটনায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে যেহেতু মাত্র দুবছরের একটি নিষ্পাপ শিশু আহত হয়েছে। সকল কিছুর আগে প্রয়োজন তার উন্নত চিকিৎসা। খুব শিগগিরই এ ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে গাড়ি থেকে দুই নারী-পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৭ জুন) সকালে তেজগাঁও থানার এলেনবাড়ি এলাকায় বিবস্ত্র অবস্থায় প্রাইভেটকার থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়িটি এলেনবাড়ি এসএসএফ স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরে ছিল।
নিহত পুরুষের নাম- দেলোয়ার হোসেন (৫৩)। তার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ায়। আর নারীর নাম- মৌসুমী আক্তার রানী (৪২)। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় তার বাড়ি।
তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহ আলম বলেন, স্থানীয়দের দেওয়া খবরে আমরা তেজগাঁওয়ের এলেনবাড়ি এলাকায় একটি প্রাইভেটকার থেকে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাইভেটকারটি মৃত দেলোয়ারের। এসএসএফ কোয়ার্টারে থাকতেন দেলোয়ার। দুজনের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। তাদের বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি।
স্পষ্ট মৃত্যুর কোনো আলামত নেই কিন্তু একই জায়গায় কাছাকাছি সময় দুজনের মৃত্যু রহস্য কি হতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের অবস্থা দেখে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, প্রাইভেটকারে তারা হয় অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন অথবা উত্তেজক কিছু সেবন করেছিলেন। নারীর ব্যাগে কনডম পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তে স্পষ্ট হবে মৃত্যুর কারণ।
যোগাযোগ করা হলে তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ধারণা করা হচ্ছে দুজনই উত্তেজক কিছু সেবন করে থাকতে পারেন। তাছাড়া প্রাইভেটকারে তাদের বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের পক্ষে মামলাসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে।

রাজধানীজুড়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করে ডিএমপির বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।
শনিবার (৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে রোববার (১০ মার্চ) একই সময় পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় ওই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭৫৬ পিস ইয়াবা, ১৪ কেজি ৮৭০ গ্রাম গাঁজা, ৫৩ গ্রাম হেরোইন ছাড়াও ৯ বোতল ফেনসিডিল ও এক বোতল দেশীয় তৈরি মদ জব্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক ২৯টি মামলা করা হয়েছে।
সারা দেশের ন্যায় যশোরেও চলছে ঘণ্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং। রাত-দিন সমানতালে করা হচ্ছে লোডশেডিং। একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে শহরে ৪-৫ ঘণ্টা এবং গ্রামে থাকছেনা ১০-১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ। আর একারণে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার। বিসিকসহ শহরের স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থায় জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। আবার বাসা বাড়িতেও করা হচ্ছে জেনারেটর। এতে বেড়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার। অনেকে কিনছেন আইপিএস।
এদিকে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় শিডিউল লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে যশোর ওজোপাডিকোর। ঘাটতি ছিল ১৯ মেগাওয়াট, লোড ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো কোনো এলাকায় একাধিকবার, কিছু এলাকায় এক ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গরমে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না।
করোনা পরবর্তী চাহিদা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সব কিছুর দাম আকাশচুম্বী। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ভর্তুকি বেড়েছে। বর্তমানে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারার কারণে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে বেড়েছে লোডশেডিং।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস্ এজেন্টস্ এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, লোডশেডিং বাড়ার কারণে স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা দোকান বা অফিসে জেনারেটর ব্যবহার করে থাকেন। ছোট জেনারেটরে পেট্রোল ও বড় জেনারেটরে ডিজেল ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক সপ্তাহ ধরে পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সহসভাপতি ও যাত্রীক পেট্রোল পাম্পের মালিক আতিকুর রহমান টিকু জানান, আমাদের পাম্পে প্রতিদিন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার লিটার। আর পেট্রোল-অকটেনের আড়াই হাজার লিটার। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে ডিজেল ও পেট্রোলের বিক্রি বেড়েছে। যা খোঁজ পাচ্ছি সেটি হলো সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও বাড়িতে এসব জ্বালানি ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির নির্বাহী সদস্য হাসানুল কবির হাসান বলেন, গত ৭-৮ দিন ধরে সব পাম্পে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে। এভাবে লোডশেডিং হলে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।
শহরের এইচ এমএম রোডের লেদার ফেয়ারের মালিক আমিনুল মজিদ তুষার জানান, লোডশেডিং হলে এঅঞ্চলের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী জেনারেটর ব্যবহার করছেন। অনেকের নিজস্ব আবার অনেকে ভাড়ায় জেনারেটর লাইন ব্যবহার করছেন। এতে আমাদের ব্যয় বাড়ছে। কেননা এক ঘণ্টায় দুই লিটার জ্বালানি পুড়ছে।
এইচ এম ক্লথ স্টোরের মালিক রাফিউল আলম বাবু বলেন, এখানে বিভিন্ন খাতের হাজারো ব্যবসায়ী রয়েছেন। এরমধ্যে ছিট কাপড়ের ৪০টি দোকান আছে। যাদের সবাই লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর ব্যবহার করছেন।
একই অবস্থা যশোরের বিসিকে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এমইউ সিইএ ফুডসের স্বত্ত্বাধিকারী শ্যামল দাস বলেন, দেশের রপ্তানি খাতকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখা উচিত। কেননা লোডশেডিং হলে আমাদের জ্বালানি খরচ অনেক বৃদ্ধি পায়। যেখানে আগে জেনারেটরে একদিনে ২০ লিটার ডিজেল। লোডশেডিং শুরু হবার কারণে এখন দিনে লাগছে ৬০ লিটার।
এব্যাপারে যশোর ওজোপাডিকো’র উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রওশন আলী জানান, আমরা নিয়মানুযায়ী লোডশেডিং করছি। আমাদের এখানে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬০ মেগাওয়ার্ট। সেখানে সরবরাহ পাচ্ছি ৪০-৪২ মেগাওয়াট।
পিএম
সারা দেশের ন্যায় যশোরেও চলছে ঘণ্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং। রাত-দিন সমানতালে করা হচ্ছে লোডশেডিং। একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে শহরে ৪-৫ ঘণ্টা এবং গ্রামে থাকছেনা ১০-১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ। আর একারণে বেড়েছে জ্বালানি তেলের ব্যবহার। বিসিকসহ শহরের স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থায় জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন। আবার বাসা বাড়িতেও ব্যবহার করা হচ্ছে জেনারেটর। এতে বেড়েছে পেট্রোল ও ডিজেলের ব্যবহার। অনেকে কিনছেন আইপিএস।
এদিকে ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় শিডিউল লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে যশোর ওজোপাডিকোর। ঘাটতি ছিল ১৯ মেগাওয়াট, লোড ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো কোনো এলাকায় একাধিকবার, কিছু এলাকায় এক ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ বন্ধ করতে হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে কলকারখানার উৎপাদন ব্যবস্থা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গরমে ক্লাসে মনোযোগ দিতে পারছে না।
করোনা পরবর্তী চাহিদা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজি, জ্বালানি তেলসহ সব কিছুর দাম আকাশচুম্বী। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। জ্বালানি তেল আমদানিতে সরকারের ভর্তুকি বেড়েছে। বর্তমানে ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে না পারার কারণে পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে বেড়েছে লোডশেডিং।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স ডিস্ট্রিবিউটরস্ এজেন্টস্ এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, লোডশেডিং বাড়ার কারণে স্বচ্ছল ব্যবসায়ীরা দোকান বা অফিসে জেনারেটর ব্যবহার করে থাকেন। ছোট জেনারেটরে পেট্রোল ও বড় জেনারেটরে ডিজেল ব্যবহার হয়ে থাকে। গত এক সপ্তাহ ধরে পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও যাত্রীক পেট্রোল পাম্পের মালিক আতিকুর রহমান টিকু জানান, আমাদের পাম্পে প্রতিদিন ডিজেলের চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৩ হাজার লিটার। আর পেট্রোল-অকটেনের আড়াই হাজার লিটার। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে ডিজেল ও পেট্রোলের বিক্রি বেড়েছে। যা খোঁজ পাচ্ছি সেটি হলো সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও বাড়িতে এসব জ্বালানি ব্যবহারের জন্য নিয়ে যাচ্ছে।
যশোর পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির নির্বাহী সদস্য হাসানুল কবির হাসান বলেন, গত ৭-৮ দিন ধরে সব পাম্পে জ্বালানি বিক্রি বেড়েছে। এভাবে লোডশেডিং হলে বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।
শহরের এইচ এমএম রোডের লেদার ফেয়ারের মালিক আমিনুল মজিদ তুষার জানান, লোডশেডিং হলে এঅঞ্চলের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী জেনারেটর ব্যবহার করছেন। অনেকের নিজস্ব আবার অনেকে ভাড়ায় জেনারেটর লাইন ব্যবহার করছেন। এতে আমাদের ব্যয় বাড়ছে। কেননা এক ঘণ্টায় দুই লিটার জ্বালানি পুড়ছে।
এইচ এম ক্লথ স্টোরের মালিক রাফিউল আলম বাবু বলেন, এখানে বিভিন্ন খাতের হাজারো ব্যবসায়ী রয়েছেন। এরমধ্যে ছিট কাপড়ের ৪০টি দোকান আছে। যাদের সবাই লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর ব্যবহার করছেন।
একই অবস্থা যশোরের বিসিকে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এমইউ সিইএ ফুডসের স্বত্ত্বাধিকারী শ্যামল দাস বলেন, দেশের রপ্তানি খাতকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত রাখা উচিত। কেননা লোডশেডিং হলে আমাদের জ্বালানি খরচ অনেক বৃদ্ধি পায়। যেখানে আগে জেনারেটরে একদিনে ২০ লিটার ডিজেল। লোডশেডিং শুরু হবার কারণে এখন দিনে লাগছে ৬০ লিটার।
এব্যাপারে যশোর ওজোপাডিকো'র উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রওশন আলী জানান, আমরা নিয়মানুযায়ী লোডশেডিং করছি। আমাদের এখানে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৬০ মেগাওয়ার্ট। সেখানে সরবরাহ পাচ্ছি ৪০-৪২ মেগাওয়াট।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানার ধান্যঘরা গ্রামে বাবর আলী (৪৫) নামে এক ফল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বাবর আলী ওই গ্রামের ছাত্তার আলির ছেলে।
দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাবর আলী প্রতিদিনের মতো এদিন রাতেও ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন। এসময় দুর্বৃত্তরা বাড়িতে প্রবেশ করে তার গলায় কোপ দেয়। এতে বাবর আলী রক্তাক্ত জখম হন। এসময় বাবরের চিৎকার ও গুংরানিতে স্বজনরা দ্রুত ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যা রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ শুরু করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে জানান ওসি।
তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তর জন্য রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নিহতের স্ত্রী মহিমা খাতুন জানান, একজনের কাছে লিচুর বিক্রির চার লাখ টাকা পাওনা ছিল বাবর আলীর। সন্ধ্যায় তিন ব্যক্তি বাড়িতে এসে বাবর আলীকে হুমকি দেয়। তারাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করলেই অপরাধী শনাক্ত হবে
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, মধ্যরাতে বাব আলীকে হাসপাতালে আনা হয়। তার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ মর্গে রাখা আছে।
হাসপাতেলর জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় বলেন, বাবর আলীর গলায় কোপের আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে মারপিটের ঘটনায় সাবেক কৃষক লীগের সভানেত্রী ও সাবেক প্যানেল মেয়র সামসাদ রানু ওরফে রাঙ্গা ভাবিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার রাত ৮টার দিকে পৌর এলাকার এরশাদপুর চাতাল মোড় থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
জানাযায়, বুধবার (০৭ জুন) সকালে অষ্টম থেকে দশম শ্রেণীর পর্যন্ত ছাত্রদের অর্ধবার্ষিকী পরিক্ষা চলছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিক্ষার দিন ছিল। অর্ধবার্ষিকী পরিক্ষার জন্য সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। সে সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। এরমধ্যে রাঙ্গা ভাবির ছেলে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অর্ক ছিল। তার গায়ে রোদ লাগার কারণে সে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষককে কলার চেপে ধরে টানতে টানতে বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে কিলঘুষিসহ পায়ের স্যান্ডেল খুলে শিক্ষককে মারপিট করে। ভুক্তভোগী স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার বিকেল ৫টায় আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।
সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন বলেন, বুধবার বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার প্রথম দিন ছিল। এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার দিন ছিল। প্রথম পরিক্ষায় বিভিন্ন ঝামেলা থাকেই, এজন্য মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। সেই সময় পরীক্ষার্থীরা মাঠে অবস্থান করছিল। এর মধ্যে সামশাদ রানুর ছেলেও ছিল। তিনি রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে ধাক্কা ধাক্কি করেছে এবং কিছুটা মারধর ও করেছে।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে আমি স্কুলে ঢুকছি এসময় বিদ্যালয়ের মধ্যেই সবার সামনে সামশাদ রানু ওরফে রাঙ্গা ভাবি আমার উপর হামলা করে মারধর করেছেন। স্কুলের সকল ছাত্রই আমার সন্তানের মত। তার একার সন্তান না ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণীর সকল ছাত্রই সেখানে ছিল। ওরা সবাই গাছের ছায়ায় ছিল। আমি স্কুলের প্রধান হয়ে কোন ছাত্র রোদে কষ্ট করুক এটা আমি চাইব না। আমিতো তার কোন ক্ষতি করিনি, সে কেন আমাকে মারধর করল?
অভিযুক্ত সামসাদ রানু রাঙ্গা ভাবি বলেন, আমার ছেলে ঐ স্কুলে পড়ে। আমি ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাই, স্কুলের কক্ষ খোলা না থাকায় রোদের মধ্যে প্রচন্ড গরমে শিক্ষার্থীদের হাঁসফাঁস অবস্থা। অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর অন্যান্য অভিভাবকদের অনুরোধে সাড়ে ১০টার পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে আমি তাকে কক্ষের তালা খোলার কথা বলি। তিনি তালা খুলতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন পরীক্ষা কখন শুরু হবে সেটা আপনাদের ব্যাপার। তারপরও আমি তিনাকে বলি শিক্ষার্থীরা কেন এই গরমের মধ্যে মাঠে থাকবে, শ্রেণিকক্ষ খুলে দিলেই তো তারা সেখানে থাকতে পারত। এই তীব্র গরমে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থও হয়ে যেতে পারে। আমি ৮০০ শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসেবে বলেছি শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্য আপনাকে কক্ষ খুলতে হবে। এরপরই আমি তার জামার কলার ধরে টেনে নিয়ে কক্ষের তালা খুলিয়েছি।
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনি আলম নূর বলেন, সাবেক প্যানেল মেয়র সামসাদ রানু আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের উপর চড়াও হয়ে চড় থাপ্পড় ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। যা অত্যন্ত জঘন্য কাজ হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সামসাদ রানুকে সরকারি কাজে বাধা প্রদান মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সংশ্লিষ্ট মামলায় আজ বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামে জাহানারা বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধা জাহানারা বেগম উপজেলার নাস্তিপুর পুর্বপাড়ার আব্দুল ওয়াহেদের স্ত্রী।
পরিবার সুত্রে জানাযায়, আজ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার নাস্তিপুর পুর্বপাড়ার আব্দুল ওয়াহেদের স্ত্রী জাহানারা বেগম অতিরিক্ত গরমের জন্য প্রতিদিন নিজ বাড়ির ছাদের উপর ঘুমায়। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার রাতেও ঘুমিয়ে ছিল। বৃহস্পতিবার ভোরে নামাজ পড়ার জন্য ছাদ হতে নিচে নামার সময় অসাবধানতা বসত পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার এসআই তাইফুর বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
কক্সবাজারের রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল হুসাইন। জায়গা-জমির বিচার, জিডি থেকে শুরু করে পারিবারিক সালিশ, সবকিছুতেই হস্তক্ষেপ থাকে তার। গ্রেপ্তার বাণিজ্যসহ সবকিছু থেকেই তার ঘুষ নেয়া এখন ওপেন সিক্রেট। যে কোন মামলা নথিভুক্ত করতে গেলেই ভুক্তভোগীকে গুনতে হয় হাজার হাজার টাকা।
এসব বিষয়ে একের পর এক অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ওসির ঘুষ বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন গণ্যমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। সবশেষ চোরাই পথে মায়ানমার থেকে আসা অবৈধ গরু যেন তার ঘুষের বাজার আরও জমজমাট করে তুলেছে। অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ আছে, রামু থানার ওসি এক ডিআইজির আত্মীয় দাবি করে নিজেকে জমিদার মনে করেন, সাধারণ মানুষসহ সেবাপ্রার্থীদের সাথে জমিদারের মতো আচরণ করেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টাকা না পেলে কোন মামলা নথিভুক্ত করেনা রামু থানা পুলিশ। যেকোন জায়গা-জমির বিষয়ে নিজেরাই বিচার বসায় থানার সামনের গোলঘরে। সমঝোতার নামে দু'পক্ষ থেকেই দালালের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
শুধু তাই নয়, নানা কারণে নাগরিকদের থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রয়োজন পড়ে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘চা-পানি’র ব্যবস্থা অর্থাৎ টাকা ছাড়া জিডি করা সম্ভব হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে সাধারণ মানুষ নিতান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শুধু জিডি করতে থানায় যেতে চান না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি হয়ে কক্সবাজার রামু উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন প্রবেশ করে কয়েকশো অবৈধ গরু। এসব অবৈধ গরু বিক্রির বৈধতা দিয়ে ক্রয় রশিদে বিশেষ সীলের মাধ্যমে গরু প্রতি দুই হাজার টাকা করে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়ির বিরুদ্ধে।
কয়েকজন গরু ব্যাবসায়ীর অভিযোগ, রামুর বিভিন্ন বাজার থেকে অবৈধ গরুগুলো ক্রয় করতে ইজরাদার, ইউপি চেয়ারম্যান ও পুলিশকে টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদে সীল নিতে হয়। রশিদে দুই হাজার টাকা দিয়ে পুলিশের বিশেষ সীল নেওয়া না হলে বিভিন্ন সময় গরু আটক করে নিলামে তোলেন রামু থানার ওসি।
যদিও ক্রয় রশিদে বিশেষ সীলের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ রানা ও রামু থানার ওসি মো. আনোয়ারুল হুসাইন।
জানা যায়, বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি হয়ে কক্সবাজার রামুর কয়েকটি বাজারে প্রতিদিন শত শত গরু জড়ো করা হয়। এসব অবৈধ গরু গুলোকে বৈধতা দিয়ে রশিদ, বিশেষ সীল ও টোকেনের মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জনপ্রতিনিধি, ইজারাদার ও রামু থানা পুলিশ। বাজার থেকে গরু ক্রয় করে ইজারাদারের রশিদে পুলিশকে দুই হাজার টাকা দিয়ে বিশেষ সীল না নিলে আটক করা হয় ক্রয়কৃত গরু। এরপর দেওয়া হয় নিলাম। এভাবে টাকার জন্য রামু থানা পুলিশ গরু ব্যাবসায়ীদের জিম্মি করে রেখেছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন একাধিক গরু ব্যাবসায়ী।
আব্দুর রহিম নামের এক গরু ব্যাবসায়ীর দাবী, তিনি প্রতি গর্জনিয়া বাজার থেকে দুই থেকে তিনটি গরু ক্রয় করে বাইরে বিক্রি করেন। গর্জনিয়া বাজার থেকে ক্রয় রশিদের মাধ্যমে প্রতিবারেই পুলিশকে দুই হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদে বিশেষ সীল মেরে গরুগুলো বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় বা বাইরে বিক্রি করা হয়। তবে এইবারে তিনটি গরু নিয়ে যাওয়ার সময় টাকা বাচাতে পুলিশের সীল মারা হয়নি। তাই পুলিশ টাকা না পেয়ে তার গরুগুলো আটক করে রামু থানায় নিয়ে যায়। এবং নিলামে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গর্জনিয়া বাজারের দেলোয়ার হোসেন নামের এক গরু ব্যাবসায়ী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে গর্জনিয়া বাজার থেকে গরু কিনে বাইরে বিক্রি করেন। সর্বশেষ তিনটি গরু কিনে বাজারের ইজারাদারের কাছ থেকে ক্রয় রশিদ সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িকে ২ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় রশিদের উপর একটি বিশেষ সীল নিতে হয়। সেই সীল না নেওয়ায় তার তিনটি গরু আটকিয়ে রামু থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে তাদের কষ্টের টাকায় ক্রয় করা গরু গুলোর ক্রয় রশিদ থাকলেও পুলিশ নিলামে তুলছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রামু গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মাসুদ রানা অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে মোবাইলে কথা বলতে রাজি হননি। এবং বক্তব্য নিতে হলে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা করতে হবে বলে জানান প্রতিবেদককে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আনোয়ারুল হোসাইন জানান, অবৈধ গরু পাচারের সংবাদে বিভিন্ন সময় অবৈধ গরু আটক করা হয়। সর্বশেষ ৭টি গরু আটক করে এবং সেগুলো যথাযথ নিয়মে নিলামের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়ির বিশেষ সীলের মাধ্যমে টাকা না পাওয়ায় গরু আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, চোরাকারবারিরা সবসময় পুলিশের বিরুদ্ধে বলবে এটাই স্বাভিক।
পিএম
কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি করে নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করে আনার’ বক্তব্য দেওয়া উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) নির্বাচন কমিশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আশাদুল হকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কক্সবাজার সদরে শহরের আটটি ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কায়সারুল হক জুয়েলের জয় নিশ্চিত করেছিলেন বলে দাবি করেছেন উখিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতিপ্রার্থী ও হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৬ জুন) রাতে কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুব রহমানের সমর্থনে আয়োজিত এক সভায় যুবলীগ নেতা ইমরুল এমন মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুরো জেলায় তোলপাড় শুরু হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর পক্ষে শহরের তারাবনিয়ারছড়ায় এক সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস।
এদিকে ২০১৯ সালের সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফল বাতিল এবং ওই নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি মোতাবেক ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে আটজনকে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান খান।
তারা হলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা, কায়সারুল হক জুয়েল ও ইমরুল কায়েস চৌধুরী।
লিগ্যাল নোটিসে বলা হয়েছে, সদর উপজেলা নির্বাচনে ভোট ডাকাতির বক্তব্যের মাধ্যমে ইমরুল কায়েস নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংগঠিত অনিয়ম, নির্বাচনী ফলাফল পরিবর্তন সম্পর্কে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট বর্তমান বিতর্ক এবং নির্বাচনী অনিয়মের বিষয়ে এটি একটি তথ্যভিত্তিক স্বীকারোক্তি।
তিনি এ বক্তব্যের মাধ্যমে ওই নির্বাচনে কারচুপির বিষয়টি তুলে ধরেছেন এবং তার বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট ওই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িত সবাই অনিয়ম ও ভোট ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যা নির্বাচনী বিধিমালার পরিষ্কার লঙ্ঘন। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কায়সারুল হক জুয়েলকে বিজয়ী করার জন্য ইমরুল কায়েস নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোট ডাকাতির বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন এবং তা গণমাধ্যমেও এসেছে। ওই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
প্রসঙ্গত, কায়সারুল হক জুয়েল বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা একে এম মোজ্জাম্মেল হকের কনিষ্ঠ ছেলে। তার বড় ভাই সদস্য বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মাসেদুল হক রাশেদ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে কক্সবাজার পৌরসভায় মেয়র পদ নির্বাচন করছেন।
এদিকে যুবলীগ নেতা ইমরুলের এ বক্তব্যের ফলে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কারণ কায়সারুল হক জুয়েল ২০১৯ সালে প্রথম ইভিএম পদ্ধতির ভোটে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ইমরুল কায়েস চৌধুরী কর্তৃক সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রক্রিয়া দেখাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সিনিয়র জুনিয়র অসংখ্য নেতা কর্মীরাও।
উখিয়া উপজেলা যুবলীগ নেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী ভোট ডাকাতি করে জয় নিশ্চিত করার বিষয়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল ও পৌর মেয়র পদের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসেদুল হক রাশেদ ইমরুল কায়েসের বক্তব্যকে পাগলের প্রলাপ বলে দাবি করেছেন।
তবে, যুবলীগ নেতা ইমরুলের বক্তব্যের দায় নিবে না জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ। জেলা সভাপতি এড. ফরিদুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, কারো উদ্ভট ও ব্যক্তিগত বক্তব্যের দায় আওয়ামী লীগ নিবে না। বর্তমান সরকারের আমলে সবসময় নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছেন বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।
ভোট ডাকাতির বিষয়ে যুবলীগ নেতার বক্তব্য ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস. এম. শাহাদাত হোসেন।

দ্রুত প্রত্যাবাসনসহ চার দফা দাবি জানিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলোতে সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) সকালে রোহিঙ্গা শিবিরের বিভিন্ন স্থানে আলাদাভাবে ‘দ্রুত প্রত্যাবাসন’ ক্যাম্পেইন শেষে একত্রিত হন রোহিঙ্গারা। এসময় রোহিঙ্গারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে নিজ দেশ মিয়ানমারে নিজেদের বাড়িঘরে ফিরে যাওয়া, নাগরিকত্বের স্বীকৃতি, নিরাপত্তা এবং অন্য জাতিগোষ্ঠীর লোকজন যেভাবে অবাধে চলাফেরা করে তেমন স্বাধীনতাসহ চার দাবি তুলে ধরে মোনাজাতে দোয়া চান।
সমাবেশে হাজারো রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করে বলে দাবি রোহিঙ্গা নেতাদের। রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় ও প্রত্যাবাসনের দাবিতে সোচ্চার শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতারা সেখানে বক্তব্য দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশ উপলক্ষে টেকনাফের লেদা, জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকাল থেকে লোকজন জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে পুরুষদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী, শিশুরাও যোগ দেয়। এছাড়া কুতুপালং, বালুখালী, লম্বাশিয়ায়ও এ ধরনের সমাবেশ হয়েছে। সেখানে পোস্টার, প্ল্যাকার্ডে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তোলেন।
সাধারণ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী সৈয়দউল্লাহ বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের দেশ, অনতিবিলম্বে আমাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে। বাংলাদেশের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই, আন্তর্জাতিক কমিউনিটিকে প্রত্যাবাসন সফল করতে দেশটির পাশে থাকতে হবে।’
প্রত্যাবাসনে বাধা তৈরি করতে বিভিন্ন মহল থেকে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী মহল চায় না আমরা দেশে ফিরে যাই, আমরা তাদের অনুরোধ করছি দয়া করে প্রত্যাবাসনে বাধা দেবেন না।’
এই সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল বলে জানিয়ে টেকনাফের ১৬-এপিবিএনের পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা বলেন, ‘তিন ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসন দাবি জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে। সেটি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।’
দ্রুত স্বদেশে (মিয়ানমারে) ফিরে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহযোগিতা দাবি করে টেকনাফের জাদিমুড়া শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা বজলুল রহমান বলেন, ‘আমরা আর বাংলাদেশে থাকতে চাই না। দ্রুত নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। আমরা নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতাসহ নিজ গ্রামে ভিটেমাটি ফেরত দিলে এই মুহূর্তে চলে যাব মিয়ানমারে।’
জানতে চাইলে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) খালিদ হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গারা দ্রুত প্রত্যাবাসন দাবি শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করেছে। সেখানে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া দাবি জানিয়ে রোহিঙ্গারা কয়েকটি দাবি তোলেন।’
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আমরা আর শরণার্থী জীবন চাই না। সামনের দিনগুলোতে আমরাও আমাদের জন্মভূমি আরাকানে জীবনযাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা। গত দুই মাস ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পাইলট প্রকল্পের আওতায় প্রত্যাবাসন শুরুর আলোচনা চলছে।
প্রকল্পের আওতায় মিয়ানমারে যেতে রাজি হওয়া ২৩ রোহিঙ্গার খাদ্যসহায়তা গত সোমবার (০৫ জুন) ইউএনএইচসিআর বন্ধ করলেও পরদিন মঙ্গলবার থেকে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে জানিয়ে পুনরায় খাদ্য দেওয়া শুরু করে সংস্থাটি।
ধারণা করা হচ্ছে, সব ঠিকমতো থাকলে চলতি মাসেই ১১৭৬ জন রোহিঙ্গা দিয়ে শুরু হতে পারে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া।
এআই

