রাজধানীর মিরপুরে একসঙ্গে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া চার কিশোরী-শিক্ষার্থীর রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ খবরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টিসহ বৃহত্তর মিরপুরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি বলে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
নিখোঁজ চার শিক্ষার্থীরা হলো- তারমিন আক্তার কল্পনা, সামিয়া, খুশি ও কুলসুম। এর মধ্যে তারমিন আক্তার কল্পনা স্থানীয় কাজী আবুল হোসেন হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর খুশি, সামিয়া ও কুলসুম মিরপুর ১৩ নম্বরের আল জাহারা গার্লস একাডেমির অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় নিখোঁজ ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ ডিএমপির মিরপুর বিভাগের কাফরুল থানায় আলাদা আলাদা চারটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
এ বিষয়ে কাফরুল থানা ও নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ ওই চার শিক্ষার্থীরা সবাই একে অপরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। তারা সকলেই কাফরুল থানাধীন মিরপুর -১৩ নম্বরের বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের পরিবারের সাথে বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে একজন স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও অপর তিনজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের এক অভিভাবক কাফরুল থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) উল্লেখ করেছেন, ‘গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকালে তার কিশোরী মেয়ে মাদরাসায় যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। দুপুরের পর খবর আসে সে মাদরাসায় যায়নি। সম্ভাব্য সকল জায়গাসহ আশেপাশের এলাকায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারি, আমার মেয়ে একা নয়- তার আরো তিন বান্ধবী একইভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে তাদের কেউই আর বাসায় ফিরে আসেনি।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, একসাথে চার কিশোরী-শিক্ষার্থীর রহস্যজনক নিখোঁজের বিষয়টি অবশ্যই বেশ উদ্বেগজনক। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিখোঁজ ওই চার শিক্ষার্থীর মধ্যে দু’জনকে ঘটনার আগের দিন পড়াশোনা বা অন্য কোন বিষয় নিয়ে পরিবারের লোকজন বকাবকি করেছিল। এ ঘটনায় অভিমানবশত তারা নিখোঁজ নাকি এর পেছনে অন্য কোন রহস্য আছে সে বিষয়ে গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওসি হাফিজুর রহমান আরো বলেন, ঘটনার দিন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে ধারণা পেতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ির আশপাশের বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নিখোঁজের দিন ওই শিক্ষার্থীরা সবাই একসঙ্গেই অবস্থানের এক পর্যায়ে হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা সিলেটের দিকে যেতে পারে। তবে নিখোঁজ চার শিক্ষার্থীর কারো কাছেই মোবাইল ফোন না থাকায় তাদের প্রকৃত অবস্থান নির্ণয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে দেশের সকল থানায় একসঙ্গে চার শিক্ষার্থীর নিখোঁজ হওয়ার বার্তা পৌছে দিয়েছি। পাশাপাশি সিলেট পুলিশকে এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।