নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একটি বাড়িতে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারণে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণের ঘটনায় নারী-শিশুসহ একই পরিবারের ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তাদের সবাইকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি পূর্মুবপাড়া মুড়ি ফ্যাক্টরির গলি জাকির খন্দকার এর টিনশেড বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- তানজিল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আসমা বেগম (৩৫), তাদের সন্তান তিশা (১৭) ও আরাফাত (১৫), হাসান (৩৫), তার স্ত্রী সালমা বেগম (৩২), তাদের সন্তান মুনতাহা (১১), জান্নাত (৪) ও ইমাম উদ্দিন (১ মাস)। আসমা ও সালমা দুই বোন। তাদের মা তাহেরা খাতুনও (৬০) দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তাদের উদ্ধার করে ভ্যান ও অটোরিকশার মাধ্যমে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে তাহেরা বেগমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ৮ জনকে জাতীয় বার্ন এবং প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধ হাসানের ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম জানান, টিনসেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন দুই বোন আসমা ও সালমার পরিবার। সঙ্গে তাদের মাও থাকেন। বাড়িটির পাশ দিয়ে গ্যাস লাইনের পাইপ গেছে। সেখান থেকে গ্যাস লিক হয়ে বাসায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে আগুন ধরে গেলে বাসাটি পুড়ে যায় এবং সবাই দগ্ধ হন। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে ভোরে ঢাকার জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
অগ্নিদগ্ধ তাহেরার ছোট বোন মরিয়ম বলেন, তাদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর। সবার বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। আমার বোন বোন গত ৩ মাস আগে তার মেয়ের জামাই হাসানের বাসায় বেড়াতে এসেছিল। রাত ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে বিকট শব্দে ঘরের মধ্যে আগুন ধরে যায় এবং টিনের চালাও কিছুটা ছুটে যায়
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, অগ্নিদগ্ধ হাসানের শ্বশুর আব্দুর রশিদ এই বাড়ির কেয়ারটেকার হিসেবে থাকতো। কিছুদিন আগে রশিদ মারা যান। তার তিন মেয়ে, জামাই ও নাতি নাতনি তিনটি কক্ষে ভাড়া থাকতো। এর মধ্য দুটি কক্ষের সবাই অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারণে ফ্রিজের কম্প্রেসারের বিস্ফোরণের কারণে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. সুলতান মাহমুদ শিকদার জানান, দগ্ধদের মধ্যে হাসানের শরীরের ৪৪ শতাংশ, সালমার ৪৮ শতাংশ, আসমার ৪৮ শতাংশ, তৃষার ৫৩ শতাংশ, জান্নাতের ৪০ শতাংশ, মুনতাহার ৩৭ শতাংশ এবং এক মাস বয়সী ইমামের শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মীরন মিয়া বলেন, বিদ্যুতের শর্ট সার্কিটের কারণে ফ্রিজের কমপ্রেসার বিস্ফোরণের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, ঘটনা তদন্ত না করে সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না কীভাবে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এইচএ