ঢাকা-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের বরগুনার আমতলী অংশটি এখন যেন মৃত্যুফাঁদে রূপ নিয়েছে। মাত্র ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কে গত দুই বছরে ঘটেছে ৫০টিরও বেশি সড়ক দুর্ঘটনা, যাতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৭ জন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরু রাস্তা, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ। থ্রি-হুইলার, মাহিন্দ্রা, ট্রাক্টরসহ অবৈধ যান চলাচল। যত্রতত্র অবৈধ বাজার ও দোকান। বাঁকযুক্ত রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর অভাব, বেপরোয়া গতিতে চলা গাড়ি। এসব কারণেই দুর্ঘটনা বেড়ে চলছে।
সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা:
৫ আগস্ট, ঘটখালীতে ছন্দা পরিবহনের বাসের চাপায় নিহত হন প্রভাষক মো. রেজাউল করিম। আহত হন সহযাত্রী আব্দুল হক মল্লিক।
৬ মে, বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়।
১২ ফেব্রুয়ারি, বাস, থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত হন তিনজন।
বাসচালক হানিফ বলেন, ‘দোকান ও বাজারের কারণে পথচারীরা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকে, দুর্ঘটনা অনিবার্য হয়ে ওঠে।’
শ্যামলী পরিবহনের চালক রফিকুল বলেন, ‘থ্রি-হুইলারগুলো হঠাৎ লেন পরিবর্তন করে, তখন গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় না।’
চালক সোহেল জানান, ‘রাস্তায় অনেক বাঁক আছে, রাতে বোঝা যায় না— প্রতিটি বাঁকে আলো দরকার।’
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘বাঁক ও বাজারের কারণে গতি বারবার কমাতে হয়, এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।’
বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘হাইওয়ে পুলিশের অভাব কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে, তবু আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
পটুয়াখালী সড়ক বিভাগ জানিয়েছে, সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটাগামী পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। যানবাহনের চাপও বেড়েছে বহুগুণে। কিন্তু সড়কের উন্নয়ন সেই অনুপাতে হয়নি। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সবাই।
এসআর