কলকাতার অভিনেত্রী সায়ন্তিকা ব্যানার্জি প্রথমবার বাংলাদেশে এসেছেন জায়েদ খানের সঙ্গে একটি সিনেমায় শুটিং করতে। প্রথমবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার স্বীকার হয়েছেন বলে দাবি কলকাতার এই নায়িকার। এ কারণে জায়েদ খানের সঙ্গে তার অভিনীত সিনেমা 'ছায়াবাজ'র কাজ শেষ না করেই কলকাতায় চলে গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নৃত্য পরিচালকের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে শুটিং শেষ করেননি নায়িকা। জানান, তার অনুমতি ছাড়াই নাচের দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়ার সময় হাত ধরেছেন তিনি। সেসময় সাফ জানিয়ে দেন, মাইকেল থাকলে আর কাজ করবেন না।
বিষয়টি জায়েদ খান 'ভুয়া ও ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি' বললেও স্বীকার করেন পরিচালক ও প্রযোজক। এমনকি প্রযোজক জানান, কোনো হয়রানি নয়, বরং নায়িকাই নৃত্যপরিচালকে 'লাথি' মারতে চেয়েছিলেন। কারণ মাইকেল প্রযোজকের কাছে জায়েদ ও সায়ন্তিকার অপেশাদার আচরণ নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন।
এদিকে পরিচালক তাজু কামরুল বলেন, 'কাজের প্রয়োজনে নৃত্য পরিচালক নায়িকার হাত ধরে দেখিয়ে দিতেই পারেন। তবে অনুমতি নিয়েছেন কিনা, সেটা বিষয়। কিন্তু আমার কাছে এটা বড় ঘটনা মনে হয়নি। আসলে সায়ন্তিকা নিজেই ভালো নৃত্যশিল্পী। অনেক বড় প্রডাকশনে কাজ করেছেন, তাই হয়তো মাইকেলের ডিরেকশনটা তার ভালো লাগছিল না।'
গত ৩০ আগস্ট ঢাকায় আসেন সায়ন্তিকা। সেদিন বিকেলেই নায়ক জায়েদ খানের সঙ্গে কক্সবাজারে যান তিনি। কথা ছিল ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুটিং করার। কিন্তু তিনি সেটা না করে ৭ সেপ্টেম্বর চলে যান।
সূত্র অনুযায়ী, গান দিয়ে শুরু হয় কাজ। নির্বিঘ্নেই শেষ হয় প্রথম গানের শুটিং। দ্বিতীয় গানের শুটিং চলাকালীন হঠাৎ করেই সায়ন্তিকা অভিযোগ করেন নৃত্য পরিচালক মাইকেলের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, নৃত্য পরিচালক অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তাকে স্পর্শ করেছে। তাই পরিবর্তন করতে হবে নৃত্য পরিচালককে, অন্যথায় কাজ করবেন না তিনি।
তবে প্রযোজক মনিরুল বললেন, এর আগেই নৃত্য পরিচালক নায়ক-নায়িকার অপেশাদার আচরণ নিয়ে কথা বলেছিলেন তার সঙ্গে।
তার ভাষ্য, "সেদিন বিকালে ৫টার পর মাইকেল আমাকে জানায়, জায়েদ ও সায়ন্তিকা ড্রেস চেঞ্জের কথা বলে বলে দুপুরে হোটেলে গিয়েছে। তার দীর্ঘ সময় পর স্পটে আসেন। তখন বিকাল ৫টা। সূর্যের আলো প্রায় পড়ে গেছে। দিনের সিকোয়েন্সটা তিনি এখন কীভাবে করবেন, সেটা জানতে চান আমার কাছে। আর রাতে সায়ন্তিকা আমাকে মেসেজ করেন, 'যদি মাইকেল থাকেন তাহলে তিনি কাজ করবেন না।' পরদিন আমি স্পটে সবাইকে ডাকি। জানতে পারি, আমাকে বলা মাইকেলের কথাটা সায়ন্তিকা শুনে ফেলেছিলেন। বিষয়টি তিনি ভালোভাবে নেননি। এরপর গানের কাজ দেড় ঘণ্টা হয়েছে। কিন্তু মাইকেলের একটি ডিরেকশন তিনি বুঝতে পারছিলেন না। মাইকেল তখন দেখিয়ে দেবেন কিনা জানতে চায় সায়ন্তিকার কাছে। মাইকেল সায়ন্তিকার চার আঙুল ধরে সেটা দেখি দেয়, সায়ন্তিকা সঙ্গে সঙ্গে হাত সরিয়ে নেন। এবং জিজ্ঞেস করেন, তিনি কেন হাতটা ধরেছে? হাত না ধরে মুখে বলার কথা বলেন কলকাতার এই নায়িকা।
এই প্রযোজক আরো বলেন, "বরং মাইকেলের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। আমি যখন সবাইকে ডাকলাম, তখন লাউডস্পিকারে ফোন দেওয়া হয় নায়িকাকে। সে সময়ও তার আচরণ খুবই উগ্র ও অপেশাদার ছিল। বলছিলেন, 'মাইকেলকে পেলে তিনি নিতম্বে লাথি মারবেন। মাইকেল থাকলে তিনি কোনোভাবেই কাজ করবেন না। বিষয়টি দুঃখজনক। মাইকেল অনুমতি নিয়েই নাচের মুদ্রাটা দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এতে নৃত্য পরিচালকের কোনো দোষ আমি দেখি না। তাই সায়ন্তিকাকে জানালাম, মাইকেলের সঙ্গেই তাঁকে কাজ করতে হবে। না হলে কাজ করার প্রয়োজন নেই। পরদিন সকালে সায়ন্তিকা সেট ছেড়ে চলে যান। আমি আমার কথায় এখনো অনড়। আমার দেশের শিল্পীদের ছোট করে আমি কোনো কাজ করতে চাই না।"
এদিকে হোটেলে জায়েদ ও সায়ন্তিকা দেরি করার বিষয়ে এই নায়ক বলেন, 'এগুলো কোনো বিষয়ই নয়।' তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, 'গানের কাজ শেষ হওয়ায় সায়ন্তিকা চলে গেছেন। আবারও আসবেন। দ্বিতীয় লটের শুটিং হবে।'