পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও এক কৃষকলীগ নেতাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। সেই কৃষকলীগ নেতার নাম সুকুমার রায়। উপজেলার সোনাহার মল্লিকাদহ ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০২১ সালে স্থানীয় নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীল মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
আওয়ামী লীগ আমলে সোনাহারে সর্দারপাড়ার নিজ বাসায় গণক হিসেবে রোগী দেখতেন ও চিকিৎসা দিতেন। অন্ধ বিশ্বাসের কারণে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন আসায় চিকিৎসা দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। এই পেশাকে পুঁজি করে তিনি শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা ও সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সাথে সখ্যতা থাকায় এতসব ভণ্ডামির পরও পুলিশ-প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন এই গণক।
-68935e8e771f7.webp)
চিকিৎসা দেওয়ার নামে মানুষকে ঠকিয়ে অর্জিত টাকায় ভারতে বাড়ি করেছেন বলেও এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। যার কারণে নিয়মিত যাতায়াতও করেন ভারতে। বেশি কিছু দিন ভারতে থেকে গত দুই সপ্তাহ আগে বাসায় ফিরেছেন এই ভণ্ড গণক। জুলাই অভ্যুত্থানের পর কিছু দিন আত্মগোপনে থাকলেও এখন প্রকাশ্যে দেখা মিলছে সুকুমারের। এলাকার লোকজন নিয়মিত সোনাহার বাজারে তাকে দেখছেন বলে নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, আত্মগোপনে থাকার দিন শেষ তার। কারণ একটি দলের স্থানীয় ও জেলার বেশ কয়েকজন নেতাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে এলাকায় থাকার অনুমতি পেয়েছেন তিনি। এইজন্য দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন যুবদলের এক নেতা বলেন, 'চারদিকে এত গ্রেফতারের খবর কিন্তু সুকুমারের বেলায় পুলিশ নিশ্চুপ।'
আরেকটি সূত্র জানায়, অনেক সময় পুলিশ এলেও তার আগেই বাসা থেকে উধাও হয়ে যান সুকুমার। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ আসার আগেই তথ্য চলে যায় সুকুমারের কাছে।
এইদিকে ভারত থেকে ফেরার পর আবারো স্বল্প পরিসরে বাসায় গণক হিসেবে তার ব্যবসা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এত কিছুর পরও পুলিশের কাছে কোন তথ্য নেই। আবার কেউ তার ব্যাপারে জানালে কোন এজাহারে তার নাম নেই বলে জানানো হয়। স্থানীয়দের দাবি, শুধু সুকুমারকে গ্রেফতারে প্রশ্ন উঠলে পুলিশ এজাহারে নাম খুঁজে।
সুকুমার গ্রেফতার না হওয়ায় মামলা বাণিজ্যের বিষয়টি সামনে এসেছে আবারো। পুলিশের গোপন যোগসূত্র না থাকলে কিভাবে সুকুমার এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকেই।
এই বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, 'তিনি কোন এজাহার নামীয় আসামী নন। আমরা বিভিন্ন মামলায় যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের গ্রেফতার করছি।'
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে জানাতে পারবো।'
পিএম