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার সতর্কবার্তা সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত থাকার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ে হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
648165513d99e.webp)
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্ণ স্থান পেকুয়া ক্রীড়া কমপ্লেক্স। দীর্ঘ ৩ বছর ধরে এলাকার ক্রীড়ামোদী লোকজন ও এলাকাবাসী খেলাধূলা ও বিনোদন থেকে বঞ্চিত রয়েছে। প্রায় ৪ একর ভূমিতে নির্মিত এই ক্রীড়া কমপ্লেক্স সারা বছর ক্রিকেট, ফুটবলসহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান। ইনডোরে রয়েছে বাস্কেটবল ও ব্যাটমিন্টন কোর্ট। খেলোয়াড়দের শরীর চর্চার জন্য রয়েছে নানাবিধ সরঞ্জাম। যা পেকুয়ার খেলোয়াড়দের শরীর চর্চা ও অনুশীলনের উপযুক্ত স্থান।
সরেজমিনে দেখা যায়, পেকুয়া উপজেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের সবুজ ঘাসের মাঠের উপর মজুদ করা হয়েছে ইট বালুর বিশাল বিশাল স্তুপ। সমগ্র মাঠে ইট ভাঙ্গছে শতাধিক শ্রমিক। ফুটবল গ্রউন্ডের দুই গোলবারের উপড়ে ফেলা হয়েছে। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে বড় বড় ক্রেনে ইটপাথর ও বালু স্থানান্তর করা হয়েছে। মাঠে রাখা হয়েছে সড়ক সংস্কার কাজে ব্যবহৃত ২০-৩০টি বড় ট্রাক। মাঠের সীমানা প্রাচীর ঘেষে নির্মাণ করা হচ্ছে শ্রমিক বসবাসের শেড। ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ইন্ডোরে বাস্কেটবল কোর্টের রিম গুটিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে এক পাশে। সেখানে বসবাস করছে শ্রমিকরা। খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে ব্যবহৃত হচ্ছে কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বাসস্থান ও কার্যালয় হিসেবে। কৌতূহলী শ্রমিকরা ব্যবহার করছে জিমনেশিয়ামের নানা উপকরণ। সঠিক পন্থায় ব্যবহার না করা নষ্ট হচ্ছে এসব মূল্যবান যন্ত্রপাতি।
স্থানীয় ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের অভিযোগ, সারাবছর যেখানে খেলাধুলার একটা পরিবেশ থাকে বিগত ৩ বছর যাবৎ তা দখলে চলে গেছে মেসার্স মো. জামিল ইকবাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ক্রীড়া কমপ্লেক্স ভবন ও মাঠে সড়ক সংস্কারের মালামাল মজুদ করার ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পেকুয়া ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার সকল খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত বিভিন্ন ক্রিকেট, ফুটবলসহ ক্রীড়া একাডেমির কার্যক্রম। কিছু ক্রীড়া একাডেমি তাদের অনুশীলন কার্যক্রম পেকুয়া কলেজের মাঠে স্থানান্তরিত করলেও বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের অনুশীলন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বরইতলী-মগনামা সড়কের সংস্কার কাজে সরবরাহের জন্য নানা কাঁচামালের স্তুপ করা হয়েছে ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে। এতে পেকুয়ার সকল খেলোয়াড় তাঁদের অনুশীলন ও শরীর চর্চার একমাত্র ভেন্যুটি হারিয়েছে। যা খেলোয়াড়দের শরীর চর্চা ও স্কিল ঠিক রাখার অন্তরায়।
জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা ফুটবল একাডেমির এক কর্মকর্তা বলেন, পেকুয়ার খেলোয়াড়দের অনুশীলন ও শরীর চর্চার জন্য উপজেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স খুবই উপযোগী একটা স্থান। এতে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে সরকারিভাবে সকল সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান। বর্তমানে তা বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে খেলোয়াড়দের অনুশীলন বন্ধ হয়ে গেছে। যা খেলোয়াড় উঠে আসার ক্ষেত্রে অন্তরায়। পাশাপাশি নিয়মিত খেলার মধ্যে যেসকল খেলোয়াড় রয়েছে তাঁদের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটা বড় বাধা।
পেকুয়া ক্রিকেট একাডেমির সদস্য মো. মুস্তাকিম বলেন, ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠ ইট, বালুতে ঢাকা পড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলার খেলোয়াড়দের ক্রিকেট খেলা চালিয়ে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠটি ছাড়া উপজেলায় ক্রিকেট খেলা অনুশীলনের কোন মাঠ নেই। আমরা চাইবো সড়ক সংস্কারের কাঁচামাল গুলো যেন শীঘ্রই অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। আগের মতো সে মাঠে আমরা ক্রিকেট অনুশীলন করতে পারি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামিল ইকবাল এর প্রজেক্ট ম্যানেজার আশরাফুল আলম বলেন, স্থানীয় সাংসদ জাফর আলমের অনুমতি নিয়ে ক্রীড়া কমপ্লেক্সের ভবন ও মাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
খেলার মাঠ দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, আমার পক্ষ থেকে ক্রীড়া কমপ্লেক্স ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে পূর্বের দায়িত্বরত ইউএনও অনুমতি দিয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
পিএম
শরীয়তপুরের দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই ব্যবসায়ীকে থানায় আটকে রেখে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৬ জুন) ভুক্তভোগীর বড় ভাই পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (০৯ জুন) এ ঘটনায় পদ্মা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া নড়িয়া সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির স্বপদে বহাল রয়েছেন।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানায়, গত ২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদার কান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় ২৯ মে সাদ্দাম, বকুল ও সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে নেন। জামিনে আসার পর ৩০ মে রাতে তারা এ মামলার আরেক আসামি আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদারের বাসায় যান। ওইদিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীসহ ১০/১২ পুলিশ সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়, এ সময় সাদ্দাম তাদের জামিনের কাগজ দেখালে তা ছিঁড়ে ফেলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। পরে পুলিশ সাদ্দাম ও বকুলকে লাথি, কিল-ঘুষি, চড়থাপ্পড়সহ পুলিশের লাঠি (ডান্ডা) দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়। সাদ্দাম পানি পান করতে চাইলে ছোট ভাই বকুলকে দাঁড় করিয়ে মুখে প্রস্রাব করতে বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির। পরে সাদ্দামের শরীরে প্রস্রাব করেন বকুল। এমন নির্যাতন চলে রাত ১টা থেকে পরদিন ৩১ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, কিছুক্ষণ পর ওই চারজনকে গামছা ও কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে গাড়িতে করে জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর নিচে আনা হয়। পরে সাদ্দাম ও বকুল এবং সাইদুল ও আনোয়ারকে পৃথক দুই স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি সাদ্দাম-বকুলকে বলেন, সাইদুল-আনোয়ারকে ক্রসফায়ার দিয়ে দিয়েছি। তোরা ৭২ লাখ টাকা দিবি, তা না হলে তোদেরও ক্রসফায়ার দিয়ে দেওয়া হবে। এভাবে সারাদিন রেখে রাতে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় এনে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে বেত ও কাঠ লাঠি দিয়ে আবার বেধড়ক মারা হয় সাদ্দাম ও বকুলকে। সারারাত চলে এমন বর্বর নির্যাতন। এরপর টাকার জন্য বকুলের স্ত্রী সানজিদা, দুই বছরের সন্তান, বাবা রশিদ চোকদার, মা রমেলা ও চাচাতো ভাই আবু জাফর ঠান্ডুকে থানায় এনে সারারাত আটকে রাখা হয় এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ঘটনার পরে আত্মীয়-স্বজনরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির কাছে পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা দিলে নির্যাতন থেকে মুক্তি মেলে সাদ্দাম ও বকুলের। এরপর ১ জুন বিকেলে সাদ্দাম ও বকুলসহ চারজনকে শরীয়তপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। পরে তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিমান্ড না মঞ্জুর করেন এবং ৬ জুন সাদ্দাম ও বকুলসহ চারজনই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়।
ছিনতাই মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২১ মে দুপুরে পদ্মা সেতু জাজিরা প্রান্তের নাওডোবা এলাকার বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের সোহাগ পরিবহন থেকে জাজিরা উপজেলার বাসিন্দা শাহীন আলম শেখ (২০) ও সেকেন্দার মাদবরকে (৫১) জোরপূর্বক নামিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা বিদেশি ডলার, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিয়ে যায় স্থানীয় সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ ১০/১১ জন। যার আনুমানিক মূল্য ২১ লাখ ১৫ হাজার ২৫০ টাকা ধরা হয়েছে। এ ঘটনায় ২৩ মে শাহীন আলম শেখ বাদী হয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় সাদ্দাম, বকুলসহ নয়জনের নাম এবং অজ্ঞাতনামা পাঁচ/ছয়জনকে আসামি করে একটি ছিনতাই মামলা করেন।
তবে শাহীন আলম শেখ ও সাদ্দাম চোকদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শত্রুতা রয়েছে বলে জানান ভুক্তভুগীরা।
আসামী সাদ্দাম চোকদার ও বকুল চোকদার বলেন, আমাদের আটজনের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। সেই মামলায় আমরা তিনজন হাইকোর্ট থেকে জামিনে আসি। তবুও আমাদের থানায় ও একটি বাড়িতে আটকে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান। আমাদের বেধড়ক মারধর করেন তারা। শুধু তাই নয় প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলেন তারা। তখন আমরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলাম। তবু মায়া হয়নি তাদের। ৩০ ঘণ্টা নির্যাতন করলেও কোন খাবার বা ওষুধ দেয়নি তারা। পরে বড় ভাই ঠান্ডু চোকদারের কাছে দুটি ঘর বিক্রি করতে বাধ্য হই। ঠান্ডু চোকদার তার চাচা রশিদ চোকদারের মাধ্যমে পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসিকে।
ঠান্ডু চোকদার বলেন, ছিনতাই মামলার ঘটনায় ৩১ মে বকুলদের বাড়িতে দুই পক্ষ সালিসে বসে। দরবারে সিদ্ধান্ত হয় ২১ লাখ টাকা বাদীকে দিয়ে দেবে বিবাদীরা। কিন্তু এটা মেনে নেয়নি বাদীপক্ষ। সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। আমার অপরাধ আমি বলেছিলাম মামলায় উল্লেখিত ২১ লাখ টাকা দেওয়া হবে বাদীকে। কিন্তু তাদের দাবি ছিল ৭২ লাখ টাকা। দরবার শেষে যখন বাড়ি যাই, তখন পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি তদন্ত সরুজ, এসআই ফিরোজ আল মামুনসহ সাত-আটজন আমাকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। পরে কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে ওসির রুমে নিয়ে রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমাকে মারধর করে। আমি চিৎকার করলে চোখ খুলে দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নড়িয়া সার্কেল রাসেল মনির বলেন, তুই ৭২ লাখ টাকা দিয়ে সাদ্দাম ও বকুলকে ছাড়িয়ে নিবি। তখন রাজি হলে আমাকে ছেড়ে দেয়। পরে ছোট ভাই সাদ্দাম ও বকুলকে বাঁচাতে আমার চাচা রশিদ চোকদারের মাধ্যমে পাঁচটি চেকে ৭২ লাখ টাকার চেক দিই ওসি মোস্তাফিজুর রহমানকে।
এ ঘটনায় পদ্মা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, ছিনতাই মামলার বাদীপক্ষ তাদের মারধর করেছে। এ বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। চেক বিষয়েও আমার জানা নেই। এসব অভিযোগ মিথ্যা।
এ ব্যাপারে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল হক বলেন, গত ২৩ মে পদ্মা দক্ষিণ থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়। এই মামলার প্রেক্ষিতে পরবর্তী কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট তিন কার্যদিবসে জমা দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওসিকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে তাদের সম্পৃক্ততা পেলে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পিএম
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় বিএনপির অন্তত ১ হাজার নেতাকর্মী আ'লীগে যোগদান করেছেন।
শুক্রবার (০৯ জুন) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাড়িতে এক যোগদান সভার আয়োজন করা হয়।
সেখানে ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. জামাল হোসেন মিয়ার হাতে ফুল দিয়ে আ'লীগে যোগদান করেন।
নগরকান্দা উপজেলার ৮ নং ডাঙ্গী ইউনিয়নের ইউনুস ফকির ও এরোন মাতুব্বরের নেতৃত্বে অন্তত এক হাজার নেতাকর্মী জামাল মিয়ার হাতে ফুল দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করে।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও নগরকান্দা উপজেলা আ'লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামাল হোসেন মিয়া বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশী-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র অব্যহত রয়েছে। সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আবারো ক্ষমতায় আসবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের জনগণের উদ্দেশ্য বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও বিএনপির জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
জামাল হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশ যদি একটি চিঠির খাম হয়, বঙ্গবন্ধু তাঁর ঠিকানা। তাইতো বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ করি। নির্যাতিত নিপীড়িত অসহায় মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাইতো সে যদি আমাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেন আমি বিশ্বাস করি ফরিদপুর-২ আসনের জনগণ আমাকে বিপুল ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করে এই আসন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিবো ইনশাআল্লাহ।
জামাল হোসেন বলেন, "আমি যদি সরকারের অংশীদার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই তাহলে সন্ত্রাস মুক্ত, মাদক মুক্ত, জঙ্গিবাদমুক্ত শিক্ষিত সমাজ গড়ে তুলবো এবং সারা জীবন আমার এলাকার জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবো ইনশাআল্লাহ।"
নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান মোল্লার সভাপতিত্বে ও তালমা ইউনিয়ন আ'লীগের মো. সিরাজ খলিফার সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- নগরকান্দা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শহীদনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, নগরকান্দা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন মিয়া, তালমা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. তৈয়বুর রহমান, নগরকান্দা উপজেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি রিক্তা আক্তার, উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নাসিমা আক্তার, চরযোশরদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, নগরকান্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলামিন মীর, সাধারণ সম্পাদক কামরান হোসেন প্রমূখ।
পিএম

