ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দিনাজপুর-৪ (খানসামা–চিরিরবন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মনোনয়ন ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র অসন্তোষ। লাঙ্গল প্রতীকের মনোনয়ন না পাওয়ায় দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দিনাজপুর জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন খানসামা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. আব্দুল আলিম হাওলাদার।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে তিনি জেলা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনশন শুরু করেন। এ সময় তিনি মনোনয়ন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলেন।
অনশনরত অবস্থায় মো. আব্দুল আলিম হাওলাদার বলেন, খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত মোট ১৮টি ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সর্বসম্মতিক্রমে তাকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকে ত্যাগ ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছেন। অথচ সেই অবদান উপেক্ষা করে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যার সঙ্গে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কোনো সাংগঠনিক যোগাযোগ নেই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত ও বাস্তবতা উপেক্ষা করে মনোনয়ন দিলে দল মাঠপর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করলে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক ঐক্য দুর্বল হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে তিনি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বিনীত আবেদন জানাচ্ছি—এই অন্যায্য মনোনয়ন সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করা হোক।’
অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে এই নেতা বলেন, আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শে বিশ্বাসী একজন পরীক্ষিত কর্মী। অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমার অনশন চলবে।
এদিকে জাতীয় পার্টির স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা-কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। তাদের মতে, জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক অবদান বিবেচনায় না নিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করায় দলীয় ঐক্য প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলমান ছিল। তবে এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির জেলা কিংবা কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরডি