যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ায় বারি-১১ জাতের আম চাষে অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখা গেছে। আর এই সফল চাষী হলেন শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউনিয়নের পিঁপড়াগাঁছী গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত নৈমুদ্দীন সদ্দারের ছেলে নূর ইসলাম সদ্দার।

নূর ইসলাম সদ্দার বিগত ২৩ বছর যাবত নার্সারী কাজের সাথে যুক্ত। প্রথমে বিভিন্ন নার্সারীতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন, পরে নিজের বসত বাড়ির এক খন্ড জমিতে ফলজ নার্সারী গড়ে তোলেন। নার্সারীর সাথে যুক্ত থাকার সুবাদে নতুন নতুন উদ্ভাবিত ফলের চারা সংগ্রহ করতেন। ২০১৮ সালে চাপাইনবাবগঞ্জ বাংলাদেশ আম গবেষনা কেন্দ্র থেকে নতুন উদ্ভাবিত বারি-১১ জাতের আমের চারা সংগ্রহ করেন। ঐ সংগৃহীত চারা হতে প্রথম বছরেই নূর ইসলাম উৎপাদিত সাইন (ডাল) দিয়ে নিজে দুই হাজার দুইশত চারা উৎপাদন করেন।

পরে ২০১৯ সালে দশ বছরের জন্য ছয় বিঘা জমি লিজ নেন। নিজের জমি তিন বিঘা ও লিজ নেওয়া ছয় বিঘাসহ মোট নয় বিঘা জমিতে নিজের উৎপাদিত আমের চারাগুলা রোপণ করেন। এর মধ্যে ছয় বিঘা জমিতে বারি-১১ ও তিন বিঘা জমিতে কাটিমন আমের চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের দুই বছর বয়স হতেই বাগানে ফল আসতে শুরু করে।

চলতি বছরের এপ্রিল মাস হতেই নূর ইসলামের বাগানে আম পাড়তে শুরু করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩৫ মন আম উৎপাদন হয়েছে বলে জানান নূর ইসলাম। প্রতি কেজি আম বাগান হতে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে। বর্তমানে ১ বিঘা জমি হতে নূর ইসলামের এক মৌসুমে আয় ৫৬ হাজার টাকা। তিন মৌসুমে আয় হবে প্রায় এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম সংগ্রহ করছে আম ব্যাবসায়ীরা। কুরিয়ারের মাধ্যমে আম ও আমের চারা পাঠাচ্ছেন নূর ইসলাম। অসময়ে মিষ্টি আমের সংবাদ শুনে দূরদূরান্ত থেকে আম বাগান পরিদর্শনে আসছে দর্শনার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার দিপক কুমার বলেন, অসময়ে আম উৎপাদন একটি ঝুকিপূর্ণ কাজ, তাই আমি নিয়মিত নূর ইসলামের বাগানের খোঁজ-খবর রাখছি ও পরামর্শ দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, নূর ইসলামের মত কৃষক আমাদের গর্ব। যদি কেউ নতুন ফল ও ফসল উৎপাদন করতে চায় আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি।

আরইউ