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় টিউবওয়েল চুরির অপবাদ দিয়ে দুই শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চাপলডাঙ্গা গ্রামে।
এ ঘটনায় নির্যাতনের একটি ভিডিও গত বুধবার দুপুর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। শিশু নির্যাতনের দায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের ভাই নজরুল শেখ নামে একজনকে পুলিশ আটক করে বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দুপুরে ফরিদপুর আদালতে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল শেখের বড় ভাই নজরুল শেখের একটি টিউবয়েল সম্প্রতি চুরি হয়। এ ঘটনার জের ধরে ইউপি সদস্য মো. নাজমুল শেখ (৩৯), তার ভাই নজরুল শেখ (৪৩) ও একই গ্রামের হাসান খন্দকার (৩৫) নামে তিন ব্যক্তি স্যালোমেশিনের টিউবওয়েল চুরির অপবাদে সুমন শেখ (৯) এবং সৌরভ আলী (১০) নামে দুইটি শিশুকে পায়ে শিকল বেঁধে গত মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে স্থানীয় নাজমুল মেম্বারের উত্যপ্ত ধানের চাতালে কাঠের বাটাম ও বাঁশের লাঠি দিয়ে শুইয়ে বেধড়ক পিটানোর ঘটনা ঘটে। সুমন শেখ ওই ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামের খাঁ পাড়া এলাকার দরিদ্র রিক্সাচালক মিন্টু শেখের ছেলে। সুমনের বাবা মিন্টু শেখ ঢাকায় রিক্সা চালায়। নির্যাতিত সুমন গ্রামের বাড়িতেই দাদা-দাদির সাথে বসবাস করে।
অপর শিশু সৌরভ আলী একই ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের কৃষক আলীবর শেখের ছেলে। তবে নির্যাতনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না ভুক্তভোগী ওই পরিবার। এমনকি এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিতে ভয় পাচ্ছে বলে জানা গেছে।
নির্যাতিত সুমন শেখের চাচা মিরাজ শেখ জানান, নাজমুল মেম্বারের ভাইয়ের স্যালোমেশিনের টিউবওয়েল চুরির ঘটনায় রাস্তা থেকে সুমন ও সৌরভকে ধরে নিয়ে দুপুরে তীব্র রোদে পায়ে শেকল বেঁধে গরম চাতালের মেঝেতে খালি গায়ে শুইয়ে রেখে নির্যাতন করেছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ভয়ে চুরির কথা স্বীকার করে ওই দুই শিশু। এ ঘটনার খবর পেয়ে আমার বাবা সিরাজ সেখ ও সৌরভের বাবা আলিবর শেখ গিয়ে শিশু দুটিকে নির্যাতনের কবল থেকে উদ্ধার করে। মেম্বারের ভাই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কিছু করা যাবে না। তাই অভিযোগ দেয়নি!
ভুক্তভোগী সুমন শেখ জানায়, প্রতিবেশী একজনের সাথে জাম বিক্রির জন্য বোয়ালমারী বাজারে যাচ্ছিলাম। এসময় নাজমুল মেম্বারের ভাই নজরুল ভ্যান থেকে আমাকে নামিয়ে তাদের বাড়ির ধানের চাতালে নিয়ে পায়ে শিকল বেঁধে শোয়াইয়া রাখে। এ সময় আমার পায়ের তলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন চালায় তারা। এক পর্যায়ে আমাদের দুইজনের গলায় ফাড়া বাঁশ দিয়ে চেপে ধরে রাখে। ভয়ে আমরা দুইজনই চুরির কথা স্বীকার করতে বাধ্য হই।
নির্যাতনকারী ইউপি সদস্য মো. নাজমুল শেখের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অপর নির্যাতনকারী চাপলডাঙ্গা গ্রামের আইয়ুব খন্দকারের ছেলে হাসান খন্দকারের বাড়িতে গিয়ে না পাওয়ায় তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিকদের কথা শুনে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকেলে এ ব্যাপারে গুনবহা ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম জানান, কিছুদিন ধরেই ওই এলাকার কিছু বাড়ি ও মাঠ থেকে টিউবয়েল হারিয়ে যাচ্ছে। গত দুইদিন আগে নাজমুল মেম্বরের ভাইয়ের একটি টিউবয়েল চুরি হয়। শুনেছি ওই ছেলে দুটিই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের কাছ থেকে টিউবয়েলের হাতল উদ্ধার করা হয়। মেম্বরের ভাই শিশু দুটিকে ধরে এনেছিলো। পরবর্তীতে শিশুর অবিভাবকরা শাসন করে নিয়ে তাদের নিয়ে গেছে।
জানতে চাইলে বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, 'এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছিলো। কিন্তু কারো কোন অভিযোগ না থাকায় মামলা হয়নি। শিশুদের অভিভাবকদের কোন অভিযোগ না থাকায় ধর্তব্য অপরাধ সংঘঠনের দায়ে আটককৃত ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পিএম

নির্বাচনে কেয়ারটেকার সরকারের কোনো সুযোগ নেই, সংবিধানে নেই আর বিশ্বের কোথাও নেই। নির্বাচন যথারিতি যথাসময়ে সংবিধান অনুসারেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এমপি।
শুক্রবার সকালে মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক পন্থায় যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশেও একই পন্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এবং নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন।
আওয়ামী লীগের এই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি ভেবেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি আওয়ামী লীগের উপর খুব চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু সেই চাপ যে বিএনপির উপরেও পড়বে তা তারা ভাবেবি। তাদের আশায় এখন গুড়ে বালি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. মারুফুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র মো. খালিদ হোসেন ইয়াদ, মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( আইসিটি) শামিমা সরমিন, মাদারীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জামাল মিয়া, মাদারীপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ তাহের আলীসহ জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
পিএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন আহ্বায়ক অপু শেখের নেতৃত্বে শোডাউন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিকেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এসময় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক শিশির আহমেদ বিপ্লব, যুগ্ম-আহ্বায়ক সজিব হোসেন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাইস, সোহেল, জাহাঙ্গীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম শিপলু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক শহিদুর রহমান লাবু, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক মাসুম রানা মাসুম, উপজেলা আ.লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মাহফুজুর রহমান কনক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এরআগে বুধবার (৭ জুন) বিকেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক যথাক্রমে শরিফুল ইসলাম শরিফ, খন্দকার রাসেল, মোবারক হোসেন ও একাব্বর হোসেনের নেতৃত্বে তারিফ আহমেদ সোহাগের স্থলে নতুন করে ২নং যুগ্ম আহ্বায়ক অপু শেখকে আহ্বায়ক মনোনীত করার বিষয়টি অগঠনতান্ত্রিক দাবি করে এর বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
জানা যায়, গত ৩০ মে মির্জাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্ধিত সভাসহ গত তিন মাসের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ না থাকায় আহ্বায়ক তারিফ আহম্মেদ সোহাগকে তার পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ৭ যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ১১ সদস্য স্বাক্ষরিত লিখিত কপি জেলা ও কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এরপর গত ৫ জুন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নির্দেশক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ শ্যামল গোস্বামী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অপু শেখকে আহ্বায়ক অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৯ অক্টোবর ও ২৬ অক্টোবর দুই দফায় তারিফ আহম্মেদ সোহাগকে আহ্বায়ক ও ৭ জনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান সুখন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। যাইহোক সব সমস্যার সুন্দর সমাধানের জন্য এ মাসের ২০ তারিখ আমরা মির্জাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে কেরোসিন ঢেলে আগুনে ঝলসে দেয়া গৃহবধু হালিমা আক্তার মীম মারা গেছেন।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মীমের মামা ওমর ফারুক হাওলাদার, স্বামী প্রিন্সের ফুপা লাল মিয়া হাওলাদার এবং দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বশার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার নূতন বাজার সংলগ্ন শাহজাহান মুন্সির (দারোগা) ভাড়াটে বাসায় মীমের হাত, পা, মুখ বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায় বোরখা পরিহিত দুই দুর্বৃত্ত।
আগুনে ওই গৃহবধুর হাত বুক, পেটসহ শরীরের আশি শতাংশ দগ্ধ হয়। ঝলসে যায় তার শিশু সন্তান ওয়ালিফ হোসেন জিসানের হাত মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান। স্থানীয়রা তার ডাক চিৎকারে দরজা খুলে তাদের উদ্ধার করেন। চিকিৎসার জন্য তাদের প্রথমে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইনিস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তি হতে না পেরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন তারা। শুক্রবার বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মীম।
মীম উপজেলার দুমকী সাতানি গ্রামের জামাল হোসেন প্রিন্সের স্ত্রী। চলতি মাসের ২ তারিখ থেকে তারা শাহজাহান দারোগার ভাড়াটে বাসায় বসবাস করছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই যে যার বাসায় বিশ্রাম করছিলেন। হঠাৎ প্রতিবেশী নতুন ভাড়াটে বাসায় চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে বাইরে থেকে দরজার ছিটকানী বন্ধ দেখতে পান। ভেতরে ঢুকে অগ্নিদগ্ধ মিমকে হাত, পা, মুখ বাঁধা ও জিসানকে আগুনে ঝলসানো অবস্থায় উদ্ধার করে তারা পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠান।
দুমকি অফিসার ইনচার্জ আবুল বশার জানান, মিমের মামা ওমর ফারুক বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে শুক্রবার দুপুরে মিমের শাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাকে আদালতে সোপার্দ করা হবে। তিনি আরো বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে, ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হবে।
পিএম
পটুয়াখালীর রাংগাবালীর তক্তাবুনিয়া বাজারে সরকারের মুল্যবান খাস খতিয়ানভূক্ত জমি দখল করে তোলা হচ্ছে দোকানঘর। আর এ জমি দখলে উপড়ে ফেলা হয়েছে জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড। ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে মাত্র ১০ গজ দূরে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় এসব দোকানঘর তোলা হচ্ছে।
সরেজমিনে (৯মে শুক্রবার) দেখা যায়, ৫-৭ জন কাঠমিস্ত্রি কাজে লাগিয়ে দ্রুত ঘর তুলছেন বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের তক্তাবুনিয়া বাজারের বাবলু হাওলাদারের ছেলে বিপ্লব হাওলাদার। এরই পাশে ঘর তোলার জন্য কাঠের সীমানা বাঊন্ডারী দিয়েছেন শুক্কুর আলী শিকদার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, ২০মে জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড তুলে ঘর তোলা শুরু করে বিপ্লব হাওলাদার। স্থানীয় দুই প্রভাবশালীর সহায়তায় এ ঘর তুলছে বিপ্লব। গণমাধ্যমকর্মীদের বাঁধার মুখে এদিন চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার কাজ বন্ধ করে দেন। এবং উত্তোলন করা ঘর ভেংগে ফেলা হবে বলে তাদের আস্বস্তও করেন। কিন্তু অর্ধেক উত্তোলিত সে ঘর অপসারনে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়নি চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
এবিষয়ে জানতে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার তারেককে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাংগাবালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সালেক মুহিদ ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান ঘর উত্তোলনের ছবিসহ বিস্তারিত ডকুমেন্টস তার হোয়াটআপে পাঠাতে বলে বলেন, ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
পিএম

