পাকিস্তান নিজেদের বিমান সংস্থা পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস (পিআইএ) বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে এতদিনের সরকারি বিমান সংস্থা এবার হচ্ছে ব্যক্তিমালিকানাধীন।
সোমবার (৮ আগস্ট) দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা যায়, দেশটির অর্থমন্ত্রী ইশাক দারের নেতৃত্বে এক বেসরকারিকরণ বিষয়ক মন্ত্রিসভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২০২০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে পিআইএ-র পরিচালন কার্যক্রম বন্ধ আছে। মূলত পাইলটদের ভুয়া লাইসেন্স দেয়ার কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিমান নিরাপত্তা সংস্থা ইউরো অঞ্চলে পিআইএ-র বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বছরের পর বছর ধরে যেসব প্রতিষ্ঠান লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। টানা লোকসানে পিআইএ যখন একরকম বন্ধ হয়ে গেছে, তখন এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে দেশটি।
পিআইএ’র ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সংস্থাটির ২৩টি উড়োজাহাজের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৭টি অচল হয়ে পড়ে আছে। এই উড়োজাহাজগুলো কেনা হয়েছিল বিশ্বের প্রথমসারির দুই বিমান কোম্পানি বোয়িং এবং এয়ারবাস থেকে।
এই দুই কোম্পানির তৈরি কোনো বিমানের কোনো যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে পড়লে কোম্পানি দু’টি থেকেই ওই যন্ত্রাংশ কিনতে হয়।
পিআইএ’র ওই পরিচালক জানিয়েছেন, পূর্বের বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করার কারণে আর যন্ত্রাংশ সরবরাহ করতে চাইছে না বোয়িং-এয়ারবাস। ফলে অকেজো হয়ে থাকা সাতটি উড়োজাহাজ চালু করা সম্ভব হচ্ছে না এবং এতে বেশ কিছু শিডিউল ফ্লাইট কাটছাঁট করতে হয়েছে পিআইএকে।
চলতি বছরের জুনে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে তিন বিলিয়ন ডলারের বেইল আউট ঋণ পেয়েছে। প্রাপ্ত ঋণের সঙ্গে সংযুক্ত শর্ত পূরণের লক্ষ্যে পাকিস্তান আইন করে অলাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেসরকারিকরণ করছে।
এর আগে দেশটি আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম ২৭২ দশমিক ৯৫ রুপি নির্ধারণ করে, আর ডিজেল ২৭৩ দশমিক ৪০ রুপি নির্ধারণ করে।
এ ব্যাপারে দেশটির অর্থমন্ত্রী জানান, আইএফএফের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানির দাম বেড়েছে।
এদিকে নিত্যপণ্যের লাগামহীন বাজারে নাজেহাল পাকিস্তানের জনজীবন। পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন ও ভারতের গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৩ শতাংশ বেড়ে ২৮ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে।
বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ভোগাচ্ছে সাধারণ মানুষকে। দেশটির পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই ক’দিনে পাকিস্তানে তাজা সবজির দাম বেড়েছে প্রায় ৩৮ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু টমেটোর দামই বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া আলুর দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ফলের দাম ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
পিএম