ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় শ্রেণিকক্ষে আটকে বাবা ও ছেলেকে পিটুনি ও অমানবিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চার আসামিকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুর জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট কোর্টের ৫ নং আমলী আদালতে পুলিশ আসামিদের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ওই আদালতের বিচারক মো. মারুফ হাসান প্রত্যেক আসামির একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
একইদিন সন্ধ্যায় ফরিদপুর কোর্ট পুলিশের জিআরও মো. ইউসুফ শেখ এসব তথ্যে নিশ্চিত করেছেন।
তবে রিমান্ড শুনানি শেষে আসামিদের জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আসামীদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে বলে জানান মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম।
আসামীরা হলেন, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি গ্রামের আসাদুল মোল্যার ছেলে ফরমান মোল্যা (২১), একই গ্রামের শাহজাহান মোল্যার ছেলে সজীব মোল্যা (২২) এবং একই উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের নবিয়াল শেখের ছেলে জুবায়ের শেখ (২০) ও নূর ইসলাম ভূইয়ার ছেলে হাসিব ভুইয়া (২০)।
এর আগে সোমবার (২৭ মার্চ) ফরিদপুর জেলাসহ জেলার বাইরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওইদিনই তাদের ফরিদপুরের কোর্টে প্রেরণ করা হয়। তবে আদালত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) শুনানির দিন ধার্য করেন।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত ওই চার আসামিকে আদালতের কাছে ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। তবে আদালত শুনানি শেষে একদিন করে ওই চার আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ফরিদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, পুলিশ এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। এরমধ্যে প্রধান আসামি কুতুবউদ্দিন আদালত থেকে জামিনে আছেন। এছাড়াও এ মামলার অপর দুই আসামী আদালত থেকে জামিনে আছেন। আর সদ্য গ্রেফতারকৃত বাকি চার আসামিকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। অতিশ্রীঘ্রই বাকি আসামিদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধা (১৫) কে পিটুনি ও নির্মম নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠে। ওই ভিডিওতে মাঝকান্দির নাজিমউদ্দিনের মেয়ে রুমার নেতৃত্বে পাশবিক নির্যাতনের ভয়াবহতা ফুটে উঠে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রুমা গ্রেফতার হয়নি। তবে, তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম।
পিএম