অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে আরেক মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার সাত বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ রায় ঘোষণা করেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ছয়জনের খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ, মানিলন্ডারার তারা শুধু আমাদের সম্পদ চুরি করছে না। তারা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ চুরি করছে এবং আমাদের স্বপ্ন চুরি করছে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত তাদের আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা। এটা সত্য এ দেশের মানুষ দুর্নীতিবাজদের ঘৃণা করে। তবে আমাদের উচিত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা।
রায়ে আসামিদের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪(২) ধারায় তাদের সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া আসামিদের ৫২ কোটি টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি জব্দকৃত টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন আদালত।
তবে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক ভুঁইয়া, মো. মেরাজুল হক শিপলু, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান ও ভুলু চন্দ্র দেবকে খালাস দেন আদালত।
রায় ঘোষণার জন্য এনু-রূপনসহ কারাগারে থাকা ৬ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে অন্যরা খালাস পেলেও এনু-রূপনকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ বংশাল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়।
তদন্ত শেষে তিনজনকে অব্যহতি দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। বিচার চলাকালে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ভোরে ক্যাসিনো-কাণ্ডে জড়িত থাকায় গেণ্ডারিয়া থানার আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়াকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২২টি জমির দলিল, পাঁচটি গাড়ির কাগজপত্র ও ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি টাকা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে নগদ ৪০ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
গেণ্ডারিয়া এলাকার ত্রাস এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারসহ ১২টি মামলা দায়ের করা হয়। বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকেও।
সবশেষ ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত রাজধানীর পুরান ঢাকায় ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত দুই ভাই এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়ার বাসায় র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়।