এইমাত্র
  • লোহাগাড়ায় ইটভাটায় অভিযান-জরিমানা
  • নারায়ণগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবি
  • আজও হাত মেলায়নি ভারত-পাকিস্তান
  • মিরসরাইয়ে জুলাই যোদ্ধা তাহমিদ হত্যায় ছাত্রদল কর্মী গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ
  • এবার হলিউডে নাম লেখালেন রোনালদো!
  • আইপিএল নিলাম থেকে বাদ পড়লো ৯ ক্রিকেটারকে
  • মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা, হাদির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক
  • হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, বিদেশে নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে: চিকিৎসক
  • মেসিকে ‘দখলে’ নিতে দুই মন্ত্রীর দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলা
  • আজ রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    কিশোরগঞ্জে অপরিপক্ব ফলে মেশানো হচ্ছে বিষ, নেই প্রশাসনের তদারকি 

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম
    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম

    কিশোরগঞ্জে অপরিপক্ব ফলে মেশানো হচ্ছে বিষ, নেই প্রশাসনের তদারকি 

    সাব্বির হোসেন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১২:৪৪ পিএম

    কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আসতে শুরু করেছে মৌসুমি ফল। আম, লিচু, কাঁঠালসহ বিভিন্ন জাতের ফল। মৌসুমি এসব ফল নিয়ে মানুষের মধ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক ভীতি কাজ করছে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে অর্থাৎ পরিপক্ব না হতেই জেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে মৌসুমী ফলের বাজার। চলতি মৌসুমে আম কাঠালের ব্যাপক বেচাকেনা রয়েছে ফলের বাজার গুলোতে। প্রতিদিন এসব ফল কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেন ক্রেতারা। মুখে দিতেই বোঝা যায় রসালো এই ফলটি বিষে ভরা। শুধু আম নয়, মৌসুমি প্রায় সব ফলই এখন বিষে ভরা। বাজারে এখন কেমিক্যাল মিশ্রিত ফলই বেশি।

    অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাচ্ছে। কাজটি এমন কৌশলে করা হয় যাতে ক্রেতারা বুঝতে না পারে। রাসায়নিক মেশানোর পর একদিনের মধ্যে ফল পেকে যায়। কোনোটার রঙ হয় গাঢ় হলুদ, কোনোটা আবার টকটকে লাল। বিক্রির জন্য তাকে সাজিয়ে রাখা হয় দোকানে। জিভে জল আসার মতো এই ফল দেখেই আকৃষ্ট হন ক্রেতারা। ফল ভেবে বিষ কিনে নিয়ে যান প্রিয়জনের জন্য। আম,কাঠাল, কলা, পেঁপেসহ বেশিরভাগ ফলেই কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে। বিশেষ করে বাজারের যেসব আম এসেছে তা এখনও খাওয়ার উপযোগী হয়নি। কিশোরগঞ্জে বাজারে আসতে শুরু করা সাতক্ষীরার আম হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ রাসায়নিক পদার্থ কার্বাইড মিশিয়ে পাকানো হচ্ছে।

    সাধারণত উৎপাদন প্রক্রিয়ার শুরু হতে ভোক্তার হাতে পৌঁছানো অবধি নানা পর্যায়ে জেনে না জেনে পোকা দমন, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ফল পাকানো এবং সংরক্ষণের জন্য প্রাণঘাতী রাসায়নিক ব্যবহারিত হচ্ছে। অপরিপক্ব ফলে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড মিশিয়ে তা দ্রুত পাকানো হয়। দ্রুত পচন ঠেকাতেও কেমিক্যাল মেশানো হয়। এসব রাসায়নিক কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো ফল খেয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে সাধারণ মানুষ। এ বিষয় নেই কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তদারকি। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

    কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সবচেয়ে বড় ফলের আড়ত স্টেশন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রংবেরঙের ফল দেখে মনে হয় এ যেন এক ফলের রাজ্য টসটসে লাল রঙের আমটি হাত দিয়ে ছুঁয়ে ধরলেই হাতে উঠে আসে সাদা রংয়ের পাউডার। রাইপেন নামের কেমিক্যালসহ বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল দিয়ে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে টনকে টন আম সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। এই আম প্রতিদিন জেলা ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে চলে যাচ্ছে।

