হবিগঞ্জের বানিয়াচং রত্না নদীতে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে স্থানীয়দের নৌচলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন লিজ গ্রহীতা রনজিত দাস। নদীতে বাঁধ দিয়ে বা অন্য কোনো ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ ধরা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও তা মানছেন না এই মৎস্যজীবী।
সরেজমিনে গিয়া দেখা যায়, রত্না নদীর পূর্ব পাড় ও পশ্চিমপাড়কে সংযোগ করে বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ দিয়ে নদীর পানি প্রবাহ ব্যাহত করা হচ্ছে। এতে নৌচলাচল বন্ধ করে লোন জাল দিয়ে মাছ আহরণ করা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন জনগণের পণ্য আনা নেয়াতে ব্যাঘাত ঘটছে অন্যদিকে বাঁধ দিয়ে লোন জাল ব্যবহার করে মৎস্য আহরণ করায় মাছের প্রজনন ধ্বংস হচ্ছে।
এভাবে আড়াআড়ি ভাবে বাঁধ দেয়ার কারণে অন্যান্য জেলেরা স্বাভাবিক ভাবে মাছ ধরতে পারে না। এতে বাঁধ দেয়া ব্যক্তিরা আর্থিকভাবে লাভবান হলেও গরীব জেলেরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বাংলাদেশ মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর বিধি-৪-এ উল্লেখ রয়েছে, নদী-নালা, খাল-বিলে স্থায়ী স্থাপনার মাধ্যমে (ফিক্সড ইঞ্জিন) মৎস্য আহরণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে স্থায়ী স্থাপনা অপসারণ এবং বাজেয়াপ্ত করা যাবে।
অথচ বানিয়াচং উপজেলার বানিয়াচং-হবিগঞ্জ মহাসড়কের পাশে রত্না নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা চলছে। স্থানীয় জেলে সুবোধ দাস জানান, আগে তো আমরা নদ-নদীতে নেমে মাছ ধরতাম। কিন্তু এভাবে বাঁধ হওয়ার কারণে এখন আর কেউ নদীতে নামতে পারে না। কোনো নৌকাও চলাচল করতে দেয় না বাঁধ মালিকরা। কৃষ্ণ দাস,হরিপদ দাসসহ অনেক জেলেই রত্ন নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ আহরণ করার কারণে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এই নদী যারা লীজ নিয়েছেন তারা খুবই প্রভাশালী তাই আমাদের শত কষ্ট হলেও প্রতিবাদ করার কোন সাহস পাই না।
এই বিষয়ে রনজিত দাস বলেন, আমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঁচ তাঁরা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির মাধ্যমে ছয় বছরের জন্য লিজ নিয়েছি।
নদীর পানির গতি প্রবাহ ও নৌ চলাচল বন্ধ করে বাঁধ দেয়া সঠিক হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা নদীতে বাঁশ ও পাটির বাঁধ দিয়ে প্রতিবছর এভাবেই মাছ আহরণ করি।
বিষয়টি নিয়ে ১০নং সুবিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়কুমার দাশের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার বিষয়ে জানতে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি রত্না নদী ও কালিদাশটেকার সুটকি এবং রত্না নদীতে বাঁশ ও পাটির মাধ্যমে বাঁধ দিয়ে মৎস্য আহরণ করতে দেখেছি। বিষয়টা নিয়ে ইউএনও স্যারের সাথে পরামর্শ করে আপনাকে জানাবো।
বানিয়াচং উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহবুবুর রহমান জানান, আমি এখনো এ বিষয়ে কোন কিছু জানিনা, এখন আপনার মাধ্যমে জানলাম। তবে মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করে সঠিক তথ্য পাওয়া গেলে মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।