চীনের সামরিক বাহিনী সোমবার ঘোষণা করেছে যে, তারা তাইওয়ানের চারপাশে স্থলবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও রকেট ইউনিট মোতায়েন করে বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। এই মহড়ার উদ্দেশ্য, যুদ্ধ প্রস্তুতি যাচাই করা এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতার দিকে যেকোনো অগ্রগতির বিরুদ্ধে একটি গুরুতর সতর্কবার্তা দেওয়া।
তাইওয়ানের সরকার এই মহড়ার নিন্দা জানিয়ে একে সামরিক ভীতি প্রদর্শন বলে আখ্যা দিয়েছে। খবর সিএনএনের।
চীন ২০২২ সালের পর থেকে তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। সে বছর তৎকালীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইপেই সফর করেন, যা তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শক্ত সমর্থনের একটি বড় ইঙ্গিত ছিল এবং এতে বেইজিং নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়।
চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সর্বশেষ এই মহড়া পরিচালনা করছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাস্ট মিশন ২০২৫’। এই মহড়া তাইওয়ান দ্বীপের চারপাশে পাঁচটি সমুদ্রাঞ্চলে চালানো হচ্ছে—তাইওয়ান প্রণালীতে, এবং দ্বীপটির উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব দিকে।
ঘোষণা অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ১০ ঘণ্টার জন্য ওই সব এলাকায় সমুদ্র ও আকাশসীমায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র শি ই বলেন, এই মহড়ায় ‘সমুদ্র ও আকাশে যুদ্ধ প্রস্তুতি টহল, সার্বিক নিয়ন্ত্রণ দখল’ এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও কৌশলগত এলাকার অবরোধ ও নিয়ন্ত্রণ’ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে জোর দেওয়া হবে।
এই সামরিক মহড়া এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ানের মধ্যে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের একটি ঐতিহাসিক অস্ত্রচুক্তি হয়েছে। এই চুক্তিতে রয়েছে হিমার্স রকেট সিস্টেম, অ্যান্টি-ট্যাংক ও অ্যান্টি-আর্মার ক্ষেপণাস্ত্র, লয়টারিং ড্রোন, হাউইটজার কামান এবং সামরিক সফটওয়্যার।
এছাড়াও, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যের পর এই মহড়া শুরু হয়েছে, যেখানে তিনি বলেন— চীন যদি বলপ্রয়োগ করে তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে, তবে জাপান সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। এই মন্তব্যে বেইজিং তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল।
শি ই বলেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ান স্বাধীনতা’ বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি ও বাইরের হস্তক্ষেপকারী শক্তির প্রতি একটি গুরুতর সতর্কবার্তা। এটি জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য একটি বৈধ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
এবি