এইমাত্র
  • ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
  • ওসমান হাদি বলেছিলেন 'মৃত্যুর ফয়সালা জমিনে নয়, আসমানে হয়'
  • শাহবাগ অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা
  • হাদির খুনিদের ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত ভারতীয় হাইকমিশন বন্ধ থাকবে: সারজিস
  • কিছুক্ষণের মধ‍্যে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ’বিপ্লবী ওসমান হাদিকে মহান আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করুন’
  • হাদির মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক
  • ওসমান হাদির মরদেহ দেশে আনা হবে শুক্রবার
  • রুমীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে যা বলল এনসিপি
  • ’আবরার ফাহাদ-আবু সাঈদের কাতারে যুক্ত হলেন ওসমান হাদি’
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ, ১৪৩২ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    রাত কাটছে নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

    রাত কাটছে নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

    বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার সন্ধ্যা নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট, কমলাপুর, আশোয়ার, চথলবাড়ি, নারকেলী, চৌধুরীর হাট, কালিরবাজার গ্রামে অব্যহত ভাঙ্গনের প্রায় দুই শতাধিক বাড়ি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

    এছাড়া ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বরিশাল এলজিইডি কর্তৃক তিন কোটি ব্যায়ে নির্মিত আশোয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি (সাইক্লোন সেন্টার) যে কোন সময় নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

    স্থানীয় লোকজন, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও সংশ্লিষ্টরা জানান, উজিরপুর উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত বরিশালের ঐতিহ্যবাহি সন্ধ্যা নদী।

    দীর্ঘ দিন যাবত সন্ধ্যা নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট, কমলাপুর, আশোয়ার, চথলবাড়ি, কালিরবাজার ভেড়ীবাঁধসহ এ উপজেলার অধিকাংশ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সম্প্রতি সময়ে নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট, হানুয়া, আশোয়ার গ্রাম।

    নদীর তীব্র স্রোতে গুঠিয়া ইউনিয়নের চরমলঙ্গা থেকে আশোয়ার পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকায় অব্যাহত ভাঙ্গনে উজিরপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে রৈভদ্রাদী, দাসেরহাট, আশোয়ার গ্রামের বিশাল অংশ।

    নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে শত বছরের পুরানো রাস্তাঘাট, স্কুল-মসজিদ, বাড়ি, ভেরীবাঁধ ও ফসলী জমি।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সন্ধ্যা নদীতে জোয়ারের পানির চাপ ও তীব্র স্রোত থাকায় নদীর অব্যহত ভাঙ্গনে গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট খেয়াঘাট সংলগ্ন বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং ভাঙ্গনে আওতায় নদীর বুকে ঢলে পরে আছে আরো বেশ কয়টি দোকান ঘর। এছাড়া চৌধুরীর হাট বাজারটিও ভাঙ্গন কবলিত।

    অপরদিকে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়ে গুঠিয়া ইউনিয়নের হানুয়া, কমলাপুর, দাসেরহাট, বান্না ও আশোয়ার গ্রামের বিস্তীর্ন এলাকার ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

    ভাঙ্গন কবলিত নদীর গ্রাসের অপেক্ষায় রয়েছে বরিশাল এলজিইডি কর্তৃক তিন কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত আশোয়ার গ্রামের সাইক্লোন শেল্টার (আশোয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)।

    এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এ এলাকা ভাঙ্গন কবলিত হলেও ভাঙ্গনরোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা। আমাদের অনেকেরই পাকা বাড়ি ঘর সহায় সম্পদ ছিল কিন্তু আজকে আমরা নিঃস্ব। কেউ কেউ ভিটেমাটি হারিয়ে এলাকা ছেড়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ভাঙ্গনরোধে পদক্ষেপ নেয়াতো দূরের কথা আমাদের খবর নেননি কেউ।

    সরকারি অর্থে নির্মিত লঞ্চঘাটের ছাত্রী ছাউনীটি নদীতে বিলীন হয়ে গছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছে যাত্রীরা। বাড়ি ঘর, বাজার ঘাট, দোকানপাট ফসলীসহ বিস্তীর্ন এলাকার ভাঙ্গনে প্রায় দুই সহস্রাধিক মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে।

    রিয়াজ নামে এক স্থানীয় জানান, জমাজমি বাড়িঘরসহ তার সব কিছুই ছিল। নদী ভাঙ্গনে সব হারিয়ে বর্তমানে তাকে ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে। শুধু তাই নয় আমিসহ প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।

    নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থরা বলেন, ভাঙ্গনে ভিটেমাটি হারিয়ে মোরা এ্যাহন ঠিকানাছাড়া সাওরে ভাসতেছি। পোলাপান লইয়া দুরাবস্থায় আছি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা নদী ভাঙ্গনের কবলে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ন অবস্থানে রয়েছি।

    ভাঙ্গন ভবনের একদম কাছাকাছি যে কোন সময় বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

    স্থানীয় বেল্লাল কুদ্দুস বলেন, উজিরপুর উপজেলার ৯নং গুঠিয়া মডেল ইউনিয়ন পরিষদের শতবছরের ঐতিহ্যবাহী পুরানো দাসেরহাট বাজার মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, দাসেরহাট সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়, কমলাপুর সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়, হানুয়া সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়, হানুয়া দাখিল মাদ্রাসা, আশোয়ার সঃ প্রাঃ বিদ্যালয় সহ শত শত বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গণ থেকে রক্ষার জন্য ব্লক ফালানোর র্দীঘ দিনের দাবিতে এলাকারবাসীর।

    এ বিষয়ে গুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে গুঠিয়া ইউনিয়নের বড় একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে দাসেরহাট, বান্না, কমলাপুর ও আশোয়ার ভাঙ্গন চলছে। আর নিঃশ্ব হচ্ছে দিন খেটে খাওয়া মানুষ গুলো।

    নদীর ভাঙ্গন নিয়ে কয়েক বার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষসহ এলাকাবাসী মানববন্ধন ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেও কোন স্থায়ী সমাধান এখন পর্যন্ত পাননি। তিনি আরো বলেন, বছর দুয়েক আগে দাসেরহাট নামক স্থানে বরাদ্দ হওয়া বাজেট দিয়ে কিছু জিওব্যাগ ফালানো হয়েছে। এরপর থেকে নদী ভাঙ্গন নিয়ে কোন স্থায়ী কোন সমাধানের উদ্দ্যোগ নেইনি সরকার।

    বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রকল্প গ্রহন করে ভাঙ্গন রোধ করতে হলে অর্থের প্রয়োজন। বাজেট পাঠানো হয়েছে অর্থ বরাদ্ধ হলে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী দিয়ে প্রকল্প তৈরী করে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…