দিন দিন বাড়ছে আত্মহত্যার ঘটনা। বিশেষ করে পরিবার, প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার সঙ্গে অভিমান ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে কম বয়সী তরুণ-তরুণীরা বেশি আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকছে।
বরগুনায় গত এক বছরে ১২৪ জন আত্মহত্যা করেছেন এদের মধ্যে প্রায় ৬২% নারী। তাঁদের মধ্য ৫৮ জনই কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বরগুনা সদর হাসপাতালের গত এক বছরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বরগুনা সদর হাসপাতালের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরগুনায় মোট ১৪৯টি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২৪ জনের রিপোর্ট এসেছে আত্মহত্যা। এর মধ্যে ৭৬ জনই নারী, বাকি ৪৮ জন পুরুষ। নারী ৭৬ জন এর মধ্যে ৪২ জনই কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে এবং বাকি ২৪ জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এসব নারীর বয়স ১৫ থেকে ৩২ বছর। আত্মহত্যাকারী ৪৮ জন পুরুষদের মধ্যে ৩২ জন গলায় ফাঁস এবং ১৬ জন কীটনাশক (গ্যাস ট্যাবলেট) খেয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।
এদিকে হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বরগুনায় মোট ১৯টি অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টিই আত্মহত্যা। বাকি ছয়জন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
জেলার সচেতন নাগরিকেরা মনে করছেন, আত্মহত্যা রোধে প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাব রয়েছে। পাশাপাশি কীটনাশকের সহজলভ্যতার কারণেও আত্মহত্যা প্রবণতা বেড়েছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন জাগো নারীর নির্বাহী পরিচালক হোসনেয়ারা হাসি বলেন, ‘উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। এ বিষয়ে এখনই সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া জরুরি। গত কয়েক বছরে আমরা আত্মহত্যার যে প্রবণতা দেখছি, তা রীতিমতো ভয়াবহ ও শঙ্কাজনক পর্যায়ে।’
সার্বিক বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, প্রতিটি আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়। আমরা তদন্ত করে আদালতের কাছে প্রতিবেদন দেই। আমরা তদন্তে দেখেছি, বেশির ভাগ আত্মহত্যাই পারিবারিক কলহের জের, ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন, হতাশা, প্রতারণা ও আর্থসামাজিক কারণে হয়ে থাকে।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, বরগুনায় আত্মহত্যার হার বেড়েছে। এখানে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১০টিরও বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। আত্মহত্যা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধও সম্মিলিত সামাজিকভাবে করতে হবে। আমি বলব এটা প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।
এআই

বরগুনা তালতলীতে বাড়ির পাশে আঙিনায় মরিচ গাছে পানি দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নাসির উদ্দিন নয়ন (২৩) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (০৭ জুন) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের নিদ্রাচরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নয়ন ওই এলাকার কাশেম হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির আঙিনায় মরিচ গাছে পানি দেওয়ার জন্য মটার চালু করতে গিয়ে ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। পরে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
তালতলী থানা ওসি সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যুর খবরটি পেয়েছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআই

যুগ যুগ ধরে ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে আসছে আবহাওয়া। কিন্তু বিগত কিছু দিন ধরে প্রকৃতির বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। জৈষ্ঠ্যের শেষ প্রান্তে কিছুদিন পরে আষাঢ়ের শুরু। অথচ আষাঢ় মাসের পূর্বাভাসে আবহাওয়ার নেই কোন পরিবর্তন।
উপকূলীয় অঞ্চল বরগুনার নেই কোন বৃষ্টি, নেই কোন বাতাস, খর তাপে মাঠ ঘাট শুকিয়ে গেছে, প্রচণ্ড গরম, কাঠফাটা রোদ অব্যাহত তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জনজীবন। এই গরম আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ও বাজার ঘাট যেন জনশূন্য হয়ে পড়েছে। তবে তীব্র গরমে অসংখ্য খেটে-খাওয়া মানুষগুলোর যেন আরও বেশি অসহনীয় অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
বুধবার (০৭ জুন) জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় শহরে গরমের তাপমাত্রা ও ধুলাবালির কারণে শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের কাজকর্মে দেখা দিয়েছে অনীহা। তবুও বেঁচে থাকার এই জীবন যুদ্ধে ৩৮-৪০ ডিগ্রি° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রচণ্ড গরমেও মাথার ঘাম ফেলে জীবিকার তাগিদে তার কাজ যাচ্ছে। এই গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তাদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে।
বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে গরম থেকে বাঁচতে এবং নিজেকে প্রশান্তি দিতে গোসল করার জন্য কিশোর থেকে বৃদ্ধ বিড় জমাচ্ছে নদীর পাড়ে। তারা বলেন প্রচন্ড গরমে বাড়ির পুকুরের পানিও গরম হয়ে গেছে তাই একটু ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে এসেছি ।
রিকশা চালক সেন্টু মিয়া বলেন, সকাল থেকে রিকশা চালাচ্ছি ,গরমে হাঁপিয়ে যাচ্ছি তবুও কিছু করার নেই কারন সংসারের বউ, ছেলে-মেয়ে তাকিয়ে আছে কখন আমি বাজার নিয়ে যাব, তারপর রান্না করবে।
শরবত বিক্রেতা নয়ন খান বলেন, প্রতিদিনই আমার বেচাকিনা ভালো হয়। তবে এতো গরম কোথাও দাঁড়ানোর অবস্থা নেই। সব জায়গাতেই গরম আর গরম।
সচেতন মহলের অনেকেই জানান, দিনভর প্রচণ্ড রোদ ও গরমে শ্রমজীবী মানুষের সাথে অনেক মানুষ সহনীয় আচরণ করে এবং শ্রমজীবী মানুষদের সময় মতো ন্যায্য বেতন পরিশোধ করাই কাম্য। তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো জন্য প্রচণ্ড গরমে বাধ্য হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। নিশ্চয় এই সকল মানুষদের আমাদের সবার সম্মান করা উচিত।
বরগুনা পৌর শহরের বাসিন্দা সমাজ কর্মী মহিউদ্দিন অপু বলেন, শহরে পানির সংকট দূরীভূত করার জন্য টিউবওয়েলের পানির আশা করা হয় কিন্তু বেশির ভাগ টিউবওয়েলগুলো নষ্ট। যা আছে সেগুলোতে পানি লবণাক্ততা, আর্সেনিক, যা খাওয়া ও ব্যবহারে অযোগ্য। সম্প্রতি সরকার এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থার উদ্যোগে পানির ট্যাংক বেশি বেশি বিতরণ করা উচিত।
বরগুনা পৌর মেয়র অ্যাড. কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, প্রচন্ড গরমে সকলের কর্মস্থলই বেহাল অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবহাওয়া বার্তা অনুযায়ী আরো কিছু দিন এরকম তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবুও পেটের টানে সকলেই ছুটে চলছেন কর্মের টানে।
তিনি আরো বলেন, পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্তমানে ১২০০-১৩০০ ফুট লেয়ারে বসানো যে কয়টি টিউবওয়েলে পানি উঠছে। পূর্বে ৭০০-৮০০ ফুট লেয়ারে বসানো হয়েছিল সেগুলোতে পানি উঠছে না, এই টিউবওয়েল গুলো পুরাই অচল হয়ে রয়েছে। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন নলকূপের পানি খেয়ে ডায়রিয়ারসহ বিভিন্ন রোগবালাইতে জরিয়ে পরছেন।
এতে পৌর নাগরিকরা পুরাই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। অতি দ্রুত আমি এগুলো পুনসংস্কারের করে দেওয়ার জন্য বলেছি কর্তৃপক্ষকে।
এআই
শেরপুরের নকলায় বজ্রপাতে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ৯ জুন শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়ণ খোলা দক্ষিণ গ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ও গণপদ্দী ইউনিয়নের বরইতার গ্রামে ঘোড়ামারা নদীর পাড়ে ওই ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে মৃতরা হচ্ছেন নারায়ণ খোলা দক্ষিণ গ্রামের দিনমজুর শফিক মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় কুটেরচর জোনাব আলী দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছাব্বির মিয়া (১৬) এবং বরইতার গ্রামের আতশ আলীর ছেলে কৃষক শিপন মিয়া (৪৫)।
চরঅষ্টধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী জানান, ছাব্বির বৃষ্টির মধ্যে বন্ধুদের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ফুটবল খেলছিল।
ওইসময় অকস্মাৎ বজ্রপাত হলে ছাব্বির গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাব্বিরকে মৃত ঘোষণা করেন।
গণপদ্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুর রহমান আবুল জানান, বৃষ্টির মধ্যে শিপন গরু আনতে ঘোড়ামারা নদীর পাড়ে গেলে অকস্মাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। শিপন বিবাহিত। তাঁর ৩ সন্তান রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন জানান, ছাব্বির ও শিপনের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে নগদ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পিএম
ময়মনসিংহের ভালুকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ ডাকাতকে আটক করেছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার (০৫ জুন) রাতে উপজেলার হবিরবাড়ী লবন কোঠা এলাকায় পুষ্প কানন ফিলিং স্টেশনের সামনে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।ভালুকা মডেল থানার এস.আই আব্দুল করিমের নেতৃত্বে এ.এস.আই রাকিবুল ইসলাম, এ.এস.আই আমিনুল ইসলাম, এ.এস.আই আলমগীর তাদের আটক করেন।
এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি পিকাপ ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকা নূর মোহাম্মদ ছেলে এরশাদুল (৩৫), উপজেলা মল্লিকবাড়ী এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে আতিকুল ইসলাম আতিক (৩৩), জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার গংঙ্গাদাসপুর এলাকার মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে শাজাহান (৩২), জামালপুর সদর উপজেলার তুলশিপুর এলাকার মৃত্যু ছালামের ছেলে উজ্জ্বল মিয়া (৩৪)।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৪ জনকে আটক করা তাদের কাছ থেকে একটি পিকাপ গাড়ী জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এআই
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় লাভনী আক্তার নামে এক অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার (০৫ জুন) সকাল ১২টা দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার ওই এলাকার মো.লাল মিয়া মেয়ে। তিনি রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগ, পরীক্ষার ফি দেওয়ার জন্য স্কুল থেকে চাপ দিচ্ছিল এবং ফি না দেওয়ায় লাবনী আক্তার কে অপমান করেন শিক্ষক।
তবে এঘটনায় পরিবারের সদস্যরা কোন আইনি প্রক্রিয়ায় যাবে না, আইনি প্রক্রিয়ায় না যাওয়ায় মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া দফানের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। নিহত শিক্ষার্থীর লাবনী আক্তারে পরীক্ষার ফি ২ হাজার ২শ টাকা হয়। নিহত শিক্ষার্থীরা পরিবারের দরিদ্র হওয়ায় সঠিক সময়ে দিতে পারেনি ফি। পরীক্ষার ফি কয়েকদিন পরে দিবে বলে দুইটা পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি নিয়ে দুটি পরীক্ষা দেন নিহত শিক্ষার্থী।
গতকাল পরীক্ষা চলার সময় নিহত শিক্ষার্থীকে ফি দেওয়ার জন্য চাপ দেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে লাবনী আক্তার কে অপমান করেন এক শিক্ষক।
সোমবার সকাল ১০টা দিকে নিহত শিক্ষার্থীর বাবার ১১০০ টাকা লাবনীকে দিয়ে পরীক্ষার ফি দিতে বলেন। এসময় লাবনী অভিমানে ১১০০ টাকা না নিয়ে তার বাবাকে টাকা ফিরত দিয়ে বলেন পরীক্ষা দিতে হবে না। এ বলে ওই শিক্ষার্থী তাঁর থাকার ঘরে চলে আসেন। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে ১২টা দিকে মরদেহ উদ্ধার করে।
রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বাছেদ বলেন, পরীক্ষার জন্য কোন চাপ দেওয়া হয়নি। কি জন্য আত্মহত্যা করেছে এই বিষয়টি আমরা জানি না।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত কবির বলেন, বিদ্যালয়ে পরীক্ষার ফি পরিবার দিতে না পারায় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বিদ্যালয় থেকে ফি জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বা অপমান করেছে এ অভিযোগ করেনি আমাদের কাছে নিহতের পরিবার।
ময়না তদন্তে ছাড়া লাশ দাফনের আবেদন করলে সেই প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এআই
647e8a5d1874e.webp)
শেরপুরে সুদের টাকার দাবিতে এক যুবককে রাতভর গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তবে ভুক্তভোগী মো. সাইফুল ইসলামের (২৩) দাবি, তিনি আগেই সুদের টাকা শোধ করেছেন। রোববার রাতে আসল ৬ হাজার টাকাও পরিশোধ করেন।
এদিকে, নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও সোমবার (৫ জুন) সকালে ভাইরাল হলে পুলিশ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক ৷
ভুক্তভোগী সাইফুল শেরপুর সদর উপজেলার চক আন্ধারিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হানিফ উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় পরিবহন শ্রমিক৷
আহত সাইফুল জানান, আমি ঢাকার কমলাপুরের ৬ নম্বর বাসে হেলপারের কাজ করি। বিপদে পরে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ী আব্দুল মালেকের কাছ থেকে সুদে ৬ হাজার টাকা নেই চার মাস আগে। প্রতিমাসে সুদের লাভ পরিশোধ করার পর রোববার সন্ধায় তার আসল ৬ হাজার টাকা ফেরত দেই। কিন্ত মালেক আমার কাছে লাভের অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। অতিরিক্ত টাকা দিতে আমি অস্বীকার করি। পরে স্থানীয় মনির ও জুয়েলের সহায়তায় আমাকে রাতে বাড়ি থেকে তুলে মালেকের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাতভর তারা আমাকে নির্যাতন করে।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, ভিডিও দেখে আমি ফোর্স পাঠিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পিএম

স্থানীয় লোকজনকে বিভ্রান্ত করে অনলাইনে তালিকাভুক্তির কথা বলে প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে টিসিবির কার্ড জমা নেন জনপ্রতিনিধিরা। জমা নেয়া পুরোনো কার্ডের পরিবর্তে বর্তমানে তারা দিচ্ছেন নতুন কার্ড। এক্ষেত্রে যারা টাকা দিচ্ছেন তারা নতুন কার্ড পাচ্ছেন। আর টাকা না দিলে তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীর নাম বাদ দিয়ে কার্ড দেয়া হচ্ছে অন্যজনকে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় সরকারের টিসিবি পণ্য বিক্রয় কর্মসূচীর স্বেচ্ছাচারিতার চিত্র এটি।
টিসিবির তালিকাভুক্তদের নাম বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কতিপয় জনপ্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠছে স্থানীয় লোকজন।
সোমবার (৫ জুন) সকালে গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে মেছিডেঙ্গী এলাকায় টিসিবি পণ্যবাহী একটি ট্রাক আটকে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগী নারী-পুরুষরা। পরে মইলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুরোনো তালিকা অনুযায়ী টিসিবি পণ্য বিক্রয়ের আশ্বাস দিলে ট্রাকটি ছেড়ে দেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মইলাকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টিসিবি কার্ড বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করায় ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ শাহাজাহান মিয়ার প্রতি ক্ষুব্দ হয়ে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় লোকজন। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফোজিয়া নাজনীন জানান, টিসিবি কার্ড জমা নেয়া, তালিকায় নাম পরিবর্তন বা কর্তনের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনপ্রতিনিধিদের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির কোন প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার পর থেকে ইউপি সদস্য মোঃ শাহজাহান মিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের সংযোগ বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় টিসিবি ডিলার ত্বোহা এন্টার প্রাইজের প্রতিনিধি জোবায়ের হোসেন জানান, পুরনো কার্ড জমা নিয়ে তালিকাভুক্তদের বাদ দিয়ে অন্যদের মাঝে নতুন কার্ড বিতরণ করায় স্থানীয় ভুক্তভোগী বিক্ষুব্দ লোকজন টিসিবি পণ্যবাহী ট্রাক আটক করে।
তিনি আরও বলেন, জনপ্রতিনিধিদের হাতে টিসিবি পণ্য বিক্রয় কর্মসূচী তদারকির দায়িত্ব দেয়ায় এ উপজেলায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (০৯ জুন) এই ঘটনায় মেয়ের মা বাদি হয়ে দুজনের নাম উল্লেখ করে দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের করেন। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব দেবীডুবার ডাঙ্গাপাড়া এলাকায়।
অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার শাহা আলমের ছেলে নয়ন ইসলাম ও আব্দুল বারেকের ছেলে কামাল হোসেন।
মেয়েটির মা বলেন, গত রবিবার (৪ জুন) মেয়েটি তার মা এবং দুই ভাইসহ নানা বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বুধবার (০৭ মে) বিকালে শিশুটি বাড়ির পাশে খেলছিল। এই সময় নয়ন ও কামাল মেয়েটিকে খেলার কথা বলে পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে মেয়েটির প্যান্ট খুলে নেয়। পরে কামাল ও নয়ন মেয়েটিকে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ চেষ্টা করে।
মেয়েটি কান্নাকাটি শুরু করলে নয়ন ও কামাল তাকে বিষয়টি বাসায় না জানাতে হুমকি দেয়। এতে মেয়েটি ভয় পেয়ে বাসায় কাউকে ঘটনার দিন কিছু বলেনি। শুক্রবার (০৯ জুন) মেয়েটির যৌনাঙ্গে ব্যাথা শুরু হলে তার মাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। ঘটনার বিবরণ শুনে মেয়েকে নিয়ে তার মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. বনশ্রী রায় মেয়েটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান শেষে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম এমু বলেন, বিষয়টি শুনে আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুক্তভোগীর সাথে দেখা করেছি। শিশুটি আমাকে ঘটনার বিবরণ জানালে তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি পুলিশকে জানাই।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল হোসেন বলেন, আমরা এজাহার পেয়েছি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এআই
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা বাজারে তারা মিয়া ও জহুরুল ইসলাম রকেট এর নিকট কালো কাপড়ের গাটির ভিতরে থাকা পত্রিকা দিয়ে পেচানো দুটি বান্ডিলে পঞ্চাশটি বিভিন্ন রংয়ের দেশীয় তাতের শাড়ীর পত্রিকা দিয়ে পেচানো এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের ১৫ কেজি শুকনা গাজা উদ্ধার করেছে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এবিষয়ে শুক্রবার (০৯ জুন) দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় প্রেস কনফারেন্স করে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইবনে মিজান।
প্রেস ব্রিফ্রিং কালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান জানান, ৮ জুন বিকেলে এস আই আব্দুল মান্নান সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযান করা কালে উক্ত স্থান হতে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার দ্বাবারিয়া এলাকার রহম আলী প্রামানিক এর পুত্র তারা মিয়া ও একই জেলার সেরখালি গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস এর ছেলে জহুরুল ইসলাম রকেট এর নিকট পৃথক দুটি বান্ডিলে পঞ্চাশটি বিভিন্ন রংয়ের দেশীয় তাতের শাড়ীর ভিতর পত্রিকা দিয়ে পেচানো তল্লাশী করে ১৫ কেজি শুকনা গাজা উদ্ধার করে। যার আনুমানিক মূল্য এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ) শুভ্র দেব, সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কে, এম আজমিরুজ্জামান, গাইবান্ধা ট্রাফিক অফিসার ইনচার্জ নূর আলম সিদ্দিক, সুন্দরগঞ্জ থানা তদন্ত অফিসার সেরাজুল হক।
এআই

দেখে বাড়ির বেলকুনি মনে হলেও এটি একটি সরকারি নিবন্ধিত পাঠাগার। আশেপাশে নেই কোন সাইনবোর্ড কিংবা আলাদাভাবে চেনার উপায়। কাছে গিয়ে দেখা মিলে, বেলকুনির চারপাশে শুকাতে দেওয়া আছে ভেজা কাপড়। তার পাশে অনুদান পাওয়া দুটি বুকসেলফে কিছু বই, দুটি চেয়ার, একটি টেবিল৷ এ ছাড়া আর পাঠাগারের কোন অস্তিত্ব নেই৷
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পূর্ব নারগুনে একটি বাড়ির বেলকুনিতে অবস্থিত গ্রামীণ পাঠাগারটি। অনুমোদনের নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধনের জন্য সাত বছর বয়স হওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে গড়ে দুই শতাধিক পাঠক হওয়ার কথা থাকলেও পাঠাগারটির নাম জানেন না এলাকাবাসী। এমনকি পাঠাগারের পরিচালকেরাও নাম বলতে হোচট খেয়েছেন কয়েক দফায়। অথচ নামে মাত্র এসব পাঠাগার গুলো কাগজে কলমে সচল পাঠাগার দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন সরকারি তহবিল থেকে লাখ লাখ টাকা।
জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় নিবন্ধিত পাঠাগারের সংখ্যা ১২ টি৷ যার মধ্যে অধিকাংশ পাঠাগার এখন শুধু নাম সর্বস্ব। কারো ঘরের বেলকুনি,কারো বেড রুম কিংবা কারো নেই কোন অস্তিত্ব। তবে নামে মাত্র হয়েও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪ টি পাঠাগার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬ টি পাঠাগার অনুদান পেয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে ০৮ টি পাঠাগার পাচ্ছেন পাঁচ লাখ সাতান্ন হাজার টাকা অনুদান৷ তার মধ্যে ২ টি 'গ' শ্রেণীর পাঠাগার পাচ্ছেন ৫৫,০০০ টাকা করে, আর "খ" শ্রেণীর ৬ টি পাঠাগার পাচ্ছেন ৪৭,৫০০ টাকা।
অনুদানের সব টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেন কাগজে কলমে থাকা পাঠাগারের সভাপতি ও সম্পাদক। নিয়ম মেনে তদারকি করে অনুদান প্রদানের সাথে অর্থ আত্মসাৎ কারীদের বিচারের দাবি জানান সচেতন মহল।
স্থানীয়রা ও শিক্ষার্থীরা জানান, তারা কখনো গ্রামীণ পাঠাগার নামে কোন পাঠাগারের নাম শোনেননি৷ তাদের এলাকায় পাঠাগার হলে তারা সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করতে পারতেন৷
গ্রামীণ পাঠাগারের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, কাগজে কলমে আমাদের পাঠাগারটি ২০১৬ সালে দেখানো হয়েছে৷ আমরা সব ধরনের সরকারি সুযোগ সুবিধা পাই৷ বিগত দুই অর্থ বছরে আমরা সরকারি অনুদান পেয়েছি৷ এবারেও আমরা সরকারি অনুদান পাব৷ বর্তমানে তেমন কোন কার্যক্রম নেই। আমরা সামনে একটি ঘর তৈরী করে পাঠাগারটি চালু করব।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৬ নং নারগুন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেরেকুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে গ্রামীণ পাঠাগার রয়েছে এটি আজ জানতে পারলাম। কখনো এর কোন কার্যক্রম আমার চোখে পড়েনি। যারা পাঠাগারের নামে টাকা আত্মসাৎ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোড় দাবি জানাচ্ছি।
অফিসে কর্মকর্তা সংকট হওয়ায় এমন অবস্থা জানিয়ে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান আম্বিয়া বেগম বলেন, পাঠাগার গুলোতে দুবছর আগে পরিদর্শনে যাওয়া হয়েছিল। পরে আর যাওয়া হয়ে উঠেনা। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তারা সরকারি অনুদান পেয়ে থাকেন৷ পরবর্তীতে আমরা তদারকি বাড়াব।
নামে সর্বস্ব পাঠাগার গুলো আর অনুদান পাবেনা বলে সাফ জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, পাঠাগার সমাজের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। একটি সমাজকে জ্ঞান ও শিক্ষায় সমৃদ্ধ করে। তবে পাঠাগারের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা সরকারি সম্পদ হাতিয়ে নেন তাদের সে সুযোগ আর দেওয়া হবেনা। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনি কাজ শুরু করব। কার্যক্রম হীন পাঠাগার গুলো আর কোন ধরনের সরকারি অনুদান পাবেননা৷
পিএম

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বমূখী হলেও ঝাঁজ ছড়ায়নি পেঁয়াজ। কিন্তু একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় উঠেছে।
এখন খুচরা দোকান থেকে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ৬০ টাকা লাগছে ভোক্তাদের। আর খুচরা ব্যবসায়ীদের পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে ৪২-৪৫ টাকা কেজি দরে।
শুক্রবার (৯ জুন) বিরামপুর পাইকারি নতুন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ শুক্র ও শনিবার আমদানি বন্ধ থাকায় দাম বেশি।
বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুদ্ধ বাজার করতে আসা ক্রেতারা। পারভেজ হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে গতকালকে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৫০ টাকা, দাম কিছুটা কম ছিল। আজকে ৬০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে, একদিনের ব্যবধানে ১০ টাকা বেশি। সিন্ডিকেট করেই দাম বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা।
জানতে চাইলে নতুন বাজারের পেঁয়াজের পাইকারী ব্যবসায়ী মো. জুয়েল বলেন, ‘ভারতীয় পেয়াঁজ শুক্র ও শনিবার আমদানি বন্ধ থাকায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গত একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে কেজি প্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একদিন আগে মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি করেছিলাম ৩৫-৩৭ টাকা, সেটি এখন ৪২-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
নবাবগঞ্জ মতিহারা বাজারের খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজুর রহমান (ফিজু) বলেন, ‘একদিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম অনেক বেড়ে গেছে। পাইকারী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই দাম বাড়িয়েছে।
বিরামপুর নতুন বাজারের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী মো.সুমন জানান, আজ পেঁয়াজ পাইকারি ৪২ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। খুচরা বিক্রি করছি ৫০ টাকা কেজি। গত একদিন আগেও পেঁয়াজ পাইকারি ৩৫-৩৬ টাকা কেজি এবং খুচরায় বিক্রি করেছি ৪০টাকা কেজি।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শুকুর জানান, দুইদিন আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে রবিবার থেকে ভারতীয় পেয়াজ আমদানি হলে কমে যাবে দাম।
কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায় মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকালেই পেয়াজ খুচরা বিক্রি করেছি ৫০ টাকা কেজি দরে। আজ বিক্রি করছি ৬০ টাকা দরে। আজ পাইকারী বাজারে কেজি প্রতি ১০ টাকা করে বেশি বলে জানান।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে তীব্র গরমে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বুধবার (০৭ জুন) দুপুর দুপুর ১টার দিকে উপজেলার উত্তর রাবাইতারী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরল আমিন জানান, বিদ্যালয়ে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা চলাকালীন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হেলেনা আক্তার (১৪) তীব্র গরমে জ্ঞান হারিয়ে পরীক্ষা কক্ষেই লুটিয়ে পড়ে। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।
অন্যদিকে নবম শ্রেণির অপর শিক্ষার্থী আবু হাসান (১৫) ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা শেষ করে দুপুর একটার দিকে বাড়ীতে ফিরেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তার পরিবারের লোকজন তাকেও দ্রুত নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা দুজনই নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মুমূর্ষু অবস্থায় ওই দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা দুজনই শঙ্কামুক্ত।
এআই
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোঃ আফজাল ফকির (৪০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের পোতাজিয়া কাঠুরিয়া পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি উক্ত গ্রামের মৃত আবু তালেব ফকিরের ছেলে। তিনি স্থানীয়ভাবে তৈরি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত করিমন চালক ছিলেন। পাশাপাশি ইলেক্ট্রিকের কাজ করতেন।
স্থানীয় জানান, আফজাল ফকির সকাল ১১টার সময় মৃত জোদ্দার শেখের ছেলে প্রতিবেশী আফসার শেখের বাড়িতে ফ্রিজের লাইন মেরামত করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
ঘটনার পর পরই তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আফজাল ফকিরের ঘরে স্ত্রী, ২ ছেলে এবং একটি মেয়ে রয়েছে।
নিহত আফজাল ফকিরের স্ত্রী মোছাঃ সীমা খাতুন জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন।
খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পোতাজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর জাহান বাচ্চু উপস্থিত ছিলেন।
ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আফজাল ফকিরের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় এবং ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।
আফজাল ফকিরের এরকম মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকাজুড়ে শোকাবহ পরিবেশ বিরাজ করছে।
সোমবার (৫ জুন) ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস । এবারের প্রতিপাদ্য 'প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে শামিল হই সকলে', আর স্লোগান 'সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ।'
প্লাস্টিকের একক ব্যবহার বা ওয়ানটাইম প্লাস্টিক পণ্য পরিবেশের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ প্রায় প্রতিদিনই আমরা প্লাস্টিকের বোতল, কফির কাপ কিংবা প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম প্লেট ব্যবহার করছি। এগুলো সাধারণত একবার ব্যবহার করেই ফেলে দেওয়া হয়। পুনঃব্যবহারযোগ্য না হওয়ায় এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বর্জ্য উৎপাদন হয়। এতে পরিবেশ পড়ছে ঝুঁকিতে। ওয়ানটাইম ইউজ প্লাস্টিক ছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে নানাভাবে আমরা ব্যবহার করি প্লাস্টিকের পণ্য। আমাদের সচেতনতাই পারে প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে পরিবেশকে নিরাপদে রাখতে।
প্লাস্টিক দূষণ কমিয়ে সবার জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন দেশের মতো সোমবার ৫ জুন বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিনটি উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের একমাত্র পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন 'ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ' এই দিবসটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করে। দিনব্যাপী প্রায় ১৩ টি কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হয় এই সংগঠনের কার্যক্রম।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জের আয়োজনে দেড় শতাধিক সদস্য নিয়ে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত (জাতীয় সংসদ সদস্য, সিরাজগঞ্জ - ২)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল (বি পি এম পিপিএম বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব আব্দুস সামাদ তালুকদার। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, জেলা প্রশাসক, সিরাজগঞ্জ।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সিরাজগঞ্জ জেলায় পরিবেশগত দিক থেকে সবচেয়ে সক্রিয় এবং জনবান্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করায় পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন 'ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ'কে পরিবেশ সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথির হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আশিক আহমেদ।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে 'ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ' দিনব্যাপী কর্মসূচি এর পরবর্তী কার্যক্রম ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে শতাধিক ফলজ, বনজ, ঔষধি ও ভেষজ বৃক্ষচারা বিতরণ। উক্ত আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ নুরুল হক। এদিন বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এবং ডিসি গার্ডেনে বৃক্ষরোপণ ও সন্ধ্যায় একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীর সাক্ষাৎকার নিয়ে তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেয়।
এছাড়াও 'ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ'র প্রতিনিধিরা দেশের বিভিন্ন জেলা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করে। দিনব্যাপী সংগঠনটি বাকি সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে সফল হয়েছে বলে জানান সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আশিক আহমেদ। সে সঙ্গে তিনি দজনুবাদ জানান সংগঠনটির অন্যতম সদস্য সামিনা ইসলাম নীলা, মেহেদী জামান, আব্দুর রহমান, আব্দুল বারি, রেদোয়ান আহমেদ, নূর, নিলয়, রহিম, রাফিউল ইসলাম, শরিফুল ইসলামসহ উপস্থিত সকলকে।
উল্লেখ্য, 'ক্লিন সিরাজগঞ্জ গ্রীন সিরাজগঞ্জ' প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ৬ মাস ব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ উৎসব পালন করতে যাচ্ছে। এই কার্যক্রম টি চলমান থাকবে জুন থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বলে জানায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আশিক আহমেদ।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলংজানি গ্রামে বাবা-ছেলে হত্যা মামলার ৪ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বুধবার (০৭ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চার আসামি আইনজীবীর মাধ্যমে সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া আমলী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। জামিন শুনানী শেষে বিচারক বিল্লাল হোসেন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
আসামিরা হলেন- ঠান্ডু মোল্লা, চাঁদ মোল্লা, আনছার আলী ও রুহুল আমীন। এর আগে আসামিরা হাইকোর্ট থেকে দুই সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। গত ৫ এপ্রিল তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে বুধবার তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
সিরাজগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর মোহা: মোস্তফা কামাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল উল্লাপাড়ায় উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলংজানি গ্রামের মসজিদের পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ওয়ার্ড কৃষকলীগ নেতা জামাল উদ্দিন প্রামানিক নিহত হয়। এসময় নিহত জামাল উদ্দিন প্রামানিকের বাবা মসজিদের মোয়াজ্জিন মোশারফ প্রামানিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। গত ২৮ এপ্রিল বগুড়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোয়াজ্জিন মোশারফ প্রামানিকের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত মোয়াজ্জিন মোশারফ প্রামানিকের ছেলে ও মোহনপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বাবলু হোসেন বাদি হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামি করে উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এআই

পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাবা-ছেলে নিহত হয়েছেন। বুধবার (০৭ জুন) রাত সাড়ে ১২টায় উপজেলার দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড়ে অটোরিকশা ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশার যাত্রী রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মাহবুব আলম (৩০) ও তার ছেলে আব্দুর রহমান (২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এ সময় অটোরিকশার চালকসহ নিহত মাহবুব আলম এর স্ত্রী এবং কন্যা আহত হন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত মাহবুব আলম পাবনা স্কয়ারে এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে চাকরি করতেন এবং শহরের কালাচাঁদপাড়ায় ভাড়া বাসায় পরিবারসহ থাকতেন।
পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিষ কুমার সান্যাল বলেন, নিহতদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এআই

উজানে পানি প্রবাহ কমে যাওয়া, দখল-দূষণ এবং গতিপথে মানুষের অবৈধ হস্তক্ষেপে বিপন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদ-নদী। এরই ধারাবাহিকতায় উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান নদী করতোয়াও এখন মৃতপ্রায়।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক প্রধান তিনটি নদী পদ্মা মেঘনা যমুনা ছাড়াও সরকারি তথ্য মতে ছোট বড় মিলে ৪০৫টি নদীর হিসেব পাওয়া যায়। করতোয়া নদীর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বগুড়া অংশে। শহরের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা এককালের প্রমত্তা করতোয়া এখন মৃত নদী। উজান থেকে পানির প্রবাহ নেই। তাই দখল আর আবর্জনার দূষণে এ নদী জর্জরিত।
অব্যাহত দখল, শহরের বাসা-বাড়ির বর্জ্য, খনন বা সংস্কার না হওয়া ও দূষণে পচা নর্দমার ড্রেন বা ক্যানেলে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে দিনে শুকর-কুকুরদের অবাধ বিচরণ। শহর এলাকার মধ্যে দত্তবাড়ি ঘাট, কাজীখানা ঘাট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় করতোয়া নদীর তীরবর্তী ২৮টি স্পট দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ চললেও কেউ দখলবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ অহরহ। একদিকে দীর্ঘদিন খনন না হওয়া ও অন্যদিকে দখল চলতে থাকায় বগুড়ার মানচিত্র থেকে প্রমত্তা ‘করতোয়া নদী’ হারিয়ে যেতে বসেছে।
সনাতন ধর্মগ্রন্থে একটি পবিত্র নদী হিসেবে করতোয়ার কথা এর উল্লেখ আছে। নদীটি বগুড়া জেলার মহাস্থানগড় দিয়ে প্রবাহমান। মহাভারতে বলা আছে, তিন দিন উপবাসের পর করতোয়া নদীতে ভ্রমণ করলে এক অশ্বমেধার সমান পুণ্যলাভ হয়। আরেকটি প্রাচীন শহর শ্রাবন্তী, সেটি মহাস্থানগড়ের উত্তরে করতোয়ার পাড়ে অবস্থিত ছিল বলে মহাভারতে উল্লেখ আছে। ‘কর’ অর্থ হাত, আর তোয়া অর্থ ধোঁয়া জল, অর্থ্যাৎ হাত ধোয়া জল, হিন্দু ধর্মীয় দেবতা হিমালয়ে ধ্যানমগ্ন শিব পার্বতীকে বিয়ে করার সময় শিবের হাত ধোঁয়া জল থেকেই করতোয়া নদীর উৎপত্তি।
তাছাড়া বিশিষ্ঠ ইতিহাসবিদ প্রভাত চন্দ্র সেন ‘বগুড়ার ইতিহাস’ গ্রন্থেও ভারতের হিমালয় পাদদেশ থেকে করতোয়া নদীর উৎপত্তির উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে এই নদী চারটি আলাদা ভাগে বিভক্ত। উত্তরের অংশ দিনাজপুর-করতোয়া হচ্ছে আত্রাই নদীর প্রধান উৎস। রংপুর-করতোয়ার উপরের অংশ জলপাইগুড়ি জেলা থেকে উৎপন্ন। এটি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত দিওনাই-যমুনেশ্বরী নামে পরিচিত। তৃতীয় শাখা যমুনেশ্বরী-করতোয়া গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে প্রবাহিত হয় এবং প্রধান গতিপথটি কাটাখালি হয়ে বাঙ্গালি নদীতে গিয়ে পড়ে। এটিই বগুড়ার করতোয়া, যেটি হুরাসাগরে গিয়ে পড়েছে।
মোট ৫৯৭ কিলোমিটার বা ৩৭৩ মাইল দৈর্ঘ্যের করতোয়া নদীতে আশির দশকে প্রচুর পানি থাকায় প্রমত্তা ছিল। “জনশ্রæতি আছে করতোয়া নদীতে সওদাগরী জাহাজ, লঞ্চ এবং বড় বড় নৌকা (বজরা) যেটা বলে সেটা যাতায়াত করতো। পণ্য পরিবহন হতো এবং ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু ছিল পুর্ন্ড্রবর্ধন নগরী বগুড়া এবং করতোয়া নদীকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে সভ্যতা গড়ে উঠেছে।
বগুড়া শহরের শাহ্ ফতেহ আলীর (রহ.) মাজার সংলগ্ন এ নদীতে ঘাট ছিল। পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি থেকে বগুড়া পর্যন্ত প্রায় ৬০কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর দুই তীরে সেচ দেওয়া যেত। তীরে বসবাসকারীরা খাবার পানি সংগ্রহ ও প্রাত্যহিক কাজ করতেন এ নদীর পানি দিয়ে। খর¯্রােতা হওয়ায় পারাপার খুবই কষ্টসাধ্য ছিল।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্র্ড ১৯৮৮ সালে উজানে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খুলশিতে বাধ ও সুইসগেইট নির্মাণ করে। সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতার কারনে করতোয়ার পানি প্রবাহের গতিপথ সম্পূর্ণ বন্ধ ও ভরাট হয়ে গেছে। সে থেকেই প্রভাবশালীরা ধীরে ধীরে দখল-দূষণ নানা প্রাকৃতিক কারনে বন্যাজনিত ক্ষয়-ক্ষতি ও নদী সংস্কারের অভাবে করতোয়া পূর্বের সকল বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে ফেলেছে। অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে দ্রুত নগরায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি মানুষের অপরিনামদর্শী কর্মকান্ড প্রভাব ফেলেছে করতোয়া নদীর উপর।
বর্তমানে বগুড়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ডের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের আবর্জনা, ড্রেনের পানি নদীর বুকে এসে পড়ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন উৎস থেকে প্রায় ১৫-১৬ টন বর্জ্য নদীর পানিতে মিশছে আর নদীর পানি পচে কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গেছে। অপর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ও দখলবাজদের অবৈধ দখলের কারণে ¯্রােতস্বীনি বেগমতি করতোয়া নদী এখন মৃতপ্রায়। সচল, সজিব, নৈসর্গিক সৌন্দর্যের প্রতিক করতোয়া নদী এখন হয়ে উঠেছে শ্রীহীন, কঙ্কালসার, নিশ্চুপ ও স্থবির। স্বচ্ছ জলপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ার কারনে নদীতে দ্রুতহারে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে।
এদিকে বগুড়ার স্থানীয় জনগণ করতোয়া নদী দখলের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতাকে দায়ী করে অবিলম্বে প্রভাবশালীদের কবল থেকে নদীরক্ষা ও খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখা নদীরক্ষায় গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বগুড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, বগুড়াকে বাঁচাতে হলে ব্যাপক পরিবেশগত সচেতনতা ও স্থানীয় উদ্যোগের মাধ্যমে করতোয়া নদী সচল রাখতে হবে।
এ বিষয়ে বগুড়ার বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম বাদশা জানান, পৌরসভা অনেক আগেই চিঠি দিয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে তিনি কাউন্সিলরদের নিয়ে কমিটি করে ময়লা যাতে করতোয়ায় না পড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
বগুড়া সদর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু এ প্রতিবেদককে জানান, পুর্ন্ড্রবর্ধন নগরী ছেদিত করতোয়া নদীই বগুড়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। এ নদীকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নদী ও খাল-বিলের পানি প্রবাহে বাধা সৃৃষ্টিকারী সব ধরনের স্থাপনা অবিলম্বে ভেঙে ফেলার নির্দেশনাসহ ডিসিকে জরুরি ভিত্তিতে এবিষয়ে লিখিত নির্দেশনা পাঠাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক নদীর অবৈধ জায়গা উদ্ধারে বগুড়ার করতোয়া নদীর নাম রয়েছে এই সরকারি তালিকায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক তন্ময় সান্যাল জানান, নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ এবং পানির প্রবাহ অক্ষুন্ন রাখতে ২০১৫ সালের ২২ জুন জেলা প্রশাসকসহ ২১ জনকে বিবাদী করে হাইকোর্টে রিট করে বেলা নামের সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশে জেলা প্রশাসন করতোয়া নদীর সীমানা দখল করে নির্মিত কিছু স্থাপনা অপসারণ করে।
বগুড়া জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা সূত্র জানায়, শহরের মধ্যে করতোয়া নদীর কয়েকটি স্থানে দখল হয়েছে। নদী দখল হয়ে যাওয়া স্থানে বাড়িঘর, ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। একাধিকবার করতোয়া নদী দখলের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়। এর মধ্যে ৩৫ জন দখলদারের মধ্যে ২৮ জনকে মুক্ত করা হয়েছে। বাকিগুলো মামলা রয়েছে। একই সঙ্গে নতুন করে দখলদারের তালিকা তৈরি হচ্ছে। নতুন দখলদারের বিরুদ্ধেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক জানান, করতোয়া নদী রক্ষায় বেশকিছু কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ২০১১ সালে প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহণ করা হয়। সে সময় থেকে ‘করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রস্তাব করা হয়। সম্প্রতি করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্পটি আবারো সমীক্ষার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার মডেল (আইডবিউএম), বাংলাদেশ অধ্যয়ন কেন্দ্র (সিবিএস) ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন যৌথভাবে এই সমীক্ষা করছে। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সমীক্ষা শেষ হওয়ার কথা। করতোয়া নদী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চলছে। তবে ২০১৯ সালের পর এটি বেশি জোরদার হয়। এ প্রকল্পটির সমীক্ষা করছে তিন প্রতিষ্ঠান। প্রথম ধাপ এ মাসেই শেষ হবে। সমীক্ষায় কমপোনেন্টগুলো (উপাদান) যাচাই শেষ হলে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হবে।
তাছাড়া বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে করতোয়া নদীর পরিবেশ দূষণ বন্ধ, শহরের যানজট নিরসনে সড়ক নির্মাণ। করতোয়া নদীর বগুড়া জেলা অংশের শিবগঞ্জ উপজেলার উত্তরের সীমানা থেকে শেরপুর উপজেলার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত মোট ১২৩ কিলোমিটার এলাকা খনন। একই সঙ্গে খনন করা হবে সুবিল খাল ৩১ কিলোমিটার, ইছামতী নদী ৭২ কি.মি ও গজারিয়া খালের ৩৫ কিলোমিটার। নদীর দুই পাড়ের ২৭ কিলোমিটার এলাকায় ২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা ও ৬ ফুট ওয়াকওয়ে নির্মাণ, মাস্টার ড্রেন নির্মাণকাজ, পানি নিয়ন্ত্রণে তিনটি অবকাঠামো নির্মাণ, নদীর দুই পাড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ, পানির ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণকাজ। প্রকল্পের অধীনে ভূমি অধিগ্রহণ থাকবে। এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। এখানে সুখবর হচ্ছে প্রস্তাবনাটি একনেকের সবুজ পাতাভুক্ত হয়ে আছে।
সম্প্রতি বগুড়া সার্কিট হাউজে স্মার্ট বগুড়া’ বিনির্মাণে জেলা প্র্রশাসন ওই পরামর্শমূলক কর্মশালায় জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, করতোয়া নদী বগুড়ার প্রাণ। কিন্তু দখল-দূষণে করতোয়া নদীর প্রাণবৈচিত্র্য প্রায় নিঃশেষ। শহরের অংশে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার নদী প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীকেন্দ্রিক শহর ছিল একসময় বগুড়া। সভ্যতার বিবর্তনে করতোয়া এখন ধুঁকছে। স্মার্ট বগুড়া গড়ার অংশ হিসেবেই ‘স্মার্ট করতোয়া রিভার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ প্রকল্প বাস্তবায়ন দরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে করতোয়া তার যেমন হারানো যৌবন ফিরে পাবে, তেমনি স্মার্ট বগুড়া গড়াও সহজ হবে।
এআই
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় বালুবাহী ট্রাক ও শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১৫ জনে গিয়ে দাড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) ভোরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজন মারা যান। মারা যাওয়া বাদশা (২২) নামের ওই যুবক দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মায়েদ নুরের ছেলে।
এর আগে ৭ মে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া পিকআপে প্রায় ৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছলে মুনশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী মালবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান আরও ৪ জন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ আলী (২৫), শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে দুলাম মিয়া (২৬), একই উপজেলার বাবনগাঁ গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৪০), দিরাই উপজেলার আলীনগর গ্রামের মৃত শিশু মিয়ার ছেলে হারিস মিয়া (৬৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার হলদিউড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নূর (৫০), শান্তিগঞ্জ উপজেলার তলেরতন গ্রামের মৃত আওলাদ উল্লার ছেলে আওলাদ হোসেন (৬০), দিরাই উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া (৫৫), গচিয়া গ্রামের বারিক উল্লার ছেলে সিজিল মিয়া (৫৫), ভাটিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া (২৭), নেত্রকোনার ভারহাট্টা উপজেলার দশদার গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আওলাদ মিয়া (৩০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের শমসের নুরের মেয়ে মেহের (২৪), দিরাই উপজেলার মধুপুর গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে দুদু মিয়া (৪০), একই গ্রামের শাহজাহানের ছেলে বাদশা (২২) ও দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মায়েদ নুরের ছেলে বাদশা (২২)।
নিহতের ঘটনায় দুই চালকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের ইজাজুল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। দুই চালক পলাতক রয়েছেন। আইনি পক্রিয়া চলমান আছে।’
জানা যায়, তাদের বেশিরভাগই সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। স্বজনরা জানান, নিহত সবাই নির্মাণ শ্রমিক। দৈনিক মজুরীতে তারা বাসার ছাঁদ ঢালাইয়ের কাজ করতো। বুধবার ভোরেও তারা একটি বাসার ঢালাইকাজের জন্য সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকার অনুদান প্রদান করেন।
এআই
হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি বলেছেন, বিএনপি দেশের মানুষকে ভাতের বদলে আলু খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তাঁরা ক্ষমতায় থাকতে দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারেনি; উল্টো দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে।
তিনি বুধবার (০৭ জুন) হবিগঞ্জ সদর উপজেলার গোপায়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
এমপি আবু জাহির বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত প্রায় ১৫ বছরে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে। বিএনপি মানুষকে ন্যায্যমূল্যেও সার দিতে পারেনি; সারের জন্য আন্দোলনে যাওয়া কৃষকদের তারা গুলি করে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশজুড়ে কৃষককে ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে উন্নত কৃষিযন্ত্র ও বিনামূল্যে সার-বীজ দিচ্ছে। ফলে কৃষকের জমিতে ধানের বৈপ্লবিক ফলন হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
এ সময় আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিতে কাজ করার আহবান জানালে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী হাত তুলে তাঁর বক্তব্যের প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন।
সম্মেলনে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আব্দুল ছায়েদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুকিত, নুরুজ্জামান চৌধুরী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জাকারিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ, সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সাব্বির আহমেদ রনি প্রমুখ।
এআই
এক সপ্তাহ আগে বেড়ানোর কথা বলে সুনামগঞ্জের দিরাই থেকে সিলেটে এসেছিলেন সৌরভ মিয়া (২৭)। পরে বাড়ির লোকদের না জানিয়েই পরিচিতদের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লেগে যান।
এদিকে বাড়িতে তার বিয়ের জন্য পাত্রী পছন্দ করে রেখেছিলেন মা আমিনা বেগম। এরইমধ্যে ট্রাকের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে সৌরভের মৃত্যু হয়। আর এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না আমিনা বেগম।
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে স্বামী সিরাজ মিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে আসা আমিনা বেগম বুধবার সাড়ে ১২টার দিকে কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, “আমার পুতরে (ছেলে) বিয়া কারইতে আসলাম, মেয়ে দেখি রাখছিলাম গো। আমার পুতের কিতা হইল, তোমরা আমার পুতরে আনি দেও।’’
শোকাহত এই মায়ের কান্না-আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালের পরিবেশ। তাকে ধরে রাখা স্বজনরাও সৌরভের বিভিন্ন কথা বলে-বলে কান্না করছেন। পাশে বসেই কান্না করছেন সিরাজ মিয়াও।
সিরাজ মিয়া ও আমিনা বেগমের বাড়ি দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তাদের ছেলে সৌরভ মিয়া বেড়াতে এসে সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় পরিচিতদের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। প্রতিদিনের মতো বুধবার ভোরে উঠে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে যাওয়ার জন্য পিকআপে উঠেন সৌরভসহ ৩০ জন নির্মাণশ্রমিক।
পথে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজার এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে সৌরভসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০-১২ জন।
বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হতাহতদের স্বজনের ভিড় বাড়তে থাকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তাই আমিনা বেগমের আশে-পাশে আরও অনেকে কান্নায়-আহাজারিতে স্বজন হারানোর শোক জানাচ্ছেন।

