পটুয়াখালীর উপকূলে গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে এবং চরমোন্তাজ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহায়তায় একটি অবৈধ আর্টিসানাল ট্রলিং বোটসহ ১৫ জন জেলেকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড স্লুইজঘাট সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি কাঠের তৈরি ট্রলিং বোট, ৬টি ট্রলিং নেট, ৪০টি লাল সুতার জাল এবং আনুমানিক ১২০ মণ বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ ১৫ জেলে আটক ও সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
আটককৃত জেলেরা হলেন— মো. মান্নান (৩২), মো. মোস্তফা (৪০), মো. সালাউদ্দিন (৩৫), মো. আকবর (৩৩), মো. সুজন মাদবর (৪০), মো. বেল্লাল (৩৬), মো. আবুল কালাম (৫০), আব্বাস (৩০), সুমন মোল্লা (২৬), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫৫), মো. মিরাজ (২৬), মো. নুরনবী (২৯), আব্দুল মালেক (৫০), মো. আক্তার আলী (২২) ও মো. ইয়াসিন (৫০)। সকলের বাড়ি ভোলা জেলার লালমোহন ও চরফ্যাশন থানায়।
গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাশনের জেলেরা গলাচিপার চরবিশ্বাস এলাকার তেতুলিয়া নদীর একটি চ্যানেল ব্যবহার করে সাগরে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চার দিন পর্যবেক্ষণের পর মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, আসামিরা অবৈধ ‘টুলডোর উইন্স’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মাছ শিকার ও মজুদ করেছে, যা সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০ এর ২৮ ও ৫১ ধারায় অপরাধ। জব্দ করা সরঞ্জামাদি ও মাছ মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং নৌ পুলিশের উপস্থিতিতে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মাছের বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়া আটক জেলেদের বিরুদ্ধে গলাচিপা থানায় বুধবার একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গভীর সমুদ্রে এভাবে ট্রলিং বোট দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকারের ফলে দেশের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও মাছের প্রজনন চক্র হুমকির মুখে পড়েছে। ডিম ও পোনামাছ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ দিন দিন বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে গলাচিপা ও আশপাশের এলাকার জেলেরা এসব ট্রলিং বোটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
এনআই