এইমাত্র
  • আজ থেকে মাঠে নামছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
  • ইরানে এক ইহুদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে
  • ১২ সেকেন্ডের তেলেসমাতিতে ৩০০ কোটি টাকা চুরি
  • আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম
  • ঝিনাইদহ-১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী নায়েব আলী
  • মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
  • টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে: সাঈদ খোকন
  • অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ মিলল শিক্ষকের বাড়িতে
  • চাঁদপুরে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ কার্যক্রম শুরু
  • চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং লিডারসহ গ্রেফতার ৮
  • আজ রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    বেনাপোল দিয়ে পচনশীল পণ্য আমদানি প্রায় বন্ধ, রাজস্ব আয়ে ধ্বস

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১১:০৬ এএম
    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১১:০৬ এএম

    বেনাপোল দিয়ে পচনশীল পণ্য আমদানি প্রায় বন্ধ, রাজস্ব আয়ে ধ্বস

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১১:০৬ এএম

    দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ উচ্চ পচনশীল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সিরিয়ালের নামে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাক আটকে রাখায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে পচনশীল পণ্য আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে চলে গেছে অন্য বন্দরে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েতে শুরু করেছে। রাজস্ব আয়ের একটা বড় অংশ আসে পচনশীল পণ্য আমদানি থেকে।

    জানা যায়, ভারত থেকে পচনশীল পণ্যের একটা বড় অংশ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ফল, মাছ, সবজি, ক্যাপসি ক্যাম, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য পচনশীল পণ্য আমদানি হতো দুপুরের পরপরই। সন্ধ্যার আগেই এসব পণ্য চালান শুল্কায়ন ও খালাশ হয়ে চলে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তুু গত মাস খানেক ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ সিরিয়ালের নামে পচনশীল পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে দুপুরের পর ২০ ট্রাক জেনারেল পণ্যের পর মাত্র ৫ ট্রাক পচনশীল পণ্য রফতানি নিয়ম চালু করেছে। ফলে অধিকাংশ পচনশীল পণ্যচালান দিনের দিন প্রবেশ করতে না পেরে ওপারেই নস্ট হচ্ছে। কোন কোন চালান সিরিয়াল পেয়ে রাতে প্রবেশের অনুমতি পেলেও বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাতে কোন পচনশীল পণ্য খালাশ না দেওয়ায় পরের দিন বন্দর থেকে ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ পণচালান পচন ধরতে শুরু করে।

    পচনশীল পণ্য আমদানিকারকদের দাবি, সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত জেনারেল গুডস আমদানির অনুমতি দেওয়া হোক। শুধুমাত্র পচনশীল পণ্যচালান আমদানির ক্ষেত্রে দুপুরের পর থেকে মাত্র ২/৩ ঘন্টার জন্য একসাথে সব পচনশীল পণ্য চালান আমদানির অনুমতি দিলে পচনশীল পণ্যচালান খুব দ্রুত সময়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়।

    গত মাস খানেক আগেও এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ ট্রাক পচনশীল পণ্য আমদানি হতো। যা থেকে সরকার প্রতিদিন ১৮-২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছিল। ফলে বর্তমানে আমদানির সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫ থেকে ১০ ট্রাকে। যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পচনশীলপণ্য দ্রুত খালাস ও নিষ্পত্তিকরণ বিধিমালা-২০২১ নামে একটি নতুন বিধিমালা জারি করেন। যার আওতায় ৬৩ ধরনের পচনশীল পণ্যের শুল্কায়নসহ সব কর্মকান্ড দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

    চলতি বছরের ৩০ মার্চ ভারতীয় পেট্রাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার অনিল কুমার সিংহ স্বাক্ষরিত এক পত্র জারি করে পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের ম্যানেজারকে বলা হয়েছে পচনশীল পণ্য দ্রুত রফতানির বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ আর্টিকেল নম্বর ৭.৯ ডাবুউ টিও ট্রেড ফেসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী এ আদেশ দ্রুত কার্যকর করতে হবে। কিন্তু ওই আদেশ মানছে না ভারতের পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ।

    পচনশীল পণ্য দ্রুত আমদানিতে সিরিয়ালের নামে দীর্ঘসূত্রিতা প্রথা বাতিল করে পূর্বের ন্যায় আমদানির পণ্য দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের দাবি করেছে আমদানিকারকসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা।

    বেনাপোলের আমদানিকারক রাহাত ট্রেডার্সের মালিক জিয়াউর রহমান জানান, বিগত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কাঁচামাল ও পচনশীল পণ্য আমদানি করে গেছে। পেট্রাপোল স্থল বন্দরের নতুন ম্যানেজার যোগদান করার পর হয়রানি বেড়ে গেছে। সারাদিন বিভিন্ন পণ্যের ট্রাক বেনাপোল বন্দরে রফতানি করলেও সন্ধ্যার পর কাঁচামাল ও পচনশীল পণ্যের ট্রাক পাঠানোর কারণে আমরা মালামাল দিনে দিনে ডেলিভারী নিতে পারছি না। কারণ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যার পর এসব মালের শুল্কায়ন ও খালাস করেন না। পরের দিন এসব মাল খালাস নিতে গেলে দেখা যায় মতকরা ১০ ভাগ মাল পচে নস্ট হয়ে গেছে। এতে আমরা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছি। বাধ্য হয়ে এসব মালামাল অন্যান্য বন্দরে চলে যাচ্ছে।

    বেনাপোল কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, পচনশীল পণ্য সবার আগে প্রবেশ ও খালাসের নির্দেশনা রয়েছে। বিগত দিন এটা চালু ছিল। পেট্রাপোল বন্দরে নতুন ম্যানেজার যোগদান করার পর থেকে তিনি সিরিয়াল ও আন্তর্জাতিক রুল ভঙ্গ করে পচনশীল পণ্যের সাথে সাধারন পণ্য এক করে ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে রফতানি করাচ্ছেন এবং সেটা সন্ধ্যার পর। এতে আমদানিকারকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হবে বলে এসোসিয়েশনসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা আশংকা প্রকাশ করছেন। এ ব্যাপারে অবিলম্বে দুই দেশের কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষ বসে বিষয়টি সুরাহার আহবান জানান তিনি।

    বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে পেট্রাপোল বন্দর ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি। ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা জানিয়েছি। অন্যান্য পণ্যের সাথে পচনশীল পণ্যের ট্রাক সারাদিন ব্যাপী বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে সে অনুযায়ী সিরিয়াল মেইনটেন করার তাকে আমি অনুরোধ করেছি।

    বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার মো: শাফায়েত হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত বেনাপোলের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে রফতানিকৃত ট্রাকের সিরিয়ালের নামে এক ধরণের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। পচনশীল পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য রফতানিতে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে বেনাপোল বন্দরে আগের তুলনায় আমদানি কমে গেছে। আমদানিকারকরা তাদের সুবিধার্থে অন্য বন্দরের দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্বও কমছে।

    এআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…