এইমাত্র
  • এবার এনসিপি ছাড়লেন মওলানা ভাসানীর নাতি
  • ‘প্রিয় জেবুকে’ নিয়ে জাইমা রহমানের আবেগঘন পোস্ট
  • নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী নুসরাতের
  • চাঁদপুর-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু
  • পবিত্র মাহে রমজান শুরু হচ্ছে কতো তারিখে?
  • অপরাধীরা যাতে সীমান্ত দিয়ে পালাতে না পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • রেললাইন খুলে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা, ট্রেন লাইনচ্যুত
  • এবার সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী ঝুমা
  • পুঠিয়ায় সয়লাব ভেজাল-নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা, নীরব প্রশাসন
  • তাইওয়ান ঘিরে বড় সামরিক মহড়ার ঘোষণা চীনের
  • আজ সোমবার, ১৫ পৌষ, ১৪৩২ | ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    পুঠিয়ায় সয়লাব ভেজাল-নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা, নীরব প্রশাসন

    মো. আরিফুল হক রুবেল, পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ এএম
    মো. আরিফুল হক রুবেল, পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ এএম

    পুঠিয়ায় সয়লাব ভেজাল-নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা, নীরব প্রশাসন

    মো. আরিফুল হক রুবেল, পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:১৩ এএম

    বেশ কিছুদিন আড়ালে থাকার পর আবারও চালু হয়েছে রাজশাহীর পুঠিয়ায় রং ফর্সাকারি ভেজাল ও নামিদামি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল কসমেটিক তৈরির কারখানাগুলো। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রায় ডজন দুয়েক ভেজাল রং ফর্সাকারি কারখানা।

    এসব ভেজাল কারখানার ব্যাপারে গত ৮বছর পূর্বে পুঠিয়া উপজেলা প্রশাসনকে অভিযান ও বন্ধের নির্দেশনা আসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। তবে প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় এখনও বন্ধ হয়নি কারখানাগুলো। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত কারখানার মালিকরা ভেজাল ও অবৈধ রং ফর্সাকারী প্রসাধনীগুলো প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের নামিদামী দোকান এবং বিউটিপার্লারগুলোতে পৌছে দিচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে।

    এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানা পুলিশ-উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের মদদের কারণে এসব ভেজাল ক্রিম উৎপাদনকারী কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছে না।

    জানাগেছে, উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার কিছু অসাধু ব্যক্তি দীর্ঘদিন থেকে এসব রং ফর্সকারী নকল ও ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করে আসছে। বিভিন্ন কারখানার মালিক তাদের উৎপাদিত ভেজাল প্রাসাধনীগুলো সারাদেশে বাজারজাত করছে। যা মানবদেহের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    ভেজাল ক্রিম কারখানাগুলো বন্ধ ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গত ২০১৭ সালের ১৬ মে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের যুগ্মসচিব স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করেন। এ ছাড়াও রাজশাহী জেলা প্রশাসকসহ পুঠিয়া ও চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর প্রেরণ করা হয়। ওই নির্দেশনা পত্রে ১২টি ভেজাল ও অবৈধ ক্রিম কারখানার নাম উল্লেখ করে সেগুলি বন্ধের নির্দেশনায় রয়েছে।

    এর মধ্যে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় মর্ডাণ হারবাল, রুপসী গোল্ড, মেডোনা স্পট ক্রিম ও হারবাল, চ্যালেঞ্জার হারবাল ও প্রসাধনী, ডিজিটাল হারবাল, উপজেলার অন্যান্য এলাকায় সীনা স্পট ক্রিম, রোমাঞ্চ হারবাল ও স্পট ক্রিম, ডায়মন্ড স্পট ক্রিম, ঝিলিক সলিসন, লাউস ষ্টার গোল্ড ও আইকন হারবাল, লাকি সেভেনস্পট ক্রিম এবং জ্যোতি বিউটি হারবাল এর নাম রয়েছে। পত্রে আরও উল্লেখ আছে, ক্রিম কারখানার মালিকরা বিএসটিআই কর্তৃক মাত্র দু’একটি পণ্যের অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু কারখানার মালিকরা গোপনে বিভিন্ন লোভনীয় মোড়ক ব্যবহার করে ভেজাল মিশ্রিত একাধিক পণ্যে উৎপাদন করছে।

    এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কারখানাগুলো বন্ধ হওয়ার নির্দেশনা আসার পর অনেক কারখানার মালিক ইতোমধ্যে তাদের নাম পালটে ফেলেছেন।

    কারখানার মালিকরা বিভিন্ন দোকান থেকে ফেয়ার এন্ড লাভলি ও রেমি স্পট ক্রিম, তিব্বত স্নো সংগ্রহ করেন। এরপর মানবদেহের ক্ষতিকারক স্টিলম্যান, টিয়ারিক এসিড, আইসোপ্রোপাইল, মাইরিস্টড, স্পিরিট, আরসি, সাধারণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে রং ফর্সাকারী ক্রিম ও বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরি করছেন। তারা প্রাহকদের প্রতারিত করতে বাহারী বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আকৃষ্ট করছেন। এ সব পণ্য ক্রয় করে জনসাধারণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগস্থও হচ্ছেন। পাশাপাশি ক্রেতারা ওই ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

    পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা আছে, থানা পুলিশ-উপজেলা প্রশাসনসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা ওই সব ভেজাল নকল প্রসাধনী কারখানার মালিকদের নিকট থেকে সুবিধা নিয়ে আসছেন। যার কারণে উপজেলা প্রশাসন ওই অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকারী ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এতে করে ওই কারখানার মালিকরা দেদারছে অবৈধ ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও বিপনন করছেন। ওই নির্দেশনার প্রায় আট-বছর অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে ভেজাল প্রসাধনী কারখানাগুলোতে উপজেলা প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ বা বন্ধ করছে না। এতে করে ভেজাল প্রসাধনী কারখানার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

    এ ব্যাপারে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহমুদা হোসেন জানান, মানুষের মুখমন্ডল ও চর্ম অতি সুক্ষ। আর স্টিলম্যান, টিয়ারিক অ্যাসিড, আইসোপ্রোপাইল, আরসি, স্পিরিট, মাইরিস্টেডসহ বিভিন্ন উপকরণ মিশ্রণ করে বিশেষভাবে তৈরিকৃত স্পট ও রং ফর্সাকারী ক্রিমগুলো ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি ও ক্যান্সারের মত মারাক্তক রোগ দেখা দিতে পারে। তাই বাজারে আসা বিভিন্ন হারবাল কোম্পানির রং ফর্সাকারী স্পট ক্রিম পাওয়া যায়। এগুলো পরিহার করাই ভালো।

    এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমান জানান, কারখানাগুলো বন্ধের নির্দেশনার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে অচিরেই নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    ইখা

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…