চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ ৩০ এপ্রিল। আর তাই আজ মধ্যরাত থেকে জেলার প্রায় ৪৪ হাজার নিবন্ধিত জেলে নৌকা এবং জাল মেরামত শেষে ইলিশ শিকারে আবারও নদীতে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এদিকে জেলা টাস্কফোর্সের সম্মিলিত অভিযানে জাটকা নিধন প্রতিরোধ অনেকাংশ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
চাঁদপুর সদরের ইব্রাহীমপুর, লক্ষ্মীপুর মডেল, হানারচর ইউনিয়ন ও হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়ন মেঘনাপাড়ের জেলেপল্লিতে গিয়ে দেখা গেছে জেলেদের ইলিশ ধরার প্রস্তুতি।
জেলেরা বলেন, ‘যখন আমরা বুঝতে শিখেছি, তখন থেকে মাছ ধরার কাজে জড়িত এবং এখন পর্যন্ত এই পেশায় আছি। বছরের দুটি সময় মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। তখন আমাদের অন্য কাজ করে সংসার চালাতে হয়। আবার যখন মাছ ধরা শুরু হয়, এর আগে থেকেই ঋণ করে বিভিন্নভাবে নৌকা মেরামত ও জাল কিনে নদীতে নামি। তবে ইলিশ পাওয়ার বিষয়টি আল্লাহর ওপর। নদীতে নামলে অনেক সময় ইলিশ পাওয়া যায়, আবার অনেক সময় খালি হাতে ফিরতে হয়।
তারা আরও বলেন, সরকার থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই অন্য কাজ করে উপার্জন করতে হয়। দুই মাস মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকায় সংসার অনেক কষ্টে চলেছে। এখন ইলিশ পাওয়ার আশা নিয়ে জাল মেরামত করে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
চাঁদপুর নৌ-অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, তারা চাঁদপুর নৌ-অঞ্চলে ২ মাসের পৃথক অভিযানে ৯৯ জনকে আটক করেন। এসময় ২৪৬টি নৌকা, ১৯ হাজার ১৮ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া, ২০ কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার ৭০৪ মিটার জাল জব্দ করা হয়। জরিমানা করা হয় ৯ লাখ ৫৬ হাজার ১০০ টাকা।'
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান দুই মাসের জাটকা রক্ষার অভিযান সম্পর্কে বলেন, ‘এ বছর ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় অভয়াশ্রম এলাকায় ১০টি স্পিডবোট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ এ বছর রমজান মাসেও দিনে-রাতে নদীতে অবস্থান করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, এ বছর জেলা টাস্কফোর্সের কঠোর অবস্থান থাকায় জেলেরা নদীতে নেমেছেন কম। তার পরেও যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেমেছেন, তার মধ্যে তিন শতাধিক জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে।