নোয়াখালীর সদরে 'নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের' এসএসসি (ভোকেশনাল) শাখার ১৩ জন পরীক্ষার্থী সকল বিষয়ে পাশ করার পরেও শুধুমাত্র বাস্তব প্রশিক্ষণে (ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট) ব্যবহারিক নম্বর না দিয়ে তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদের কারসাজিতেই শিক্ষার্থীদের ফলাফলে এমন বিপর্যয় নেমে এসেছে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।
খবর নিয়ে জানা যায়, নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ে এবার এসএসসিতে ৯৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে ৬২ জন পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয় এবং ভোকেশনাল শাখায় ৭৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে ৫৭ জন কৃতকার্য হয়। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হল ভোকেশনাল শাখায় অকৃতকার্য ১৬ জনের মধ্যে ১৩ জন পরীক্ষার্থী বোর্ডের সকল বিষয়ে কৃতকার্য হলেও বিদ্যালয় থেকে পাঠানো বাস্তব প্রশিক্ষণে (ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট) ব্যবহারিক নম্বর না দেওয়ায় চূড়ান্ত ফলাফলে তাদের অকৃতকার্য তালিকায় নাম আসে।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষকেরা আমাদের থেকে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা করে নিয়ে বলেছেন বাস্তব প্রশিক্ষণে আমাদের নম্বর দিয়ে দেবেন। তারপরও সব বিষয়ে পরীক্ষার পর ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র নোয়াখালী আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে যোগাযোগ করলে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে আমাদের ব্যবহারিকের নম্বর না দেওয়ায় আমরা ভালো ফলাফল করেও পাস করা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। যে কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন এখন হুমকির মুখে, অনিশ্চিত আমাদের শিক্ষা জীবন। তাই আমরা দ্রুত এর একটি সমাধান চাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে গোল্ডেন জিপিএ-৫ নম্বর নিয়ে সব বিষয়ে পাস নম্বর পেলেও বিদ্যালয় প্রধানের খামখেয়ালিতে বা তার কারসাজিতে সে ফেল করেছে। যে কারণে হতভম্ব হয়ে সে এখন অস্বাভাবিক আচরণ করছে। আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে ও আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে পুরো পরিবারকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। আমি এজন্য দায়ীদের উপযুক্ত বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, পরীক্ষার আগে বাধ্যতামূলক কোচিং করানো নিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের মতবিরোধ হয়। তার ওপর ভোকেশনাল পরীক্ষা কেন্দ্র পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এমন কাজ করেছেন। এতে আমাদের ১৩ জন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেল।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদের বক্তব্য , কিছু পরীক্ষার্থী বাস্তব প্রশিক্ষণে অনুপস্থিত থাকায় তাদের নম্বর দেওয়া হয়নি। বিষয়টি এখন ভিন্ন খাতে নিতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) নাজমা বিনতে আমিন বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ অবগত করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নানাবিধ অনৈতিক কর্মকাণ্ড, শিক্ষক -শিক্ষিকা হয়রানি ও অসদাচরণের অভিযোগে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন একাধিকবার।
এফএস