এইমাত্র
  • বিশ্ববাজারে সোনার দামে রেকর্ড
  • নিরস্ত্র ২ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর বালিচাপা দিল ইসরায়েলি সেনারা
  • ভারত থেকে পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
  • দিনে ৭৮ কোটির বেশি মানুষ অভুক্ত, অথচ নষ্ট হয় ১০০ কোটির খাবার: জাতিসংঘ
  • বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের
  • প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
  • কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা
  • ‘বিএনপির নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি কিনেন না’
  • ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
  • যমুনার বুকে বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর ৩.৭ কিমি দৃশ্যমান
  • আজ বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র, ১৪৩০ | ২৮ মার্চ, ২০২৪
    শিক্ষাঙ্গন

    জাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলা তোপের মুখে উপাচার্য

    সময়ের কণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জুন ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জুন ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম

    জাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলা তোপের মুখে উপাচার্য

    সময়ের কণ্ঠস্বর প্রকাশ: ৭ জুন ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম

    জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করাসহ তিনদফা দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৬ জুন) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

    তবে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পাল করেন প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

    এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ কয়েকজন বামপন্থী শিক্ষার্থী আহত হন বলেও জানা গেছে।

    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার সুযোগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে শাখা ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী বের হয়ে আসেন। এরপর তারা অনশনরত শিক্ষার্থীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বিছানা-বালিশে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনা হয়। একপর্যায়ে অনশনরত শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে মেডিকেলে পাঠিয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচীকে মারধর করা হয়। এছাড়া মাশিয়াত সৃষ্টি, মনিকা নকরেক এবং শারমিন সুর নামে তিন নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হয়।

    সুত্র জানায়, সামিউলের দাবির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার(৬ জুন) সন্ধ্যায় মীর মোশররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আলম হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য শিক্ষকদের নিয়ে অছাত্রদের তালিকা করতে যান। তার প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের নেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এছাড়া হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব প্রদানকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত বলে জানা গেছে।

    হামলার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাপস্বী রাবেয়া বলেন, 'সামিউলের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে আমরা সেখানে অবস্থান করি। যখন রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়, তখন আমাদের উপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। আমরা যারা নারী শিক্ষার্থী ছিলাম, তাদেরকে বিভিন্ন গালিগালাজও করা হয়। অনশনকারী শিক্ষার্থীকে জোর করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়, এরপর আবার সেই অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরও করা হয়।'

    বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. কামাল বলেন, 'আমি মেডিকেলে ডাক্তারের মাধ্যমে জানতে পারি, মীর মশাররফ হলের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ। এ সময় আমি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে অসুস্থ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসার পথে হলের শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করে।'

    বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তব্যরত চিকিৎসক আনিছুর রহমান বলেন, 'মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে অনশনরত শিক্ষার্থীকে মেডিকেলে আনা হয়। তখন অনশনকারী শিক্ষার্থী আমাকে জানায় তাকে জোর করে তুলে মেডিকেলে আনা হয়েছে এবং সে চিকিৎসা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।'

    এদিকে হামলার একঘন্টা পর ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। তিনি বলেন, 'ঘটনা শুনে এসেছি। এখানে যেসব শিক্ষার্থী হামলা করেছে তাদেরকে আমরা শনাক্ত করতে পারেনি। তারা ছাত্রলীগ করে কিনা এটাও জানিনা। কারা হামলা করেছে আমরা তদন্ত করে বের করে ব্যবস্থা নেব।'

    এদিকে হামলার ঘটনার পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন তারা। পরে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম। উপাচার্যের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

    দাবিগুলো হল- মীর মশাররফ হোসেন হলের সব অবৈধ ছাত্রদের রাতের মধ্যে হল ত্যাগ করতে বাধ্য করা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বাদী হয়ে মামলা করা, প্রক্টর এবং প্রাধ্যক্ষকে অব্যাহতি দেওয়া, গণরুম এবং গেস্টরুম সংস্কৃতি শেষ করা ও প্রথমবর্ষ থেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হলে আসনের ব্যবস্থা করা।

    এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম বলেন, 'যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা নাম দেন সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।'

    এদিকে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, 'অনশনরত শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ জড়িত না। যদি কোনোভাবে কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

    অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বুধবার (৭ জুন) বেলা ১১টায় শৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকা হয়। সভায় সামিউলের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা হয় এবং বাকিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এসব সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য বেলা তিনটায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা সভায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। এ সময় উপাচার্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…