তিন মাসের ব্যবধানে দুই স্বামীকে হারালেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শারমিন বেগম। প্রায় তিন মাস আগে তার স্বামী হেলাল আহমদ মারা যান।
এরপর দুই সন্তান নিয়ে মাসখানেক আগে পরিবারের লোকজন হেলালের স্ত্রী শারমিন বেগমকে (২৫) বিয়ে দেন ছোট ভাই দেবর দুলাল মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর কাজের জন্য সিলেটে আসেন দুলাল। থাকতেন আম্বরখানা সাপ্লাই এলাকার ভাড়া বাসায়।
কিন্তু বুধবার (০৭ জুন) সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন দুলাল মিয়া (২৬)। তিন মাসের ব্যবধানে দুই স্বামীকে হারিয়ে শারমিন এখন পাগল প্রায়।
দুপুরে লাশ হস্তান্তরকালে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আহত-নিহতদের স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে ওঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। হাসপাতালের হিমঘরের পাশে স্বজনদের ভিড় লেগে আছে। মাটিতে গড়াগড়ি করে কাঁদছেন তাদের অনেকে। হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন নিহত দুলাল মিয়ার ফুপাতো ভাই মো. শাহীন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন পাশে থাকা স্বজনরা।
মো. শাহীন জানান, দুলালের বড় ভাই হেলাল আহমদ প্রায় তিন মাস আগে দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে যান। মাসখানেক আগে পরিবারের লোকজন হেলালের স্ত্রী শারমিন বেগমকে (২৫) বিয়ে দেন দুলাল মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর কাজের জন্য সিলেটে আসেন দুলাল। থাকতেন আম্বরখানা সাপ্লাই এলাকার ভাড়া বাসায়।
এদিকে হিমঘরের পাশে পাশে মাটিতে বসে আহাজহারি করছিলেন মেহের মিয়ার স্ত্রী চাঁদনী বেগম। আহাজারি করে তিনি বলেন, সকালে ডিম রান্না করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে না খেয়েই চলে যায়। এখন আমার বাচ্চাগুলো এতিম হয়ে গেলো। আমি টাকা চাই না। বাচ্চাদের বাবাকে চাই।
কাঁদতে কাঁদতেই চাঁদনী বলেন, গরমে কাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত দুইটার দিকে সে আমারে ডাক দেয়। বলে তোর জন্য একটা ফ্যান কিনে দেবো। আমারে আ ফ্যান কিনে দিতে পারলো না।
দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সাজেদুরের ভাই শের ইসলাম (৫৫)। ভাইকে হারিয়ে আহাজারি করছেন শের ইসলাম। তিনি বলেন, হঠাৎ করে বিপরীতমুখী একটি ট্রাক আমাদের দিকে ছুটে এসে ধাক্কা দেয়। মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় আমাদের সবকিছু।
একই তথ্য জানিয়ে দুর্ঘটনা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিউল ইসলাম বলেন, হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রাক এসে আঘাত করলে আমাদের পিকআপ উল্টে যায়। ট্রাকটি সড়কে তার ডানে চলে এসেছিল। দুর্ঘটনায় আমি আর বাবা আহত হলেও প্রাণে বেঁচে আছি। তবে আমার বড় চাচা আর নেই।
এআই
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। বুধবার (০৭ মে) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার নাজির বাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দুপুর ১১টার দিকে সিলেট সফররত নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হাসপাতালে ছুটে যান।
তাঁরা নিহতদের স্বজনদের শান্তনা দেন ও আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে সাহায্য প্রদান করেন।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মহানগর থেকে পিকআপে (সিলেট-ন ১১-১৬৪৭) করে প্রায় ৩০ জন নারী-পুরুষ নির্মাণ শ্রমিক জেলার ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার যাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমার নাজিরবাজার এলাকার কুতুবপুর নামক স্থানে পৌঁছলে মুনশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী বালুবাহী ট্রাকের (ঢাকা মেট্রো-ট ১৩-০৭৮০) সঙ্গে শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন মারা যান। পরে হাসপাতালে নেওয়ায় পর মারা যান আরো ৩ জন। আহত ও নিহত সকলই নির্মান শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
নিহত ১৪ জন হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার মো. সিজিল মিয়া (৫৫), একলিম মিয়া (৫৫), হারিছ মিয়া (৬৫), সৌরভ মিয়া (২৭), সাজেদুর (৬০), বাদশা মিয়া (৩০), সাধু মিয়া (৫০), রশিদ মিয়া (৫০) ও মেহের (২৫), সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শাহীন মিয়া (৪০), দুলাল মিয়া (২৬) ও আওলাদ হোসেন (৫০), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের আমিনা বেগম (৪৫) এবং নেত্রকোনা বারহাট্টার আওলাদ মিয়া (৪০)।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেটের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলেই ছুটে আসি এবং এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃতদেহ ও অন্তত ১০ জন গুরুতর আহতকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে পাঠাই। আমরা আসার আগে স্থানীয়রা আরও আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা আশপাশের ঝুপ-ঝাড়ে সন্ধান চালাচ্ছি, আর কোনো হতাহত পড়ে আছেন কি না দেখার জন্য।’
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
এআই
অনলাইন ভোট
আন্তর্জাতিক
সব দেখুন
647cdb4dc886d.webp)


বিনোদন
সব দেখুন



অর্থ-বাণিজ্য
সব দেখুন









শিক্ষাঙ্গন
সব দেখুন



তথ্য-প্রযুক্তি
সব দেখুন




646870d192422.webp)
আইন-আদালত
সব দেখুন
প্রবাস
সব দেখুন
লাইফস্টাইল
সব দেখুন