এইমাত্র
  • সিরাজগঞ্জে সাংবাদিকের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ইসি রাশেদা
  • শনিবার বন্ধ থাকছে দেশের যেসব জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
  • পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
  • পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ২০
  • এসএসসি পরীক্ষার ফল ১২ মে
  • খালেদা জিয়া তত্বাবধায়ক সরকারের মামলায় গ্রেফতার এবং বন্দি: কাদের
  • দুপুরে যে ৬ জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা
  • জয়দেবপুরে ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, চালকসহ আহত ৪
  • কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • কারামুক্ত হলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক
  • আজ শনিবার, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৪ মে, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    পেশাদার নারী ফুটবল লীগে শেরপুরের ভাবনা

    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ পিএম
    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ পিএম

    পেশাদার নারী ফুটবল লীগে শেরপুরের ভাবনা

    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০২ পিএম

    এক পা দু’পা করে স্বপ্নপূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন শেরপুরের নারী ফুটবলার ভাবনা। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফুটবল টুর্নামেন্ট থেকে ওঠে আসা কিশোরী ভাবনা এখন নাম লিখিয়েছে দেশের নারী ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে।

    বাংলাদেশ ওমেন্স ফুটবল লীগে জামালপুর কাচারীপাড়া ফুটবল একাদশের রেজিস্টার্ড খেয়োয়াড় হয়ে মাঠে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন ভাবনা।শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত পল্লীর বাসিন্দা এক ডেকোরেটর কর্মীর মেয়ে এই ভাবনা।

    প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই তার ফুটবলে হাতেখড়ি। মেয়ে খেলাধুলায় আগ্রহী হওয়ায় তাকে বাধা দেননি তার বাবা-মা। পাড়া-প্রতিবেশীরা বাঁকা চোখে দেখলেও তাকে ভ্রুক্ষেপ করেননি। বরং তারা মেয়ে ভাবনার ভবিষ্যৎ ফুটবল ভাবনায় সবসময় সহযোগী হয়েছেন।

    কয়েক বছর আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে শেরপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে খেলার সময় ভাবনা নজর কাড়েন স্থানীয় ফুটবল অনুরাগীদের। মানিক ফুটবল একাডেমির প্রধান কোচ গোলাম শাহরিয়ার রবীন ভাবনাকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেন।

    তাকে তার একাডেমিতে বিনা বেতনে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেন। সেই থেকে শুরু আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিদিন অটোরিকশায় করে গ্রাম থেকে শেরপুর শহরে এসে স্টেডিয়ামে ছেলেদের সঙ্গে মানিক ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলন ও কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন। তার অধ্যবসায় এবং অনুশীলন সবাইকে চমৎকৃত করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার খেলায় পরিপক্কতার ছাপ পরিলক্ষিত হয়।

    মানিক ফুটবল একাডেমির কর্ণধার ও জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানিক দত্ত ভাবনার ফুটবল প্রতিাভায় মুগ্ধ হয়ে তাকে শেরপুর জেলা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করে তার বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন সারথী হন। নানাভাবে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকেন।

    মেয়ে বিভিন্ন জায়গাতে খেলতে যাওয়া এবং জেলা দলে সুযোগ পাওয়া, অধিনায়ক হওয়ায় বাবা-মার মনেও অন্যরকম ভালো লাগা অনুভূত হতে থাকে। তারা মেয়েকে ফুটবল খেলতে আরও উৎসাহিত করতে থাকেন। নিয়মিত একাডেমিতে পাঠান। ভাবনাও নিজেকে বড় ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন নতুন স্বপ্ন বুনতে থাকেন।

    ভাবনা বলেন, বাংলাদেশ ওমেন্স ফুটবল লীগে দল পাওয়ায় আমি দারুণ খুশী। এটা দেশের নারী ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়। এটা আমার জন্য, নিজেকে প্রমাণ করার জন্য বড় সুযোগ। আমি মাঠে নামার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। ক্লাব যদি আমাকে পর্যাপ্ত সময় মাঠে খেলায়, তাহলে নিজের সেরাটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করব।

    তিনি বলেন, কোচ রবীন ভাইর (গোলাম শাহরিয়ার রবীন) অনুপ্রেরণা, সাহস জোগানো ও শাসনের জন্য আমি আমার স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তার জন্যই আমার নারী ফুটবল লীগে খেলার সুযোগ হয়েছে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

    নিজের স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে ভাবনা জানায়, আমার স্বপ্ন একদিন জাতীয় নারী ফুটবল দলের হয়ে খেলার। আমাদের জেলার জ্যোতি আপা (নিগার সুলতানা জ্যোতি) বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। আমিও স্বপ্ন দেখি, তার মতো একদিন ফুটবলেও আমার দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার। আমি নিজেকে একজন বড় ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য সকলের দোয়া ও সহযোগিতা চাই।

    ভাবনার বাবা বলেন, মাইনষে অনেকে অনেক কথা বলেছে, আমি কোনো কথায় কান দেই নাই। মেয়ে যখন ফুটবল খেলবার চায়, আমি তারে বাধা দেই নাই। যহন আমার মেয়েরে স্যারেরা খেলবার নেয়, তহন আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আমি চাই মেয়ে আমার আরও আগাই যাক। ওর জন্য আমি সবার কাছে দোয়া চাই।

    মানিক ফুটবল একাডেমির প্রধান কোচ গোলাম শাহরিয়ার রবীন বলেন, ভাবনা অনেক পরিশ্রমী, স্কিলফুল এবং স্বপ্নবাজ। পরিবারও তার পাশে থাকার কারণে ফুটবলকে ভালোবাসে ফুটবলার হিসেবে বেড়ে ওঠার পথ সুগম হয়েছে। ওমেন্স লীগে খেলার সুযাগ হওয়ায় ভাবনার ফুটবল জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হতে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস সে ভালো করবে। তার জন্য শুভকামনা রইলো।

    শেরপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানিক দত্ত বলেন, ভাবনা আমাদের শেরপুর জেলা নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক। সে এখন পেশাদার নারী ফুটবলে খেলতে যাচ্ছে, এটা আমাদের জন্য গর্বের। আমাদের জেলা থেকে সে-ই প্রথম দেশের শীর্ষ ফুটবল আসরে খেলার এমন সুযোগ পেয়েছে। তার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…