এইমাত্র
  • সদরপুরে প্রার্থীদের নিজ উদ্যোগে নির্বাচনী ব্যানার অপসারণ
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা
  • শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • দেশের সব নির্বাচন অফিসে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
  • স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রী ও প্রেমিক আটক
  • রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্দে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা চান এরদোয়ান
  • ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করছে না বিএনপি
  • ছুটির দিনেও খোলা থাকবে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়
  • ওসমান হাদির ওপর হামলার পর পানছড়ি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার
  • আজ রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    মাটি লুটের উৎসবে সেনা-পুলিশের অভিযান, আটক ৩ ডাম্পার

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম

    মাটি লুটের উৎসবে সেনা-পুলিশের অভিযান, আটক ৩ ডাম্পার

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম

    দিনে সবকিছু স্বাভাবিক হলেও রাত নামলেই কৃষিজমিতে শুরু হয় মাটির লুট। এস্কেভেটরের চিৎকারে কেঁপে উঠে সুনসান জনপদ। স্থানীয়রা জানতেন, এই তাণ্ডবের পেছনে রয়েছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। কিন্তু মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সেই সিন্ডিকেটের ঘাঁটিতে হানা দেয় উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

    চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীরখীল এলাকায় এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন বিশ্বাস। তার সঙ্গে ছিলেন সাতকানিয়া সেনা ক্যাম্পের মেজর ফারহান এবং সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম।

    স্থানীয় সূত্র জানায়, রাতের আঁধার ভেদ করে হাজীরখীল পয়েন্টে যখন একসাথে সেনাবাহিনীর গাড়ি, পুলিশের গাড়ি ও উপজেলা প্রশাসনের টিম পৌঁছায়, তখন চারদিক অন্ধকার হলেও লুটেরাদের মুখে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি টের পেয়েই মাটিখেকোরা পালিয়ে যায়। এর আগেও প্রশাসনের টহল আসার খবর পেয়ে বারবার পালিয়ে বেঁচেছে তারা। তবে এবারের অভিযানে ধরা পড়ে যায় তিনটি ডাম্পার। দুটি এস্কেভেটর বিকল করে দেয়া হয় ঘটনাস্থলেই। তবে গ্রেফতার এড়িয়ে যায় মূল হোতারা।

    হাজীরখীল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক কৃষি জমির উপরিভাগ ইতিমধ্যেই উজাড় করে ফেলা হয়েছে। একসময় যেখানে ধান–শাকসবজির চাষ হতো, সেখানে এখন গর্ত আর গর্ত।

    স্থানীয় এক প্রবীণ কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “রাত হলেই ট্রাক আসে। বিশাল বিশাল এস্কেভেটরে আমাদের জমি কাটে। কিছু বললেই ভয় দেখায়।”

    প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ টপসয়েল ব্যবসা চালিয়ে আসছে প্রভাবশালী মহল। জমির মালিকদের অনেককে ভয়ভীতি দেখিয়ে কম দামে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে সামাজিকভাবে হেনস্তা বা হুমকি দেওয়া হয়।

    সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “জনস্বার্থে আমাদের এই অভিযান চলবে। যারা কৃষিজমি নষ্ট করে ব্যক্তিস্বার্থে মাটি বিক্রি করছে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গতরাতের অভিযান তারই অংশ। সামনে আরও বড় পরিসরে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”

    হাজীরখীলের মতো ঘটনা সাতকানিয়ায় নতুন নয়। রাতের আঁধারে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে দিনের পর দিন। প্রশাসন অভিযান চালালেও মূল হোতারা বেশিরভাগ সময়ই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই ধরণের অভিযান কি আদৌ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দিতে পারবে?

    জনগণের দাবি, শুধু মোবাইল কোর্ট বা অভিযান নয়, প্রয়োজন স্থায়ী নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তা না হলে কৃষিজমির অস্তিত্বই একদিন ইতিহাস হয়ে যাবে।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…