    চিকিৎসকরা বলছেন, আম পাকানোর জন্য ক্যালসিয়াম কার্বাইড ইনজেকশন দেওয়া হয়। আর্দ্রতার সংস্পর্শে এলে এটি অ্যাসিটিলিন নামক গ্যাস ছড়ায়। এতে আম দ্রম্নত পাকে। এটি আমাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। ত্বকের জ্বালা, শ্বাসকষ্ট এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আবার ফল ব্যবসায়ীরাও আম পাকাতে 'ইথিলিন ট্রিটমেন্ট' ব্যবহার করেন। এ সময় ফলকে ইথিলিন গ্যাসের সংস্পর্শে আনা হয়। এই গ্যাস একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদ হরমোন। যা ফল দ্রম্নত পাকতে সাহায্য করে। আমের মাধ্যমে এসব রাসায়নিক উপাদান শরীরে গেলে ত্বকের ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, জরায়ুর ক্যান্সার, লিভার ও কিডনির সমস্যা, মস্তিষ্কের ক্ষতির মতো মারাত্মক রোগ হওয়র ঝুঁকি বাড়ে।

    আশরাফুল ইসলাম পৌর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাদেকুর রহমান জানান, খালি চোখে সব আম দেখতে সুন্দর হলেও এতে অনেক সময় রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়। এমন অভিযোগ উঠছে বহুদিন ধরেই। আর রাসায়নিক বিষ মেশানো ফল খেয়ে মানুষ রোগাক্রান্ত হচ্ছেন। আম এমন একটি ফল যা সবাই খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী রাসায়নিক পদ্ধতিতে আম পাকিয়ে বিক্রি করেন। কিন্তু এই রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আমে তেমন স্বাদ থাকে না। সেই সঙ্গে রাসায়নিকের পাকা আম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

    পুরানথানা এলাকার ফল ব্যবসায়ি কামরুল ইসলাম জানান, আমি স্টেশন ফলের আরত থেকে আম সংগ্রহ করছি। অপরিপক্ব আমে আমরা কোনও কেমিক্যাল ব্যবহার করি না। পাকা আমই কিনে আনি আড়ত থেকে। ওইখানে কীভাবে আম পাকানো হয়, তা আড়ত ব্যবসায়ীরা বলতে পারবেন।’

    স্টেশন এলাকার সবচেয়ে বড় ফলের আরত সোহান এন্টারপ্রাইজ এর মালিক বাবুল মিয়া জানান, স্বাভাবিকভাবে পাকতে দিলে বিক্রির জন্য অপেক্ষমান সময়ে অর্ধেকের বেশি নষ্ট হয়ে যায়। তাই কাঁচা অবস্থায় কিনে আনা ফল পাকানোর জন্য কৃত্রিম পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়।

    জেলা শহরের কাঁচাড়িবাজার আম বিক্রেতা রালেন জানান, এই আমগুলো ১৫ দিন আগের কেনা পাউডার গুলো দেয়া হয়েছে আম যেন পচন না ধরে এবং আমের রং যেন ভালো থাকে। এই পাউডার কে দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আরত থেকেই এই পাউডার দিয়ে দেয় আমরা কিছু দেই না। তবে সমস্যা কি সবাই তো এই আম কিনেই খাচ্ছে।

    মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ এর মালিক সুমন সাহা জানান, ‘মৌসুমী ফল বাজারে এলে প্রথম দিকে দামটা একটু বেশি থাকে। তবে মানুষ বেশি দাম দিয়েই সেগুলো কেনে। এখন যে ফল বিক্রি করছি, সব আমে কেমিক্যাল মেশানো হয়। ক্রেতা ধরে রাখতে বাধ্য হয়ে এভাবে বিক্রি করতে হচ্ছে।

    এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি ‘সময়ের কণ্ঠস্বরকে’ বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা কেমিক্যাল দিয়ে ফল পাকাচ্ছে বিষয়টি আপনার কাছ থেকে শুনেছি। শিগগিরই অভিযান চালিয়ে দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

    এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…