এইমাত্র
  • লোহাগাড়ায় ইটভাটায় অভিযান-জরিমানা
  • নারায়ণগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবি
  • আজও হাত মেলায়নি ভারত-পাকিস্তান
  • মিরসরাইয়ে জুলাই যোদ্ধা তাহমিদ হত্যায় ছাত্রদল কর্মী গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ
  • এবার হলিউডে নাম লেখালেন রোনালদো!
  • আইপিএল নিলাম থেকে বাদ পড়লো ৯ ক্রিকেটারকে
  • মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা, হাদির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক
  • হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, বিদেশে নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে: চিকিৎসক
  • মেসিকে ‘দখলে’ নিতে দুই মন্ত্রীর দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলা
  • আজ রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    দুর্ভোগ ও হয়রানির শেষ নেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম
    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম

    দুর্ভোগ ও হয়রানির শেষ নেই যশোর জেনারেল হাসপাতালে

    বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম

    যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার জন্য আসা মানুষের দুর্ভোগ ও হয়রানির শেষ নেই।

    ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে প্রবেশ করা থেকে বের হওয়ার আগ পর্যন্ত এ পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করতে হয়। রোগীদের ভাষ্যমতে, টিকিট কাউন্টারে দুর্ভোগ, চিকিৎসকের কক্ষে প্রবেশ করতে দুর্ভোগ, ক্যাশ কাউন্টারে দুর্ভোগ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে দুর্ভোগ, পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার সময়ও পেতে হচ্ছে দুর্ভোগ। আবার সঠিক সময়ে রিপোর্ট না পাওয়ার কারণে অনেকে চিকিৎসক না দেখিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

    রোগীদের ভাষ্যমতে, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দীর্ঘ লাইন পড়ে টিকিট কাউন্টারে। অথচ মাত্র দুটি কাউন্টার থেকে টিকিট বিতরণ করা হয়। যে কারেণ টিকিট পেতে রোগীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করতে হয়। টিকিট নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষের সামনে গিয়ে আবার দুর্ভোগের মুখে পড়ে রোগীরা। শ’শ’ রোগী সিরিয়ালে থাকলেও দেখা যাচ্ছে চেম্বারে চিকিৎসক নেই। নাস্তার জন্য বের হয়ে আধা ঘন্টায়ও চেম্বারে ফেরেননা চিকিৎসক। আবার চেম্বারে থাকলেও রোগীর চিকিৎসা প্রদানে রয়েছে গাফিলতি। যে কারণে দীর্ঘ সময় লাইনে থেকে রোগীদের দুর্ভোগের কবলে পড়তে হচ্ছে। আবার চিকিৎসক যদি ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশনা দেন তাহলে ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দিতে গিয়ে রোগীদের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। বেলা ১১ টার পর ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা নেয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে।

    যে কারণে অনেকেই পরীক্ষা নিরীক্ষার টাকা দিতে ব্যর্থ হন। এজন্য রোগীদের অপেক্ষা করতে হয় পরের দিন পর্যন্ত। আবার টাকার রশিদ কেটে প্যাথলজি বিভাগে রক্ত প্রস্রাব দেওয়ার একদিন পর দেয়া হয় পরীক্ষার রিপোর্ট। রোগীর প্রকৃত চিকিৎসাসেবার আগে এভাবেই কেটে যায় কয়েক দিন।

    ভুক্তভোগী মেহের আলী জানান, মঙ্গলবার তার এক আত্মীয়কে নিয়ে হাসপাতালে বহির্বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য আসেন। কিন্তু চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে কোনো ওষুধ না লিখে রক্ত প্রস্রাব ও এক্স-রে করার নির্দেশনা দেন। কিন্তু সময় পার হয়ে যাওয়ার আর পরীক্ষা করতে পারেননি। যে কারণে চিকিৎসাসেবা মেলেনি। তিনি আরও জানান, সকাল ৯ টায় হাসপাতালে পৌঁছেও বিনা চিকিৎসায় বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। টিকিট পেতে অপেক্ষা, চিকিৎসক দেখাতে অপেক্ষা পরে ক্যাশ কাউন্টার বন্ধ থাকায় পরীক্ষার টাকা দিতে পারেননি।

    তুরফান আলী নামে একজন জানান, বেলা ১১ টার পর ক্যাশ কাউন্টার বন্ধ করার কারণে তার রোগীর মতো অনেকেই পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারেননি। এজন্য তাদের আবার পরের দিন আসতে হয়েছে হাসপাতালে। টাকা জমা দিয়ে নির্ধারিত স্থানে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে গিয়ে আবার দীর্ঘ লাইনের কারণে তাদের দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। রোগীদের রক্ত ও প্রস্রাব নেয়ার পর বলা হচ্ছে আগামীকাল রিপোর্ট দেয়া হবে। অর্থাৎ দুই দিন হাসপাতালে এসেও চিকিৎসা মেলেনি।

    একাধিক রোগী জানিয়েছেন, প্যাথলজি বিভাগ থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট পরের দিন দেয়ার কারণে রোগী ও স্বজনদের কষ্ট বেড়েছে। যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়লেও রিপোর্টের অভাবে চিকিৎসা নিতে পারেননা। তাদের দাবি, সরকারি এই হাসপাতালে তিন দিন আসার পর মেলে প্রকৃত চিকিৎসাসেবা। তারা ব্যাখা করে বলেন চিকিৎসার আগেই পরীক্ষা নিরীক্ষার নির্দেশনায় ১ দিন, ক্যাশ কাউন্টারে টাকা জমা দিতে ১ দিন ও প্যাথলজি বিভাগ থেকে রিপোর্ট দিতে একদিন।

    এদিকে, অন্তবিভাগে রোগীদেরও চিকিৎসাসেবায় রয়েছে নানা দুর্ভোগ ও হয়রানি। চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্টরা রক্ত ও প্রসাব সংগ্রহ করতে আসেন দুপুরের পর। অনেক সময় স্বজনরা তাগিদ দিলে বলা হয় রোগীকে এখানে আনেন। রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ ইচ্ছামতো দায়িত্ব পালন করার কারণে তারা রিপোর্ট হাতে পান পরের দিন বেলা ১টার পর। রোগীদের দাবি অনুযায়ী টিকিট কাউন্টার , ক্যাশ কাউন্টার ও প্যাথলজি বিভাগে জনবল বাড়ানো ও চিকিৎসকদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া হলে রোগীদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কিছু লাঘব হবে।

    সূত্র জানায়, দুর দুরন্তের অনেক রোগী খুব সকালে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য বুকভরা আশা নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান। কিন্তু হাসপাতালে এসে তাদের সকল আশা শেষ হয়ে যায়। পরতে পরতে দুর্ভোগের কবলে পড়ে চিকিৎসা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান। চিকিৎসাসেবায় অব্যবস্থাপনা কারণে দুর- দুরন্তের মানুষের কষ্টের শেষ নেই।

    হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. হিমাদ্রী শেখর জানান, রোগীদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমাতে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…