অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: চলতি বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ, ডিজেল, সার ও কীটনাশকসহ কৃষি খাতে সব কিছুর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা থাকলেও বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা এক সপ্তাহ থেকে এ অ লে কিছুটা শীত ও ঠান্ডার তীব্রতা কমে যাওয়ায় উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন জুড়ে কৃষকরা সকালে শীতের মধ্যেও কোমর বেঁধে মাঠে বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পাড় করলেও গত বছরের চেয়ে এবছর বোরো চাষে খরচ বেড়ে যাওয়ায় চরম শঙ্কাও দেখা দিয়েছে তাদের মাঝে।
বিদ্যুত, ডিজেল ও সার কীটনাশক দাম হু-হু-করে বেড়ে যাওয়ায় অনেকটা বিপাকে চাষিরা। এ অ লের প্রধান ফসল বোরো তাই চোখে-মূখে দুচিন্তার ভাস থাকলেও বোরো চাষে মাঠে নেমেছেন। কেউ জমি হাল-চাষে ব্যস্ত, কেউ বীজতলা থেকে চারা তুলতে ব্যস্ত, কেউ জমিতে চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এভাবে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত চাষিরা বোরো চাষে কট্টর পরিশ্রম করেই যাচ্ছে।
উপজেলার কুরুষাফেরুষা এলাকার কৃষক আবুল কাসেম ও শৈলান চন্দ্র রায় জানান, বিদ্যুত,সার তেলসহ কৃষি খাতে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এবছর বোরো চাষে খরচ বেড়েছে। ফলে এবছর ১ বিঘা জমিতে ডিজেল চালিত শ্যালেমেশিনের পানির ভাড়া ১৫০০ টাকা ও বিদ্যুত চালিত সেচের পানির ভাড়া ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা। এই দুই কৃষক আরো জানান, সার ও কীটনাশকসহ কৃষি খাতে সব ধরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা চরম দুচিন্তায় পড়েছি।
গত বছর ১ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এবছর ১ বিঘা জমিতে বোরো চাষাবাদে খরচ বেড়ে ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা। তবে এই দুই কৃষকের দাবী ধানের দাম কমপক্ষে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা মন হলে লাভের মূখ দেখতে পারবে কৃষক। তা না হলে কৃষকের লোকসান গুনতে হবে।
বালারহাট বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী তপন চন্দ্র রায় ও কালিপদ রায় জানান, গত বছর ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য ছিল ৮০০ টাকা ও টিএসপি ৮০০ টাকা। এবছর সরকারি ভাবে ইউরিয়া সারের মূল্য ১১০০ টাকা ও টিএসপি সারের মূল্য ১১০০ টাকা। সেই সাথে কীটনাশকের কাঠুন গত বছর ছিল ৫ হাজার টাকা। এবছর ৮ হাজার টাকা বলে জানান এই দুই ব্যবসায়ী। তারা সামান্য লাভ নিয়ে বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ১০ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা জমিতে বোরো রোপন করেছে। যেভাবে চাষিরা বোরো চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন আশাকরছি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ উপজেলায় বোরো চাষাবাদ শেষ হবে। আমরা এবছর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে ৭ হাজার কৃষককে সার, বীজসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও কৃষকদের খরচ কমাতে এ ডাব�ু ডি পদ্ধুতিসহ বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুক?লে থাকলে কৃষকরা আশানুরুপ ফলনের পাশাপাশি ভাল দামেও পাবে বলে আমার বিশ্বাস।