মানুষ ছাড়াও পৃথিবী আরও অনেক প্রাণী আছে যাদের বয়স ১০০ বছরও অতিক্রম করে। আবার এমন অনেক প্রাণী আছে, যাদের আয়ু এতোটাই কম যে সময়ের মাপকাঠিতে বিশ্বাস করতেই কষ্ট হবে।
প্রাণীজগৎ বড়ই অদ্ভুত! একদিকে যেমন রয়েছে গ্রাস স্পঞ্জের মত প্রাণী,যারা ১০ হাজার বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে, তমনি রয়েছে এমন এক প্রাণী, যেকিনা বাঁচে মাত্র ৫ মিনিট থেকে বড়জোর ২৪ ঘণ্টা। বলা হয়, এই প্রাণীটিই সবথেকে কম সময় বাঁচে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে কম আয়ু যে প্রাণীর তার আয়ুষ্কাল মাত্র ৫ মিনিট। খুব বেশি হলে বাঁচতে পারে ২৪ ঘণ্টা। তাই বেঁচে থাকা অবস্থায় এরা যত বেশি সম্ভব প্রজনন করে যায়। যে রহস্যভেদ করা এখনো মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আবার ‘হাউসফ্লাই’ নামে আমরা সাধারণ যেসব মাছি দেখি সেগুলোর জীবনচক্রও দ্রুত শেষ হয়ে যায়। এদের জীবনকাল কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে।
এরপরই নাম আসবে ড্রোন অ্যান্ট বা পুরুষ পিঁপড়ারা। এই পিঁপড়া বাঁচে মাত্র কয়েক সপ্তাহ। স্ত্রী পিঁপড়ার সঙ্গে মিলিত হওয়াই এদের সারা জীবনের কাজ।
মাছির আয়ুও খুব কম। বাঁচে মাত্র ১৫-৩০ দিন। অন্যদিকে দীর্ঘায়ুর প্রাণীর নাম জানেন? জেলিফিসকে ‘অমর’ বলা হয়। ব্যাকওয়ার্ড এজিং জেলিফিশ প্রাণিবিদদের কাছে পরিচিত টারিটোপসিস ডোরনি নামে।
যে মশাকে দেখামাত্রই আমরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করি, সেই মশাও বেশি দিন বাঁচে না। বড়জোর দু-এক সপ্তাহ বেঁচে থাকা এই প্রাণীটি তার প্রজনন বাড়াতে সাধারণত মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর রক্ত পান করে।
কয়েক সপ্তাহ বাঁচতে পারে ‘ড্রাগনফ্লাই’ নামের সাধারণ ফড়িংও। ক্ষিপ্র এই প্রাণীটি সাধারণত পানির কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করে।
ডায়রিয়ার সংক্রমণের জন্য দায়ী গ্যাস্ট্রাইটিস নামে এক ধরনের পরজীবী ব্যাকটেরিয়ার আয়ুষ্কাল বড়জোর ৩ দিন হতে পারে।
গ্রিনল্যান্ড হাঙ্গর প্রায় ২৭২ থেকে ৫১২ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময় ও দীর্ঘজীবী মেরুদণ্ডী প্রাণী। এরা আর্কটিক মহাসাগর ও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের গভীরে বাস করে। ধীর বৃদ্ধির হার ও সম্ভবত মেরামতের বিশেষ জিনের কারণে এদের আয়ু এতো বেশি বলে ধারণা করা হয়।
রকফিশ দীর্ঘজীবী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। রকফিশ ২০০ বছরেরও বেশি বেঁচে থাকতে পারে। সেবাস্টেস অ্যালেউটিয়ানাস নামের রকফিশ ২০৫ বছর বেঁচে থাকার রেকর্ড গড়েছে।
রকফিশের দীর্ঘজীবী হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত নন। তবে কিছু সম্ভাব্য কারণ আছে। এদের বিপাকক্রিয়া খুব ধীর, ফলে তাদের কোষ ক্ষয়ের হার কম। সমুদ্রের তলদেশে পাথরের মধ্যে লুকিয়ে থাকার স্বভাবের কারণে এদের বলা হয় রকফিশ।
বোহেড তিমি বেলেনিডা তিমি পরিবারের একমাত্র জীবিত প্রতিনিধি। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী বিশালাকার প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। একদল গবেষক বোহেড তিমির জিন বিশ্লেষণ করেছেন দেখেন, এটি ২৬৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই তিমি ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা ও ২০০ টন পর্যন্ত ওজনের হতে পারে।
এইচএ