এইমাত্র
  • নতুন রেকর্ড গড়লেন ফারহান
  • বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে
  • পাকিস্তানে ট্রাক খাদে পড়ে একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
  • নরসিংদীতে পুকুরে মিলল নারীর মরদেহ
  • আর ভিডিও বানাবে না পাকিস্তানি খুদে ভ্লগার সিরাজ
  • কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশা চালকরা
  • গোপালগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০
  • ভারতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আজীম
  • বেনাপোলে চোরাই মোবাইলসহ আটক ৪
  • মিরপুরে পুলিশ-অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  • আজ রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    উজানের ঢলের আশঙ্কায় হাওরে রাতেই চলছে ধান কাটা

    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

    উজানের ঢলের আশঙ্কায় হাওরে রাতেই চলছে ধান কাটা

    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৬ মে ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

    দিন রাত সমানতালে কৃষির আধুনিক যন্ত্র হারভেষ্টার মেশিনে ধান কাটা চলছে। একদিকে বৃষ্টি অপরদিকে হাওরে উজান থেকে নেমে আসতে শুরু করেছে পানি৷ এই চিন্তা থেকে শেষ মুহূর্তে কৃষকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছে আগেভাগেই স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে। কৃষকদের সাথে পরিবারের সবাই যুক্ত হয়েছে কাজে।

    কিশোরগঞ্জের হাওরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রচণ্ড দাবদাহ ও রোদের মধ্যে হাওরের কৃষকরা ধান শুকিয়ে ঘরে তুলছেন। বিভিন্ন এলাকার ৩০ হাজারের বেশি শ্রমিক ধান কাটার কাজ করছেন।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী সোমবারের মধ্যে কিশোরগঞ্জের শতভাগ বোরো ধান কাটা শেষ হবে। ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, নিকলি ও তাড়াইলের বড় বড় হাওরের ৮৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন হাওরে চলছে ধান শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজ। ধান শুকানোর পাশাপাশি দিন-রাত হাওরের প্রত্যেক বাড়িতে চলছে ধান সেদ্ধ দেওয়ার কাজ।

    ধান মাড়াইয়ের পর ধান সেদ্ধ দেওয়ার কাজ করেন বাড়ির নারীরা। বড় তেলের ড্রামে পরিমাণমতো পানি দিয়ে ধানের চিটা অথবা শক্ত লাকড়ি দিয়ে ধান সেদ্ধ দেওয়া হয়। এরপর পুনরায় শুকিয়ে চাল তৈরির উপযোগী করা হয়। ধান থেকে চাল করার যে প্রক্রিয়া সেটি একমাত্র হাওরের বিভিন্ন গ্রামে গেলেই চোখে পড়বে।

    সরেজমিনে হাওরে গিয়ে দেখা গেছে, হাওরের বেশির ভাগ এলাকার ধান কাটা শেষ। সোমবার রাতেও হারভেষ্টার মেশিনে ধান কাটতে দেখা গেছে। ২৫ শতাংশ একটি জমির ধান ৩০ মিনেটে কেটে ফেলা হয়েছে৷ একি মেশিনে ধানের খর ফেলে ধান গুলো স্তুপ করে রাখছে৷ সারারাত চলবে এভাবে ধান কাটা। অধিকাংশ জমির ধান কাটা শেষ। এখন চলছে ধান শুকিয়ে ঘরে তোলার প্রস্তুতি। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকরা স্বস্তিতে ঘরে ধান তুলতে পেরেছেন। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও হাওরের বোরো ফসল কাটতে আসা শ্রমিকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

    কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে গত দুইদিনের বৃষ্টিতে কিছু নিচু জমিতে পানি জমেছে৷ ফলে কাটা ধানগুলি জমিতে স্তূপ করে রাখা৷ এছাড়াও ধান মাড়াই করার খলায় পানি জমে থাকায় কাজ করা যাচ্ছেনা। ধান শুকানোর পরিবর্তে সবাই এখন ধান কাটাতে মনযোগী। কারণ বৃষ্টির পানিতে ফসল তলিয়ে গেলে স্বপ্ন পানির নিচে চাপা পড়বে৷ বৃষ্টিতে স্বস্তি এলেও কৃষকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। কেনোনা শিলাবৃষ্টিতে শেষ মুহূর্তে ধানের ক্ষতি হলে বড় বিপর্যয় ঘটবে কৃষকের তাই এতো চিন্তা।

    আচমিতা ভিটাদিয়া এলাকার কৃষক সফর আলী বলেন, আমার ২৫ শতাংশ জমি আজ রাতেই কাটা হয়েছে৷ ভেবেছিলাম নিজেরা কাটবো৷ কিন্তু আবহাওয়ার অবস্থা ভালো না৷ তাই বৃষ্টির চিন্তা মাথায় রেখেই মেশিনে কেটে ফেলছি৷ এখন দুশ্চিন্তা আর নাই। রাতেই ধান বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।

    এ বছর কিশোরগঞ্জের ইটনা, অষ্টগ্রাম, মিঠামইন হাওরসহ নিকলী, বাজিতপুর, তাড়াইল, করিমগঞ্জ, কটিয়াদী এবং উজান এলাকার অন্যান্য উপজেলায়ও বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের দামও ভালো। মাড়াইস্থলে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে আটশ থেকে সাড়ে নয়শ টাকায়।

    ইটনা উপজেলার শিমুলকান্দি গ্রামের কৃষাণী মাফুজা আক্তার বলেন, বোরো ধান কাটা, ঝড়া হয়ে গেছে। খাওয়ার ধান রেখে বাকি ধান বিক্রিও হয়ে গেছে। ছয় মাসের জন্য ঘরের চাল তৈরি করতে হবে। তাই ভোররাতে ধান সিদ্ধ করেছি তাই এখন রাস্তায় শুকাচ্ছি।

    কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর আবাদ হয়েছে হাওরে। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৫ টন ধান। যা বিক্রি হবে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু দিনের মধ্যেই বাকি ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।

    কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সাত্তার বলেন, হাওরে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক কাজ করছে৷'উঁচু-নিচু এইটা হাওরের একটা বড় সমস্যা। অতি বৃষ্টি হলে ধান ডুবে যায়। এর ফলে কৃষকরা নিচের দিকে ধান কেটে উপরের দিকে আসছে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…