এইমাত্র
  • হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে সোমবার
  • সোমবার হাদিকে থাইল্যান্ডে নিতে চায় তার পরিবার
  • আবারও রাজধানীতে বাসে আগুন
  • প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে শোক জানালেন জাতিসংঘ মহাসচিব
  • সেই ফয়সালের সই করা বিপুল চেকসহ আটক ৩
  • সাংবাদিক আনিস আলমগীর ডিবি হেফাজতে
  • কুড়িগ্রামের দুই সেনাসদস্য সুদানে শহিদ, ‘নীরব হওয়ার’ শেষ বার্তা শান্তর
  • বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সাকিব-লিটনের পোস্ট
  • ছোট পুঁজি নিয়েও পাকিস্তানকে হেসে-খেলে হারাল ভারত
  • সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শামীমের বাড়িতে শোকের মাতম
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    আন্তর্জাতিক

    প্রতিবাদ নাকি রাজনৈতিক বিভাজন, কী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে?

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১১:৩১ পিএম
    আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

    প্রতিবাদ নাকি রাজনৈতিক বিভাজন, কী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে?

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৫, ১১:৩১ পিএম

    যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের রাস্তায় মেক্সিকোর লাল-সাদা-সবুজ পতাকার ঢেউ যেন শুধু অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদ নয়, বরং এক নতুন রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার অভ্যন্তরে এই পতাকা উড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক এবং সমালোচনা। এটা কি শুধু মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নাকি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও জাতীয় পরিচয়ের বিরুদ্ধে এক সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ?

    গত শুক্রবার (০৬ জুন) লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের গার্মেন্ট জেলায় অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই) হঠাৎ করেই একাধিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার পরপরই রাস্তায় নামেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী, যারা মূলত ল্যাটিন আমেরিকান অভিবাসী।

    এ বিক্ষোভ প্রথমে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে সহিংসতায় রূপ নেয়। সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ন্যাশনাল গার্ড এবং মেরিন বাহিনী মোতায়েন করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটিকে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম 'অবৈধ দখল' বলে আখ্যা দেন।

    এদিকে বিক্ষোভে মেক্সিকান পতাকার উপস্থিতি রিপাবলিকান রাজনীতিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ওকলাহোমার সিনেটর মার্কওয়েইন মুলিন বলেন, 'এরা শুধু বিক্ষোভকারী নয়, এরা অবৈধ অভিবাসী যারা আমেরিকার আইন লঙ্ঘন করছে।' ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এক্স-এ লিখেছেন, 'বিদেশি পতাকা বহনকারীরা আইন প্রয়োগকারীদের ওপর আক্রমণ করছে।' হোয়াইট হাউজের উপ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার একে সরাসরি 'বিদেশি নাগরিকদের দ্বারা সংঘটিত দাঙ্গা' বলে আখ্যা দেন।

    এই বক্তব্যগুলোর প্রেক্ষিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই ঘটনাগুলো কি কেবল অভিবাসন নীতির বিরোধিতা, নাকি এর পেছনে রয়েছে বিদেশি অনুগততার মাধ্যমে মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা? যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী, বিদেশি পতাকা উড়ানো কিংবা এমনকি আমেরিকান পতাকা পুড়িয়ে ফেলা—দুইই সংবিধানসম্মত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার। তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক বিতর্কের আগুন থেমে নেই।

    উল্লেখ্য, মেক্সিকান পতাকা আমেরিকায় নতুন কোনো প্রতীক নয়। ১৯৯৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রোপোজিশন ১৮৭-এর বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভেও এই পতাকা এক উত্তপ্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিল। তখনও রিপাবলিকান রাজনীতিকরা এটিকে 'আমেরিকাবিরোধী মনোভাবের প্রকাশ' বলে আখ্যা দেন।

    রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাইক ম্যাড্রিড বলেন, 'মেক্সিকান পতাকা উড়ানো রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক—এটি অভিবাসন নীতির বাস্তব আলোচনা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে বিদেশি আনুগত্যের বিতর্ক সৃষ্টি করে।' বিক্ষোভকারীরা অবশ্য একে কোনো ষড়যন্ত্র নয়, বরং সংস্কৃতির প্রতীক বলে দাবি করছেন। ‘ব্রাউন বেরেটস’ সংগঠনের নেতা আন্তোনিও রদ্রিগেজ বলেন, 'এই পতাকা আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে। এটিকে বিভাজনের প্রতীক বানানো অনুচিত।' তিনি আরও বলেন, 'নিজের পরিচয়ের ওপর গর্ব প্রকাশ করা কখনোই অ-আমেরিকান হতে পারে না।'

    এই বিক্ষোভ কি কেবলই আইসিই-এর বিরুদ্ধে ল্যাটিনো সমাজের ক্ষোভ? নাকি এটি এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের অংশ, যেখানে সাংস্কৃতিক গর্বকে হাতিয়ার বানিয়ে অদৃশ্য শক্তিরা বিভাজনের খেলা খেলছে?

    এনআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…