বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে নতুন করে। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত এলে সামরিকভাবে জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল মুসলিম লীগের এক যুবনেতা। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক জোট গঠনের আহ্বান জানিয়ে আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য বদলের প্রস্তাবও তুলে ধরেছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে কোনও ধরনের হামলা হলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে জবাব দেয়া হবে— এমন হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল) যুব শাখার এক নেতা। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক জোট গঠনের আহ্বানও জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দেয়া এক বক্তব্যে পিএমএলের যুবনেতা কামরান সাঈদ উসমানি বলেন, ‘ভারত যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত হানে, যদি কেউ বাংলাদেশের দিকে কুদৃষ্টিতে তাকায়, তাহলে মনে রাখতে হবে— পাকিস্তানের জনগণ, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী এবং আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র কিন্তু খুব দূরে নয়।’
উসমানি বলেন, ভারতের তথাকথিত ‘অখণ্ড ভারত’ আদর্শ বাংলাদেশে চাপিয়ে দেয়ার কোনো প্রচেষ্টা পাকিস্তান মেনে নেবে না। এক ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশকে নিজের আদর্শিক প্রভাবের অধীনে আনার চেষ্টা করছে, এটা পাকিস্তান কখনোই গ্রহণ করে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের ওপর হামলা চালায় বা এমনকি তার সার্বভৌমত্বের দিকে ‘কুদৃষ্টি’ দেয়, তাহলে পাকিস্তান শক্ত হাতে জবাব দেবে।
উসমানি আরও বলেন, অতীতেও পাকিস্তান ভারতকে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে পেরেছিল এবং প্রয়োজন হলে আবারও তা করতে পারবে। তিনি একটি সম্ভাব্য কৌশলগত দৃশ্যপট তুলে ধরে বলেন, একদিকে পশ্চিম দিক থেকে পাকিস্তান, পূর্ব দিক থেকে বাংলাদেশ এবং একই সময়ে চীন অরুণাচল প্রদেশ ও লাদাখে মনোযোগ দিলে ভারত চাপে পড়বে।
অন্য একটি ভিডিও বার্তায় তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব দেন। তার অভিযোগ, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের পরিস্থিতি অশান্ত করছে এবং ‘অখণ্ড ভারত’ আদর্শের নামে বাংলাদেশ ভেঙে একটি হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব হলো— পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একটি সামরিক জোট গঠন করবে। পাকিস্তান বাংলাদেশে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করবে, আর বাংলাদেশ পাকিস্তানে একটি সামরিক ঘাঁটি গড়বে।’
উসমানির মতে, উভয় দেশ একে অপরকে নিজ নিজ ভূখণ্ডে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের সুযোগ দিলে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী হবে এবং এর মাধ্যমে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) বাংলাদেশের বন্দরগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘যারা বন্দর ও সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই বিশ্ব শাসন করে’। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সামরিক অংশীদারত্ব এ অঞ্চলের শক্তির ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে বলেও জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল) যুব শাখার এই নেতা।
এবি