এইমাত্র
  • পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক: বিআরইবি
  • গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
  • মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা
  • সীমান্তে হত্যার ঘটনা দুঃখজনক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • ৪৬তম বিসিএস: প্রিলির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ বৃহস্পতিবার
  • পাথরঘাটায় আগুনে বসতঘর পুড়ে ছাই, ক্ষয়ক্ষতি ১০ লাখ
  • হজ্বের জন্য টাকা জমালে কি জাকাত দিতে হবে?
  • কুমিল্লায় নিজ ঘরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত
  • টাঙ্গাইলে বাবার ভোট দিতে গিয়ে ছেলে আটক
  • ডিম খেয়ে কমিয়ে ফেলুন অতিরিক্ত ওজন
  • আজ বুধবার, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৮ মে, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    গারো পাহাড়ে দুর্বৃত্তের আগুনে জীববৈচিত্র হুমকির মুখে

    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম

    গারো পাহাড়ে দুর্বৃত্তের আগুনে জীববৈচিত্র হুমকির মুখে

    মিজানুর রহমান, শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম

    শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গারো পাহাড়ে শাল-গজারির বনের অন্তত ১৫টি স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাহাড়ি বনের গাছ-পালা ও প্রাণী ধ্বংসের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মাটির গুণাগুণ৷ হুমকির মুখে পড়েছে এখানকার জীববৈচিত্র।

    গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে কয়েকটি পাহাড়ি বন পুড়ে গেছে। স্থানীয়দের ধারণা বনের জমি দখল ও কাঠ সংগ্রহ করতেই দুর্বৃত্তরা এ আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছে।

    স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর ধরে চলছে এ বন পোড়ানো। প্রতিবছর এ মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে যায় ছোট গজারি গাছ (শালকপিচ), ঝোপঝাড়, লতাপাতা, পোকামাকড়, কীটপতঙ্গসহ নাম না জানা বিভিন্ন প্রাণী। এছাড়া নতুন করে জন্ম নেয় না গাছ। বিনষ্ট হয় বন্য প্রাণীর আবাসস্থল। বন পোড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। পাশাপাশি বিলুপ্ত হচ্ছে বন্য প্রাণী, কীটপতঙ্গ ও পাখি।

    বন বিভাগ সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের আওতায় ৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এ তিনটি বিট কার্যালয়ের আওতায় বনভূমি রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৮৮০ একর। এর মধ্যে বেশিরভাগ জমিতে শাল-গজারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা সমৃদ্ধ বন রয়েছে। প্রতি বছরের ফাল্গুন-চৈত্র মাসে শাল-গজারিসহ বিভিন্ন গাছপালার পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের মধ্যদিয়ে চলাচলের জন্যে সড়কপথ থাকায় খুব সহজেই দুর্বৃত্তরা রাতে আবার কখনো দিনেও বনে আগুন দেন। ঝরাপাতাগুলো শুকনা থাকার কারণে মুহূর্তেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেওয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় বছরের পর বছর চলছে বন পোড়ানোর এমন ঘটনা।

    গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইগাতী-কামালপুর সড়কের ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের গজনী বিট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের চারটি স্থানে বড়আকারে আগুন জ্বলছে। আবার দুইটি স্থানে অল্প অল্প আগুন জ্বলছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, কে বা কারা ঘণ্টাখানেক আগে সেখানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। গত দুই সপ্তাহে শাল-গজারি বনের কমপক্ষে ১৫টি স্থানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

    গান্ধী গ্রামের বাসিন্দা মো. লিটন মিয়া বলেন, বনের ভেতর অসংখ্য রাস্তা রয়েছে। কে কখন কোন রাস্তা দিয়ে এসে আগুন দিচ্ছে, তা বোঝার উপায় থেকে না। তবে কিছুদিন ধরে মাঝেমধ্যেই বনের ভেতর আগুনের দেখা মিলছে।

    রাংটিয়া এলাকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘আপন শিক্ষা পরিবার’ -এর পরিচালক মো. রহমত আলী বলেন, প্রতিবছর এ মৌসুমে বনে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। মাঝেমধ্যে বিট কার্যালয়ের আশেপাশের বনেও আগুন জ্বলতে দেখি। এরপরেও এসব বন্ধের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায় না বন বিভাগকে।

    বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি ঝিনাইগাতী শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, যুগ যুগ ধরে মানুষ নিজের ব্যক্তিস্বার্থে পরিবেশের ওপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। মানুষের অপতৎপরতা, বিশেষ করে বিজ্ঞানের উন্নতির পর থেকে দ্রুতগতিতে ছোট-বড় প্রাণী, গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক সম্পদের বিনাশ সাধন করেছে। এসবের অবশ্যম্ভাবী ক্ষতির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। এর প্রমাণ বর্তমানে পৃথিবীর তাপমাত্রা অধিক পরিমাণে বাড়ছে, জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। পৃথিবীর সব অঞ্চলেই খরা, বন্যা ও পশু-পাখির বিলুপ্তি ঘটছে। খুবই জরুরি ভিত্তিতে সাধারণ মানুষকে পরিবেশ ও বন সম্পর্কে সচেতন করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। মানুষকে যেহেতু পরিবেশে বাস করতেই হবে, সেহেতু তাদের উচিত নিজেদের অস্তিত্ব ও স্থায়িত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য পরিবেশের মৌলিক উপাদানগুলো যথাযথ সংরক্ষণ করা।

    রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সময়ে শাল-গজারিসহ বিভিন্ন গাছপালার পাতা ঝরে পড়ে দুই-তিন ইঞ্চি উঁচু স্তরে জমা আছে। এতে আগুন ধরিয়ে দিলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বনের ভেতর আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমার অল্প সংখ্যক স্টাফ নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…