শুক্রবার দুপুর আড়াইটা। যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ঝাউদিয়া মৌজার মাঠে ধান ক্ষেত পরিচর্যার কাজ করছিলেন কৃষক শফিকুল ইসলাম। আগুন ঝরা রোদে কাজ করতে করতে রীতিমতো হাপিয়ে ওঠেন তিনি। গভীর নলকুপ থেকে হাত মুখ ধুয়ে পানি পান করার পর গাছের নিচে শুয়ে পড়েন এই কৃষক। তার কথায় রোদের তাপ সহ্য করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আর কাজ করতে পারছিনা। এমন অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন যশোরের মানুষ।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর ছিল তালিকায় দ্বিতীয়। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে অতি তীব্র তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়। সেই অতি তীব্র তাপমাত্রার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যশোর। তাপমাত্রা বেড়ে চললেও আপাতত বৃষ্টিপাতের আভাস নেই।
জানা গেছে, দমফাটা রোদ ও গরমের মধ্যে সবচেয়ে কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের লোকজন। প্রচন্ড গরমে অতিষ্ট হয়ে হাপিত্যেশ করছে তাঁরা।
রিকসা চালক মানিক মিয়া জানান, প্রচন্ড তাপের মধ্যে রিকসা চালাতে মন চাই না। কিন্তু অভাবের সংসার। তাইতো কষ্ট হলেও রিকসা চালানো ছাড়া উপায় নেই। টানা রোদে রিকসা চালানোর ফলে গরমে গায়ের কাপড় ঘেমে ভিজে গেছে তার।
নির্মাণ শ্রমিক আশাদুল ইসলাম জানান, কড়া রোদে গা ‘পুড়ে’ যাচ্ছে। মাথার ওপরের আকাশটা যেনো তাঁতালো কড়াইয়ের রুপ নিয়েছে। রোদের খরতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তার মতো অনেকেই। গরমে জীবন যাই যাই অবস্থা।
রড মিস্ত্রি মোফাজ্জেল হোসেন জানান, গরমের কারণে রডে হাত দেয়া যাচ্ছেনা। তারপরও কষ্ট করে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের যে দাম। একদিন কাজ না করলে চুলায় হাড়ি উঠবেনা। তাই অনেকটা বাঁধ্য হয়েই মাঠে কাজ করতে এসেছেন। যশোরে অব্যাহত খরতাপ শ্রমজীবি মানুষের কষ্ট অনেকটা বাড়িয়েছে। তাপমাত্রার পারদে মানুষ একদম নাজেহাল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বুধবার যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াম, বুধবার ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ছিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সোমবার ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।