এইমাত্র
  • লোহাগাড়ায় ইটভাটায় অভিযান-জরিমানা
  • নারায়ণগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবি
  • আজও হাত মেলায়নি ভারত-পাকিস্তান
  • মিরসরাইয়ে জুলাই যোদ্ধা তাহমিদ হত্যায় ছাত্রদল কর্মী গ্রেপ্তার
  • নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ
  • এবার হলিউডে নাম লেখালেন রোনালদো!
  • আইপিএল নিলাম থেকে বাদ পড়লো ৯ ক্রিকেটারকে
  • মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা, হাদির অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক
  • হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত, বিদেশে নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে: চিকিৎসক
  • মেসিকে ‘দখলে’ নিতে দুই মন্ত্রীর দ্বন্দ্বে স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলা
  • আজ রবিবার, ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    চসিকে ‘ফেল’ করেও ফার্স্ট: তদবিরে প্রকৌশলী রুপকের পদোন্নতি

    গাজী গোফরান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (চট্টগ্রাম) প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
    গাজী গোফরান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (চট্টগ্রাম) প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

    চসিকে ‘ফেল’ করেও ফার্স্ট: তদবিরে প্রকৌশলী রুপকের পদোন্নতি

    গাজী গোফরান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (চট্টগ্রাম) প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) নিয়োগ ও পদোন্নতির স্বচ্ছতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক অফিস আদেশে দেখা গেছে, মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হয়েও এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাসীন দলের বাইরের এক প্রভাবশালী নেতার তদবিরে বিধি উপেক্ষা করে এই পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ঘিরে চসিকের ভেতরে যেমন ক্ষোভ বিরাজ করছে, তেমনি প্রশাসনিক মহলেও তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জন।

    পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা রুপক চন্দ্র দাশ উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদ থেকে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে উন্নীত হয়েছেন। গত ২১ এপ্রিল চসিকের এক অফিস আদেশে তাঁকে পদোন্নতির তালিকায় শীর্ষে রাখা হয়। অথচ ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় রুপক পেয়েছেন মাত্র ৯ নম্বর, যেখানে পাস নম্বর ছিল ১০। বাছাই কমিটির দুই সদস্যের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন যথাক্রমে ৪ ও ৫ নম্বর।

    প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মোট আটজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন উত্তীর্ণ হন, একজন অনুপস্থিত ছিলেন এবং চারজন অনুত্তীর্ণ হন। অনুত্তীর্ণদের মধ্যে রুপকের নাম ছিল ষষ্ঠ ক্রমিকে। অথচ মাসখানেক পর প্রকাশিত অফিস আদেশে তাকেই শীর্ষে রেখে পদোন্নতি দেওয়া হয়, যা প্রশ্ন তোলে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও বিধি মানা নিয়ে।

    চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর্মচারী চাকরিবিধিমালা-২০১৯ অনুযায়ী, সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতির জন্য কমপক্ষে আট বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা এবং বাছাই কমিটির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া আবশ্যক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব শর্ত পূরণ না সত্ত্বেও রুপকের পদোন্নতি স্পষ্টভাবে বিধিমালার লঙ্ঘন।

    চসিকের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রুপক চন্দ্র দাশ একসময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার সুপারিশে তাঁকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

    চসিকের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, একদিকে রুপককে মৌখিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বলা হয়েছে, অন্যদিকে তাঁকেই প্রমোশনের তালিকায় শীর্ষে রাখা হয়েছে। দুই বিপরীতমুখী সিদ্ধান্তে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের স্বাক্ষর থাকায় বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।

    উল্লেখ্য, পদোন্নতির জন্য গঠিত বাছাই কমিটির সভাপতি ছিলেন মেয়র নিজেই। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. ফিরোজ মাহমুদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম আল মামুন এবং জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক।

    এ বিষয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সময়ের কণ্ঠস্বর এর সঙ্গে কথা বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। মেয়র শাহাদাত হোসেনের প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

    স্থানীয় সরকার প্রশাসন ও জনসম্পদ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য প্রার্থীকে নিয়মবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি দেওয়া হলে তা সরকারি চাকরিবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে ক্ষমতার অপব্যবহার, পক্ষপাতিত্ব এবং প্রশাসনিক অনিয়ম তিনটি গুরুতর অভিযোগই প্রযোজ্য হতে পারে। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ উল্লেখ করে তাঁরা বলছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

    পদোন্নতির বিষয়ে জানতে রুপক চন্দ্র দাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফোন বন্ধ করে দেন।

    প্রসঙ্গত, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদের অনুমোদিত সংখ্যা ৬ হলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ৩ জন। এই অবস্থায় শূন্য থাকা ৩টি পদের বিপরীতে ৪ জনকে পদোন্নতি দেওয়াও সংখ্যাগত অসঙ্গতির ইঙ্গিত দেয়।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…