কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রায় চার মাস ধরে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও জন্মনিরোধ কপাটি, ইনপ্ল্যান, ভ্যাসেকটমি, টিউবিকটমি কার্যক্রম ও সাধারণ চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।
জানা গেছে, উলিপুর উপজেলাটি একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত। এ উপজেলায় প্রায় ছয় লাখ জনসংখ্যার বসবাস। ১৩টি ইউনিয়নে ১১টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। এ সব কেন্দ্রে মেডিক্যাল অফিসারসহ ১১ জন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসারের পদ রয়েছে। তবে এর মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র চারজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার।
একদিকে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকের পদ শূন্য, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে ওষুধ সংকট। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কয়েক লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাতিয়ার অনন্তপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম জানান, জ্বর-সর্দি নিয়ে ক্লিনিকে এসে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিতে আসছিলাম। শুনতেছি ওষুধ নাকি নেই।
ধামশ্রেনী কুড়ারপার গ্রামের আকিলা বেগম (৪৫) জানান, ক্লিনিকে ওষুধ নেই। প্যারাসিটামল ও হিস্টাসিন ছাড়া ওষুধ পাওয়া যায় না। আমরা গরীব মানুষ ওষুধ কিনতে পারি না, সেজন্য ক্লিনিকে আসি। কিন্তু এখন নাকি ওষুধেরও মঙ্গা (অভাব) পড়ছে।
হাতিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভিজিটর উম্মে সালমা বলেন, ওষুধ ছাড়া রোগী পরামর্শ দিতে চাইলে তারা নিতে চায় না। ওষুধ না থাকায় জন্মনিরোধ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এতে জন্মহার বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
গুনাইগাছ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওষুধ সরবরাহ না থাকায় লোকজনকে ওষুধ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উলিপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিন বলেন, কয়েক মাস ধরে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ নেই। জন্মবিরতিকরণ কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা পরিবার পরিকল্পনা
কার্যালয়ের উপপরিচালক মোদাব্বের হোসেন বলেন, সমস্যাগুলো শুধু উলিপুর উপজেলায় নয় সমগ্র বাংলাদেশের সব উপজেলায়। অফিস
অনুমোদন না হওয়াতে ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সমগ্রী অধিদপ্তর ক্রয় করতে পারে নাই। অতি শীঘ্রই উপকরণগুলো দ্রুতাতার সাথে ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পাদন করে পরিবার পরিকল্পনার সেবার মান অব্যাহত রাখতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান তিনি।
এমআর-২