ময়মনসিংহ নগরের গুলকিবাড়ি এলাকায় একটি বহুতল ভবনের পাইলিং কাজ চলাকালে পাশের একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে ভবনটির সব বাসিন্দাকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এলাকায় গ্রিনল্যান্ড ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেডের একটি ২০ তলা ভবন নির্মাণের পাইলিং কাজ চলছিল। কাজের একপর্যায়ে হঠাৎ পাশের পাঁচতলা ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভবনটি একদিকে কাত হয়ে পড়লে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভাড়াটে ও মালিক সবাই বাসা ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ভবনটি আরও হেলে পড়া ঠেকাতে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে পাশ থেকে মাটি সরিয়ে নেওয়া এবং ভরাটের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঝুঁকি বিবেচনায় ভবনটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইংল্যান্ডপ্রবাসী এস. এম. রিয়াজুল আমিনের মালিকানাধীন পাঁচতলা ভবনটির পাশেই একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ২০ তলা ভবনের বেজমেন্টসহ নির্মাণকাজ করছিল। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ভবনটির নিচতলায় ফাটল দেখা দেয়। ফাটল বাড়তে থাকলে ভবনটি হেলতে শুরু করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় করেন।
ভবন মালিকের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘রাতে ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ার বিষয়টি ডেভেলপার কোম্পানিকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ রাখতে বলে।’
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘পাশের একটি বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে পাঁচতলা ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে।’
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অর্ণব বিশ্বাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভবনটির বর্তমান অবস্থা ভালো নয়। তাই ভবনটি ব্যবহার না করতে মালিককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আল মজিদ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর পরিদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ঘটনায় ভবন নির্মাণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নকশা অনুমোদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে গ্রিনল্যান্ড ডেভেলপার প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
ইখা