যশোরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ৯ মামলার আসামি রেজাউল ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়নি। ঘটনার দুই দিন পার হলেও খুনিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নিহতের পরিবারও হত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ বলতে পারছেন না। তবে স্থানীয়রা বলছেন, ইয়াবা গায়েব করা নিয়ে দ্বন্দ্বে রেজাউল খুন হতে পারে। পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্তে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নিহতের স্বজনরা জানান, কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামের মৃত গোলাম তরফদারের ছেলে রেজাউল আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতি করতেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কৃষি কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। নতুন করে কারও সাথে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না তার। কারা কী কারণে রেজাউলকে নৃশংসভাবে খুন করলো, এটা তারা ধারণা করতে পারছেন না।
নিহতের ছেলে মেহেদি হাসান জানান, তার পিতার হত্যার ঘটনায় তারা রাজনৈতিক নোংরামিতে জড়াতে চান না। কারা এই খুনের সাথে জড়িত, এটা তাদের অজানা। যে কারণে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের বিশ্বাস পুলিশ প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করবেন। নিরীহ মানুষদের হয়রানি না করার আহবান জানানো হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শিউলী বেগম জানান, ঘটনার রাতে তার স্বামী রেজাউল বাড়ির ছাদে বসে ছিলেন। মোবাইল ফোনের কল পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু সময় পর এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে তদন্ত করলে খুনের রহস্য বের হতে পারে।
নিহতের ভাগ্নি ময়না খাতুন বরাবরই দাবি করছেন, দৌলতদিহি গ্রামের ওহাব, আইয়ুব খান, ফরিদ ও বাবলুর ইন্ধনে তার মামা রেজাউলকে খুন করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার উদঘাটন হতে পারে।
এর আগে, ১৯৮৯ সালে রেজাউলের পিতা গোলাম তরফদার ও ভাই ইনছার তরফদারকে নিজ বাড়িতে হামলা চালিয়ে খুন করেছিল উল্লিখিতদের স্বজনরা। রেজাউল পরিবারকে নিঃস্ব করতে পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ড।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন জানান, রেজাউল কাশিমপুরের শ্যামনগর গ্রামের 'সিরিয়াল কিলার' মোখলেছুর রহমান নান্নুর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিল। বর্তমানে সরাসরি কোনো অপরাধ না করলেও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে তার চলাচল ছিল। গুঞ্জন রয়েছে, সম্প্রতি মাদক ব্যবসায়ীদের ২ হাজার পিস ইয়াবা গায়েব করে দেয় রেজাউল। এই নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে রেজাউল খুন হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন জানান, ঘটনার রাতে একটি ভ্যানে করে কয়েকজন অপরিচিত লোকজন গ্রামে ঘোরাঘুরি করছিলেন। রেজাউলের সাথে তাদের কথা বলতেও দেখেছেন কেউ কেউ। পূর্ব পরিচিত দুর্বৃত্তরা তাকে খুন করেছে বলে তাদের ধারণা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, রেজাউল হত্যার মোটিভ উদঘাটন ও খুনিদের শনাক্তে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। শিগগির খুনিরা আটক হবে বলে আশাবাদী।
উল্লেখ্য, ১৩ আগস্ট দিবাগত রাতে নিজ বাড়ির সামনের রাস্তায় রেজাউল ইসলামকে নৃশংসভাবে খুন করে দুর্বৃত্তরা।
এইচএ