চাকরিচ্যুত হওয়া শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ হয়েছে। চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পক্ষে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশ নিয়ে কক্সবাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নওশাদ, জিনিয়া ও তারেকসহ অন্তত ২০ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে আন্দোলনে যোগ দিতে সড়কে নেমে আসেন এনজিও থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা। তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতারাও। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাদের আটক করা হয়।
সর্বশেষ দুপুর ২টার দিকে থানায় প্রিজন ভ্যান প্রবেশ মুখের বাধা দিয়ে উখিয়া থানার ওসির পদত্যাগের দাবিতে শ্লোগান ও দেয় বিক্ষোভকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রায় ৪ মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিল। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ চালায়। এতে শিক্ষকরা গুরুতর আহত হন। এ সময় ছাত্রনেতা নওশাদ, জিনিয়া, তারেকসহ অন্তত ২০ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আন্দোলনে থাকা শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি তুলে ধরছিলেন। কিন্তু কোনো উসকানি ছাড়াই পুলিশ বেধড়ক পেটায় এবং কয়েকজন শিক্ষকের মাথা ফেটে যায়। আহতদের মধ্যে অন্তত ৫ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চাকরিচ্যুত শিক্ষক শামীমের বাবা অভিযোগ করে বলেন, বিনা কারণে পুলিশ আমাদের ছেলে-মেয়েদের ওপর লাঠিচার্জ চালিয়েছে। স্থানীয়দের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে সমাধানের পথ বের করার বদলে উল্টো তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটা কি ফ্যাসিবাদ নয়..? আমি উখিয়াবাসীর কাছে বিচার দিলাম।
উখিয়ার ছাত্র প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের দাবি আদায় না হলে উখিয়াতে এনজিওর গাড়ি ব্লকেড করা হবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। বাহিরের লোক এসে লার্নিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষকতা করতে দেওয়া হবে না। স্থানীয়রা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত, তার মধ্যে বৈষম্য কোনোদিনও মেনে নেওয়া হবে না।
উখিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ আরিফ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে কোনো সাড়া মেলেনি।
উখিয়া থানার একটি পুলিশের টিম জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে তাদের যা করণীয়, তারা পালন করে যাবেন।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটককৃতদের কাউকেই ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তবে আন্দোলনকারীরা দ্রুত তাদের মুক্তি এবং চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ জানিয়েছে, সরকার বা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিনিধি যদি দ্রুত সমাধান না দেয়, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মাস ধরে চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা তাদের পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন চলছিল। বারবার আশ্বাস দিলেও সমাধান না মেলায় তারা সড়কে নেমে আসেন। সর্বশেষ আজকের ঘটনায় পুলিশ ও শিক্ষকদের মুখোমুখি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
এইচএ